Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
Potato Price

আলুবীজের দাম বেলাগাম, বিপাকে চাষি

হুগলির তারকেশ্বর, চাঁপাডাঙা, পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোনায় আলুবীজের ব্যবসা চলে।

আলুবীজ নামানো হচ্ছে তারকেশ্বরের একটি দোকানে। —নিজস্ব িচত্র

আলুবীজ নামানো হচ্ছে তারকেশ্বরের একটি দোকানে। —নিজস্ব িচত্র

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়
চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ১৫ নভেম্বর ২০২০ ০৬:১৯
Share: Save:

আলুবীজের দাম লাগামছাড়া। ফলে, চলতি মরসুমে এ রাজ্যের আলুচাষিরা দিশাহারা। তাঁদের ক্ষোভ, গত মরসুমের তুলনায় এ বার আলুবীজের দাম কোনও কোনও ক্ষেত্রে দ্বিগুণ। দাম নিয়ন্ত্রণে সরকারের হস্তক্ষেপ দাবি করছেন তাঁরা। একই দাবি ব্যবসায়ীদেরও।

গোটা দেশে আলু চাষের নিরিখে পশ্চিমবঙ্গ প্রথম। উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের প্রতি জেলাতেইকমবেশি আলু উৎপন্ন হয়। হুগলি, বর্ধমান এবং পশ্চিম মেদিনীপুরে ফলন প্রচুর। এ রাজ্যে প্রতি মরসুমে অন্তত ৬০ লক্ষ প্যাকেট (প্রতি প্যাকেটে ৫০ কেজি) আলুবীজ প্রয়োজন হয়। বেশিরভাগ বীজ আসে পঞ্জাব থেকে। কয়েক বছর ধরে পশ্চিমবঙ্গে আলুবীজের উৎপাদন হলেও প্রয়োজনের তুলনায় তা নিতান্ত কম। তার উপর সেই বীজের মানও প্রশ্নাতীত নয়। এক সময় হিমাচলপ্রদেশের আলুবীজ এ রাজ্যে আসত। তার মান নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় সেখান থেকে আলুবীজ আনা বন্ধ হয়ে যায়। তাই, রাজ্যের আলুচাষিদের পঞ্জাবের মুখাপেক্ষী হয়েই থাকতে হচ্ছে।

হুগলির তারকেশ্বর, চাঁপাডাঙা, পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোনায় আলুবীজের ব্যবসা চলে। পঞ্জাব থেকে এই সমস্ত এলাকায় আলুবীজ আসে। সেখান থেকে চাষিদের কাছে যায়। তারকেশ্বরের আলুবীজ ব্যবসায়ী মানস ঘোষ বলেন, ‘‘গত কয়েক বছরের তুলনায় এ বার আলুবীজের দাম মাত্রাছাড়া। সমস্যায় পড়ে অনেক চাষি হিমঘরে নিজেদের রাখা আলুকেই বীজ হিসেবে ব্যবহার করছেন। রাজ্য সরকারের উচিত ছিল আলুবীজ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে দামে কিছুটা অন্তত লাগাম পরানোর চেষ্টা করা। কয়েক বছর আগে রাজ্য সরকারের তরফে আলুবীজ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে কিছুটা কাজও হয়েছিল।’’

দামের ফারাক

গত বছর
• চন্দ্রমুখী আলুবীজ: ৩০০০-৩৫০০
• পোখরাজ আলুবীজ: ১২০০-১৫০০
• জ্যোতি আলুবীজ: ১৮০০-২০০০

এ বছর
• চন্দ্রমুখী আলুবীজ: ৪০০০-৫০০০
• পোখরাজ আলুবীজ: ৩৫০০-৪০০০
• জ্যোতি আলুবীজ: ৪০০০-৪৫০০
(টাকা প্রতি প্যাকেট)

জেলা কৃষি দফতরের এক কর্তা অবশ্য বলেন, ‘‘এখানে মূলত ভিন্ রাজ্য থেকে আলুবীজ আসে। তাই এ রাজ্যের পক্ষে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে দাম নিয়ন্ত্রণের সুযোগ খুব একটা নেই।’’

পশ্চিমবঙ্গে উন্নত মানের আলুবীজ হয় না কেন?

কল্যাণী কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক বিজ্ঞানী বলেন, ‘‘উন্নত আলুবীজ উৎপাদনের জন্য আর্দ্রতাহীন একটানা ঠান্ডা প্রয়োজন। সেই আবহাওয়া না পেলে ছত্রাক ধরে আলুবীজ নষ্ট হয়ে যায়। আমাদের রাজ্যের আবহাওয়ায় আর্দ্রতা প্রচুর বেশি। ফলে, চেষ্টা করেও আলুবীজের মান উন্নত করা যাচ্ছে না।’’

ভিন্ রাজ্যের মুখাপেক্ষী হয়ে থেকে কপালে ভাঁজ বাড়ছে এখানকার আলুচাষিদের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Potato Price farmers
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE