Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪

প্রশ্ন ঘাটের সুরক্ষা নিয়েই

সার সার মানুষের মাথাকে ডুবে যেতে দেখেছিলেন অনিল রায়, পূজা ঘোষ, সুজয় মুখোপাধ্যায়রা। হুগলির তেলেনিপাড়া ঘাটে যখন দুর্ঘটনা ঘটে, তখন কাছেই আতপুর ঘাটে ফেরি পার হওয়া যাত্রীরা জলের তোড়ে ভেসে আসা মানুষজনকে বাঁচার মরিয়া চেষ্টা করতে দেখেছেন।

ঝুঁকি: বাঁশের এই সাঁকো পেরিয়েই নিত্য যাতায়াত। আতপুর ঘাটে। নিজস্ব চিত্র

ঝুঁকি: বাঁশের এই সাঁকো পেরিয়েই নিত্য যাতায়াত। আতপুর ঘাটে। নিজস্ব চিত্র

বিতান ভট্টাচার্য
শেষ আপডেট: ১৫ মে ২০১৭ ০১:৪৬
Share: Save:

সার সার মানুষের মাথাকে ডুবে যেতে দেখেছিলেন অনিল রায়, পূজা ঘোষ, সুজয় মুখোপাধ্যায়রা। হুগলির তেলেনিপাড়া ঘাটে যখন দুর্ঘটনা ঘটে, তখন কাছেই আতপুর ঘাটে ফেরি পার হওয়া যাত্রীরা জলের তোড়ে ভেসে আসা মানুষজনকে বাঁচার মরিয়া চেষ্টা করতে দেখেছেন। আতপুর ঘাটের উল্টো দিকেই চন্দননগরের গোন্দলপাড়া ঘাট। বানের তোড়ে সাঁকো ভেঙে যাওয়ার পরে বহু লোক ভাসতে ভাসতে গোন্দলপাড়া ঘাটে পৌঁছেছিলেন। শ্যামনগর, আতপুর ও গোন্দলপাড়া ঘাটের যাত্রীদের কাছে সেই স্মৃতি এখনও টাটকা।

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, দুর্ঘটনার পরে আতপুর ঘাটে বাঁশের সাঁকো শক্তপোক্ত করা হয়েছে। চারটি ফেরি নৌকার ফুটোফাটা মেরামত হয়েছে। শুরু হয়েছে লাইফ জ্যাকেট আর এয়ার রিং রাখাও।

কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে এ সবের ব্যবহার নিয়ে। প্রতি দিন আতপুর ঘাট দিয়ে হাজার দেড়েক যাত্রী পারাপার করেন। তাঁদের প্রশ্ন, চারটি নৌকায় মাত্র খান চারেক লাইফ জ্যাকেট এবং এয়ার রিং কি যথেষ্ট? এতেই শেষ নয়। যথেচ্ছ বালি তোলার ফলে নাব্যতার তারতম্য ঘটেছে গঙ্গায়। বানের ক্ষিপ্রতা কোথাও কোথাও এতই বেশি যে প্রায় সমুদ্রের ঢেউ মনে হয়। ওই জলোচ্ছ্বাসের কাছে বাঁশের সাঁকো সব সময়েই দুর্বল। সমস্যা বাড়ে বর্ষায়। হাওয়া আর বৃষ্টিতে নৌকা থেকে আঁকাবাঁকা সাঁকো পেরিয়ে ঘাটে পৌঁছতে ভিজে যান যাত্রীরা। বাঁশের সাঁকো পিচ্ছিল হওয়ায় দুর্ঘটনাও ঘটেছে মাঝেমধ্যে।

পুরনো এই ঘাটে ছাউনি, শৌচাগার— কিছুই নেই। গোন্দলপাড়ার বাসিন্দা, ভাটপাড়ার একটি কারখানার কর্মী সমীরকুমার ঘোষ এই ঘাট দিয়ে যাতায়াত করেন। তিনি বলেন, ‘‘বছরের পর বছর একটা ফেরিঘাট বিনা সংস্কারে চলছে। তেলেনিপাড়ার ঘটনা যেটুকু সচেতনতা বাড়িয়েছে, তার থেকে অনেক উন্নত পরিষেবা কলকাতার ঘাটগুলিতে পাওয়া যায়। তা হলে আমরা কেন
সে সব পাব না?’’

ভাটপাড়া পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান সোমনাথ তালুকদারের কথায়, ‘‘আমরা চেষ্টা করছি ঘাট সংস্কার করার এবং ভাল পরিষেবা দেওয়ার। কিন্তু এই ঘাট আমাদের আওতায় পড়ে না। তবু যাত্রীদের স্বার্থে এগুলি বানাতেই হবে।’’

ঘাটের দায়িত্ব হুগলি জেলা পরিষদের। সভাধিপতি মেহবুব রহমান জানান, নিরাপত্তা ইতিমধ্যেই বাড়ানো হয়েছে আতপুর ঘাটে। বাকি বিষয়গুলিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Security Ferry
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE