Advertisement
০৫ মে ২০২৪

বংশী ও সমীর ধরা পড়ায় স্বস্তি এলাকায়

স্রেফ হাতখরচ চালাতেই ছিনতাই করে বেড়াত তারা। সদ্য কুড়ি পেরোন দুই যুবকের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিলেন হাওড়ার শ্যামপুরের বাসিন্দারা।পটু হাতে গত মাস দুয়েকের মধ্যে খান ছয়েক ছিনতাই করেছে তারা। কখনও কোনও মহিলার গলা থেকে সোনার চেন, কখনও কার ও কাছ থেকে টাকার ব্যাগ ছিনিয়ে নেওয়া।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শ্যামপুর শেষ আপডেট: ২৯ জুলাই ২০১৬ ০১:৫০
Share: Save:

স্রেফ হাতখরচ চালাতেই ছিনতাই করে বেড়াত তারা। সদ্য কুড়ি পেরোন দুই যুবকের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিলেন হাওড়ার শ্যামপুরের বাসিন্দারা।

পটু হাতে গত মাস দুয়েকের মধ্যে খান ছয়েক ছিনতাই করেছে তারা। কখনও কোনও মহিলার গলা থেকে সোনার চেন, কখনও কার ও কাছ থেকে টাকার ব্যাগ ছিনিয়ে নেওয়া। এ ভাবেই প্রায় লাখ খানেক টাকা তারা হাতিয়ে নিয়েছিল দু’জন। সে সব বিক্রিবা়া করে করে বেশ আমোদেই দিন কাটছিল তাদের। তবে শেষ রক্ষা হল না। একের পর এক ছিনতাইয়ের ঘটনায় উদ্বিগ্ন পুলিশের কড়া নজরদারিতে শেষ পর্যন্ত পাকড়াও হয়েছে শ্যামপুরের কালিদহ এলাকার বাসিন্দা বংশী মাজি ও সমীর মাজি।

সম্প্রতি বংশী ও সমীরকে শ্যামপুরের কল্যাণী বটতলা এলাকা থেকে পুলিশ গ্রেফতার করে। তাদের কাছ থেকে পুলিশ একটি সোনার চেন, দশ হাজার টাকার জাল নোটও উদ্ধার করেছে। আদালতের নির্দেশে বর্তমানে তারা ১৪ দিনের জেল হাজতে। ধৃতদের বিরুদ্ধে পুলিশ ছিনতাই, জাল নোট পাচার-সহ একাধিক মামলা রুজু করেছে।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ২ জুলাই শ্যামপুরের দূর্গাপুর এলাকায় সন্ধ্যার সময় এক মহিলার গলা থেকে সোনার হার ছিনতাই হয়। অভিযোগ পাওয়ার পর পুলিশ তৎপর হয়ে ওঠে। পুলিশের এক কর্তা জানান, সঙ্গে সঙ্গে শ্যামপুরের বিভিন্ন এলাকায় তাঁরা নাকা চেকিং শুরু করেন। কল্যাণী বটতলা এলাকা থেকে ধরা পড়ে বংশী ও সমীর। জেরায় মহিলার হার ছিনতাইয়ের কথা দু’জনেই স্বীকার করেছে বলে পুলিশের দাবি।

বংশীর অর্ন্তবাসের ভিতর থেকে হার ও একটি টাকাভর্তি ব্যাগ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ছাড়া মাস খানেকের মধ্যে যে সব ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছিল সেগুলিতেও তারা জড়িত বলে পুলিশের কাছে স্বীকার করে বংশী ও সমীর।

প্রসঙ্গত, ২ জুলাইয়ে মহিলার হার ছিনতাইয়ের পর ওই দিনই শশাটি এলাকায় রিকশায় বাড়ি ফেরার পথে এক মাছ ব্যবসায়ীর গলার হার ছিনতাই করে পালায়। দু’টি ক্ষেত্রেই বাইকে করে এসেছিল ছিনতাইকারীরা। এর কিছু দিন আগে বাগনান-শ্যামপুর রোড ধরে এক যুবতী সাইকেল চালিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। খিদিরপুরে একটি ওয়েব্রিজের কাছে দুই দুষ্কৃতী বাইকে চেপে এসে তাঁর গলার হার ছিনতাই করে পালায়। তবে হারটি ইমিটেশনের হওয়ায় যুবতীর বেশি ক্ষতি হয়নি। ওই ঘটনাতেও জড়িত ছিল বংশী ও সমীর।

পুলিশ সূত্রে খবর, জেরায় সমীর ও বংশী তাদের কাজকর্মের যে বিবরণ দিয়েছে চা চমকে যাওয়ার মতো। দু’জনেই জানায়, প্রতিদিন সকালে খাওয়া দাওয়া সেরেই বাইক নিয়ে বেরিয়ে পড়ত। শ্যামপুর মোড়, খাড়ুবেড়িয়া, নাকোল, মৌল, দুর্গাপুর-সহ বিভিন্ন জায়গায় ঘাঁটি গেড়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা শিকারের অপেক্ষায় বসে থাকত। যখন একা কোনও মহিলাকে গয়না পরা অবস্থায় যেতে দেখত তখনই তাঁর পিছু নিত। পরে সুযোগ বুঝে গলা থেকে হার ছিনিয়ে চম্পট দিত। হাতানো মালপত্তর তারা পূর্ব মেদিনীপুরের হলদিয়ায় বিক্রি করত বলে বংশী ও সমীর জানিয়েছে।

তবে দু’জনেই ধরা পড়ায় স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন শ্যামপুরের মানুষ। হাঁপ ছেড়েছে পুলিশও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Youth arrest Police Theft
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE