Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Bishnu Mal

বিষ্ণু-খুনের ভিডিয়ো ফুটেজের খোঁজ শুরু

বিষ্ণু খুনের ঘটনায় এক আইনজীবীর ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। পুলিশ জানায়, ওই আইনজীবীর বিরুদ্ধে বিশালকে মদতের অভিযোগ উঠেছে।

বিষ্ণু মাল। ফাইল চিত্র।

বিষ্ণু মাল। ফাইল চিত্র।

প্রকাশ পাল
চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ০৮ নভেম্বর ২০২০ ০৩:০৯
Share: Save:

চুঁচুড়ার রায়বেড়ের নিহত যুবক বিষ্ণু মালের কাটা মুণ্ড এখনও মেলেনি। তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, ওই যুবকের হাত-পা এবং মুণ্ড কেটে শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলার গোটা পর্ব মোবাইল ফোনে ‘রেকর্ড’ করা হয়। কাটা মুণ্ডর সঙ্গে এ বার ওই ফুটেজেরও খোঁজ শুরু করেছে চন্দননগর কমিশনারেট।

তদন্তকারীদের দাবি, ধৃতেরা জানিয়েছে, মোবাইলটি তারা গঙ্গায় ফেলে দিয়েছে। কিন্তু ওই দাবি বিশ্বাসযোগ্য নয়। নৃশংসতার অকাট্য প্রমাণ ওই ফুটেজে রয়েছে। সেটি উদ্ধারের চেষ্টা করা হচ্ছে।

ধৃতদের মুখে বিষ্ণুকে খুনের বর্ণনা শুনে পুলিশ আধিকারিকরা শিহরিত! জেরায় ধৃতেরা জানায়, বিষ্ণুকে চাঁপদানিতে দুষ্কৃতী কৃষ্ণ মণ্ডলের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চপারের পিছন দিক দিয়ে বিষ্ণুর ঘাড়ে মারে ঘটনায় মূল অভিযুক্ত বিশাল দাস। বিষ্ণু অচেতন হয়ে গেলে বিশাল তার গলা টিপে ধরে। তাঁকে ওই অবস্থায় ফেলে দুষ্কৃতীরা বাজারের ব্যাগ এবং পলিথিন শিট কিনে আনে। খাটের উপরে পলিথিন বিছিয়ে বিষ্ণুকে শুইয়ে দেওয়া হয়। বিশাল চপার হাতে বিষ্ণুর দেহ টুকরো করে কাটতে বসে। অন্যেরা চার পাশ দিয়ে পলিথিন উঁচু করে ধরে থাকে। যাতে বিছানায় বা মেঝেতে রক্ত না লাগে। ধৃতেরা জানিয়েছে, চপারের কোপে কিছুক্ষণ বিষ্ণু ছটফট করছিলেন। তারা বিষ্ণুর হাত-পা চেপে ধরেছিল। শেষে দেহাংশ পলিথিনে মুড়ে ব্যাগে ভরে বিভিন্ন জায়গায় ফেলে দেয় তারা। মুণ্ডটি ফেলেছিল বিশাল।

গত মঙ্গলবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিংয়ে গ্রামবাসীদের হাতে প্রহৃত বিশালকে পুলিশ গ্রেফতার করে। চন্দননগরের পুলিশ কমিশনার হুমায়ুন কবীর জানান, সেখান থেকে বিশালকে নিয়ে এসে জিজ্ঞাসাবাদ করে বিষ্ণুর কাটা মুণ্ড উদ্ধারের চেষ্টা করা হবে। এক পুলিশকর্তা বলেন, ‘‘জঘন্য অপরাধ। আদালতে দ্রুত চার্জশিট পেশ করার চেষ্টা করা হবে।’’

তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, রবীন্দ্রনগরের দুষ্কৃতী টোটনের দলছুট দুষ্কৃতীদের কাজে লাগিয়েই বিষ্ণুকে সরিয়ে দেয় বিশাল। বিষ্ণু ‘টোটনের শাগরেদ’ বলে বিশাল ওই দুষ্কৃতীদের মিথ্যা বুঝিয়েছিল। বিশালের ‘ঘোষিত শত্রু’ টোটন।

পুলিশ সূত্রের খবর, রবীন্দ্রনগরের কাছেই সেগুনবাগানে বিশালের বাড়ি। সে স্কুলের গণ্ডি পেরোয়নি। তরুণ বয়সেই টোটোনের দলে নাম লেখায়। কয়েক বছর আগে কোনও ঘটনায় টোটন তাকে কথা শোনায়, মারধর করে। অপমানিত বিশাল টোটনের দল ছেড়ে বেরিয়ে আসে। নিজেই ‘ওয়ান ম্যান আর্মি’ হয়ে দুষ্কর্ম শুরু করে। টোটনের দল থেকে বেরিয়ে আসা কিছু দুষ্কৃতী রবীন্দ্রনগর ছেড়ে অন্যত্র বসবাস শুরু করে। বিষ্ণুকে মারার ক্ষেত্রে টোটনের উপরে তাদের ক্ষোভ কাজে লাগায় বিশাল। পরে ওই দুষ্কৃতীরা বুঝতে পারে, বিষ্ণু নিরীহ ছেলে। দুষ্কৃতীদের সঙ্গে তাঁর কোনও যোগ ছিল না।

বিষ্ণু খুনের ঘটনায় এক আইনজীবীর ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। পুলিশ জানায়, ওই আইনজীবীর বিরুদ্ধে বিশালকে মদতের অভিযোগ উঠেছে। এই মর্মে থানায় অভিযোগও দায়ের হয়েছে। তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bishnu Mal Probe
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE