Advertisement
E-Paper

ছাই তুলে পরিষ্কার করতে হবে নয়ানজুলি

আরামবাগ মহকুমায় বেআইনি ভাবে নয়নাজুলি ভরাটের বিরুদ্ধে শেষ পর্যন্ত সক্রিয় হল পূর্ত দফতর।কোথাও চালকলের ছাই ফেলে, কোথাও বেআইনি নির্মাণ করে নয়ানজুলি বুজিয়ে ফেলার অভিযোগ হুগলির এই তল্লাটে নতুন নয়।

পীযূষ নন্দী

শেষ আপডেট: ১৩ জুলাই ২০১৬ ০১:৪৬

আরামবাগ মহকুমায় বেআইনি ভাবে নয়নাজুলি ভরাটের বিরুদ্ধে শেষ পর্যন্ত সক্রিয় হল পূর্ত দফতর।

কোথাও চালকলের ছাই ফেলে, কোথাও বেআইনি নির্মাণ করে নয়ানজুলি বুজিয়ে ফেলার অভিযোগ হুগলির এই তল্লাটে নতুন নয়। অভিযোগ, বেআইনি ভাবে নয়ানজুলি ভরাটকারীকে শুধু নোটিস পাঠিয়েই এতদিন দায়িত্ব পালন করত পূর্ত দফতর। তবে এ বার অন্য ভূমিকায় দেখা যাচ্ছে পূর্ত দফতরকে। শুধু নোটিস পাঠিয়েই দায় সারা নয়, নোটিস পাঠানোর সাত দিনের মধ্য নয়ানজুলি ভরাটমুক্ত না করলে পূর্ত দফতরের পক্ষ থেকে এফআইআর করা হচ্ছে থানায়। পুলিশ এবং পূর্ত দফতরের আধিকারিকরা বিষয়টি নিয়ে সতর্কও করছেন সংশ্লিষ্ট চালকল মালিকদের।

মহকুমা পূর্ত দফতরের (সাধারণ) সহকারী বাস্তুকার নিরঞ্জন ভড় বলেন, “নয়ানজুলি যথাযথ রাখতে বিভিন্ন ব্লক প্রশাসন সহযোগিতা করছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে চালকলের ছাই ফেলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেন চালকলের মালিকরা। তাঁদের নোটস পাঠানো ছাড়াও তা কার্যকর হচ্ছে কি না, নিয়মিত তদারকি করা হচ্ছে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘কয়েকটি ক্ষেত্রে থানায় এফআইআর করে চটজলদি ফল মিলেছে। আশা করি এ বার বর্ষার আগে সব নয়নজুলি পরিষ্কার হয়ে যাবে।”

পূর্ত দফতরের আধিকারিকদের মতে, নয়ানজুলি পরিষ্কার থাকলে নিকাশি ব্যবস্থার উন্নতির পাশাপাশি, জল জমে পিচের নীচের মাটি ক্ষয়ে গিয়ে রাস্তার যে ক্ষতি হতো তা হবে না। পূর্ত দফতর সূত্রে খবর, মূলত তিনটি মূল সড়কের (আরামবাগ থেকে বর্ধমান, তারকেশ্বর এবং বাঁকুড়ার কোতুলপুর) দু’ধারে বেশিরভাগ নয়নজুলি ভরাট হয়েছে। আরামবাগ-কোতুলপুর রাস্তায় গোটা পাঁচেক চালকল ছাই ফেলে নয়নজুলি বুজিয়ে নিজেদের রাস্তা বানিয়েছে। কিছু হোটেল, রেঁস্তোরাও নয়নজুলি ভরাট করেছে ইচ্ছেমতো। আরামবাগ-বর্ধমান রোডে অন্তত ১২টি কালভার্টে নিকাশি ব্যবস্থাই নেই। দু’পাশে বসতি গড়ে উঠেছে। একটু বৃষ্টিতেই জল জমে সেখানে। আরামবাগ-তারকেশ্বর রোডের জয়রামপুর থেকে মুথাডাঙা পর্যন্ত তিন কিলোমিটার রাস্তার দু’ধারে প্রায় ১৫টি চালকলের ছাই মেশানো জলে নয়নজুলি বুজে গিয়েছে। সব ক্ষেত্রেই অবিলম্বে ছাই তুলে ফেলার নোটিস পাঠানো হয়েছে।

আরামবাগ মহকুমা চালকল মালিক সংগঠনের সম্পাদক সুনীল ঘোষ বলেন, “আমাদের অনেকেই তাৎক্ষণিক সুবিধার জন্য ওই ভুল করেছেন। তবে সব ক্ষেত্রেই ছাই সরিয়ে ফেলা হচ্ছে। ভবিষ্যতে নয়নজুলিতে ছাই না ফেলা নিয়ে আমরা সতর্ক থাকব।”

বন্যাপ্রবণ আরামবাগ মহকুমায় নিকাশি ব্যবস্থা নিয়ে এমনিতেই ভূরি ভূরি অভিযোগ। তার উপর পূর্ত দফতরের রাস্তার ধারে নয়নজুলি-সহ বিভিন্ন নিকাশি নালা বেআইনিভাবে ভরাট করায় বর্ষায় নিকাশি বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। এর বিরুদ্ধে গ্রামবাসীরা দীর্ঘদিন ধরেই প্রশাসনের কড়া হস্তক্ষেপ দাবি করে আসছেন। তাঁদের বক্তব্য, মহকুমায় বহু খাল, বিল আছে। অতীতে জল দাঁড়ালে তা তিন-চার দিনের মধ্যে নেমে যেত। কিন্তু নয়ানজুলি-সহ নিকাশি নালা বুজিয়ে ফেলা বা বেআইনি নির্মাণের কারণে এখন জল নামতে মাস পেরিয়ে যায়। যদিও এ বার থেকে পরিস্থিতি আর আগের মতো খারাপ হবে না বলে আশ্বাস পূর্ত দফতরের।

সরকারি আশ্বাস পেলেও মহকুমাবাসীর বক্তব্য, বন্যার পরই বোঝা যাবে আসল পরিস্থিতি।

Public works department Nayanjuli illegal
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy