Advertisement
E-Paper

বসে গিয়েছে কুর্চি সেতু, সংস্কার নিয়ে পূর্ত-সেচ দ্বন্দ্ব

নতুন বকপোতা সেতুর কাজ এখনও শেষ হয়নি। বছর দু’য়েক আগে বসে যাওয়া পুরনো সেতুটি সংস্কার করে ছোটছোট গাড়ি চলাচলের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে দিন পনেরো আগে উদয়নারায়ণপুরেই কুর্চি সেতু বসে যায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ জানুয়ারি ২০১৭ ০১:৩৫
মজা দামোদরের উপরে সেতুর বসে যাওয়া অংশ। ছবি: সুব্রত জানা।

মজা দামোদরের উপরে সেতুর বসে যাওয়া অংশ। ছবি: সুব্রত জানা।

নতুন বকপোতা সেতুর কাজ এখনও শেষ হয়নি। বছর দু’য়েক আগে বসে যাওয়া পুরনো সেতুটি সংস্কার করে ছোটছোট গাড়ি চলাচলের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে দিন পনেরো আগে উদয়নারায়ণপুরেই কুর্চি সেতু বসে যায়। পূর্ত দফতর (সড়ক) বিপজ্জনক বোর্ডও লাগিয়ে দিয়েছে। অথচ সেতু সংস্কারের ব্যাপারে পূর্ত বা সেচ দফতরের উদ্যোগ সেভাবে চোখে পড়েনি। উল্টে একে অপরকে দোষারোপ করে চলেছে।

পূর্ত দফতর (সড়ক) সূত্রে জানা গিয়েছে, সেতুর পিলারের বেস প্লেটটির তলার মাটি সরে গিয়েছে জলের চাপে। ফলে সেতুর মাঝের একটি পিলার বসে গিয়েছে। এ জন্য সেচ দফতরকে দায়ী করেছে পূর্ত দফতর। সেচ দফতর সূত্রে খবর, কয়েক মাস আগে সেচ দফতর মজা দামোদর সংস্কার করে। ওই সময় ফুট চারেক খনন করা হয়েছে। পূর্ত সড়ক দফতরের দাবি, খননের ফলে নদের তলদেশ চারফুট নীচে নেমে গিয়েছে এবং নদের তলদেশ প্রায় সেতুর বেসপ্লেটের কাছে পৌঁছে যায়। জল বেস প্লেটের তলদেশ থেকে বয়ে যাওয়ায় মাটি সরে গিয়েছে। সে জন্য সেতুটি বসে যায়। যদিও সেচ দফতর তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তাদের দাবি, পরিকল্পনা করেই মজা দামোদর খনন করা হয়। তাদের উদ্দেশ্য, প্রথমে দামোদরের জল মজা দামোদর খালের মাধ্যমে এনে রামপুর খালে ফেলা। তার পরে রামপুর খালের মাধ্যমে সেই জল রূপনারায়ণে ফেলা। যাতে বর্ষায় দামোদরে জলের চাপ কমানো যায়। সেই হিসেব অনুযায়ীই মজা দামোদর খনন করা হয়েছে। তাদের আরও দাবি, হিসেব অনুযায়ী বেস প্লেটটিই নদীর তলদেশ থেকে কম গভীরে ছিল। যদিও পূর্ত দফতরের কর্তাদের দাবি, নদীর তলদেশের চার ফুট নীচে বেস প্লেটটি করাই ঠিক। সেই মাপ অনুযায়ীই এই সেতুর বেস প্লেটটিও রয়েছে। তবে মজা দামোদর বেশি খননের ফলে এই সমস্যা হয়েছে।

ইতিমধ্যে পূর্ত দফতরের কর্তারা সেতুটি পরিদর্শন করে গিয়েছেন। ওই দফতরের এক কর্তা জানান, সেতুটি সংস্কারের জন্য প্রায় ১ কোটি টাকার একটা পরিকল্পনা করা হয়েছে। টাকা মঞ্জুর হলে কাজ শুরু হবে। প্রাথমিকভাবে নদে বাঁধ দিয়ে জল আটকানো হয়েছে এবং বেস প্লেটের তলদেশে বালি ঢোকানো হয়েছে। যাতে সেতুটি আর না বসে যায়। এছাড়া বাঁশ দিয়ে সেতুটিকেও ধরে রাখা হয়েছে।

এ দিকে বকপোতার পরে এই সেতু বসে যাওয়ার সমস্যা বেড়েছে উদয়নারায়ণপুরবাসীর। এই সেতুর উপর দিয়েই বাস, লরি, ট্রাক, অটো-সহ নানা যানবাহন চলে। এই পথেই উদয়নারায়ণপুরের লোকেরা সহজে আরামবাগ-সহ হুগলি ও বর্ধমান যেতে পারেন। হুগলির বাসিন্দারাও নানা কাজে উদয়নারায়ণপুরে আসতে পারেন। এই সেতু নিয়েও শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। বাম আমলে যথাযথ পরিকল্পনা না করেই সেতুটি তৈরি করা হয়নি, তাই সেতুটি বসে গিয়েছে বলে অভিযোগ, বিধায়ক সমীর পাঁজার। তিনি বলেন, ‘‘মাত্র পনেরো বছর আগে সেতুটি তৈরি করা হয়েছিল। পরিকল্পনায় ত্রুটি ছিল। তাই সেতুটি বসে গিয়েছে। দ্রুত সংস্কারের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’’

প্রাক্তন বাম বিধায়ক চন্দ্রলেখা বাগ বলেন, ‘‘সেতু কেন বসে গিয়েছে সেটা ইঞ্জিনিয়ররাই বলতে পারবেন। তবে আমাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ ভিত্তিহীন।’’

Bridge Distress
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy