হাসপাতালের দশা বেহাল। কয়েক মাস বেতন নেই। এই অবস্থায় হাসপাতালকে ঘুরে দাঁড় করানোর দাবিতে মরিয়া হয়ে রবিবা কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে পৌঁছে গিয়েছিলেন রিষড়া সেবাসদনের কর্মীরা। দীর্ঘ অপেক্ষার পরেও অবশ্য মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁদের সাক্ষাৎ হয়নি। আজ, সোমবার মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁদের দেখা হবে বলে জানিয়েছেন সেখানে উপস্থিত অফিসারেরা। সেই আশ্বাসেই বুক বেঁধেছেন হাসপাতালের কর্মীরা।
রবিবার সকাল ৬টা নাগাদ কালীঘাটে যান সেবাসদনের জনা চল্লিশ কর্মী। পুলিশ তাঁদের কিছুটা দূরে অপেক্ষা করতে বলে। শেষ পর্যন্ত বেলা সাড়ে ১০টা নাগাদ অফিসাররা তাঁদের জানান, মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা হবে না। তাঁরা যেন সোমবার আসেন। পূর্ণচন্দ্র বারিক নামে এক কর্মী বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীই শেষ ভরসা। তিনি নিশ্চয়ই কিছু ব্যবস্থা করবেন। দিদির হাত ধরেই ফের হাসপাতালটা ভাল ভাবে বেঁচে উঠুক।’’ কর্মীদের দাবি, ছ’মাস মাইনে না পেয়েও পরিষেবা বন্ধ করেননি তাঁরা। নিজেরা খেতে না-পেলেও রোগীদের চিকিৎসায় খামতি রাখছেন না।
রিষড়া স্টেশনের অদূরে ওই হাসপাতালটি কয়েক দশকের পুরনো। এখানকার চক্ষু বিভাগ-সহ অন্যান্য ওয়ার্ড রীতিমতো নাম কুড়িয়েছিল। বাম আমলে সরকার হাসপাতালে অনুদান দিত। নানা গরমিলের অভিযোগ তুলে বর্তমান সরকার অনুদান বন্ধ করে দেয়। পরিচালন কমিটির সদস্যেরা পদত্যাগ করেন। সেই থেকে হাসপাতালটি খোঁড়াতে থাকে। হাসপাতাল চালাতে রাজ্য সরকারের তরফে একটি তদারকি কমিটি গড়া হয়। কিন্তু তাতেও সমস্যা মেটেনি।
হাসপাতালে বর্তমানে ৭২ জন কর্মী আছেন। রোগী ভর্তিও কমে যাওয়ায় হাসপাতালের উপার্জন তলানিতে ঠেকেছে। বেতন না পেয়ে বেশ কিছু দিন ধরে আন্দোলনে নেমেছেন কর্মীরা। কর্মীদের আর্জি, সরকার হাসপাতালটি হাতে নিক। তদারকি কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে সম্প্রতি শ্রীরামপুরের মহকুমাশাসক রজত নন্দা গোটা বিষয়টি নিয়ে স্বাস্থ্য ভবনে রিপোর্ট পাঠান। তিনি জানান, রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্ত জেনে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।
এই পরিস্থিতিতে দিন দু’য়েক আগে স্বাস্থ্য ভবনে গিয়েছিলেন সেবাসদনের কর্মীরা। ওই দফতরের কর্তারা তাঁদের জানান, অডিট না-হলে কোনও পদক্ষেপ করা সম্ভব নয়। কর্মীদের বক্তব্য, অডিট করতে কয়েক লক্ষ টাকা প্রয়োজন। সেই টাকা খরচের ক্ষমতা হাসপাতালের নেই। সরকারই যাবতীয় ব্যবস্থা করুক।