Advertisement
E-Paper

সরকারি বিধির গেরোয় বন্ধ বালি তোলা, সমস্যা নির্মাণে

দূষণ সংক্রান্ত ছাড়পত্র নিয়ে সরকারি উদাসীনতার অভিযোগ ছিলই। এই ছাড়পত্র না পাওয়ায় বৈধ ভাবে বালি তুলতে পারছেন না খাদান মালিকেরা। বালির অভাবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে উন্নয়নের কাজ আটকে আছে বলে হুগলি প্রশাসনের দাবি।

পীযূষ নন্দী

শেষ আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০১:১৪

দূষণ সংক্রান্ত ছাড়পত্র নিয়ে সরকারি উদাসীনতার অভিযোগ ছিলই। এই ছাড়পত্র না পাওয়ায় বৈধ ভাবে বালি তুলতে পারছেন না খাদান মালিকেরা। বালির অভাবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে উন্নয়নের কাজ আটকে আছে বলে হুগলি প্রশাসনের দাবি। এরই মাঝে বেআইনি ভাবে বালি তোলারও অভিযোগ উঠছে। বালির এই সমস্যা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জেলা পরিষদের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়র উৎপলকুমার হাজরা।

একটি মামলার পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৯ এপ্রিল ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইব্যুনাল নির্দেশিকা জারি করে, নদী থেকে বালি তোলার ক্ষেত্রে দূষণ সংক্রান্ত ছাড়পত্র নেওয়া বাধ্যতামূলক। কিন্তু সেই ছাড়পত্র কোথায় মিলবে দূষণ পর্ষদ-সহ বিভিন্ন প্রশাসনিক মহলে ঘুরেও তার হদিস পাচ্ছিলেন না বালি খাদ মালিকেরা। এ দিকে দূষণ সংক্রান্ত ছাড়পত্র না মেলায় সেচ দফতরও চালান দেওয়া বন্ধ রাখে। তার পরেই সমস্যার সূত্রপাত।

দূষণ সংক্রান্ত ছাড়পত্রের জটে প্রায় ৫ মাস হয়ে গেল নদী থেকে বালি তোলা বন্ধ। ক্ষোভ-বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন বালি খাদান মালিকেরা। এই সমস্যা মেটাতে মাস খানেক আগে প্রশাসনিক স্তরে একটি কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটির মাথায় রয়েছেন জেলাশাসক। কিন্তু সেই কমিটি নিষ্ক্রিয় আছে বলে অভিযোগ উঠেছে। দীর্ঘদিন ধরে বালি তোলার বৈধ অনুমতি না মেলায় রুটি-রুজির জন্য অনেকে বেআইনি ভাবে বালি তুলছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। সেই বালির কালোবাজারি চলছে। সম্প্রতি হুগলি জেলাকে নির্মল জেলা ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। সে জন্য জেলা প্রশাসন থেকে দ্রুত শৌচাগার নির্মাণের কাজ শেষ করায় চাপ দেওয়া হয়। ঠিকাদারদের অভিযোগ, যেখানে ১০০ সিএফটি বালি ১২০০-১৫০০ টাকা (সরু ও মোটা) হওয়ার কথা সেখানে ২৫০০-৩৫০০ টাকায় কিনতে হয়েছে।

এর ফলে এক দিকে রাজস্ব ঘাটতি হচ্ছে। অন্য দিকে, আইনি পথে বালি না তুলতে পারায় বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের কাজ করা যাচ্ছে না বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন প্রশাসনিক কর্তারা। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বালির অভাবে পূর্ত দফতর এবং বিভিন্ন পঞ্চায়েত সমিতির অধীন রাস্তাগুলির সংস্কার আটকে আছে। আটকে অন্যান্য নির্মাণের কাজও। যেমন গোঘাটের কামারপুকুর ব্লক হাসপাতালে শয্যা সংখ্যা বাড়ানোর কথা। মেঝের কাজ হয়েছে। গত ২২ অগস্ট থেকে বাকি কাজ বন্ধ আছে। এই কাজটি গত জুন মাসে কাজ শুরু হয়েছিল। ১২ কোটি টাকার নাবার্ডের প্রকল্পের কাজ বন্ধ আছে। এই প্রকল্পে বিভিন্ন পঞ্চায়েত এলাকায় চাষিদের ধান মজুতের জন্য গুদামঘর নির্মাণ হওয়ার কথা। আরমাবাগের পলিটেকনিক কলেজের অনেক আগে শেষ হয়ে গেলেও শেষ দফার প্লাস্টারিং-এর কাজটা বাকি রয়েছে বালির অবাবে।

এই সমস্যার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন সংশ্লিষ্ট বিষয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসার তথা অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি রাজস্ব) পূর্ণেন্দু মাজি। তিনি বলেন, ‘‘নদী থেকে বালি তোলার ক্ষেত্রে যে দূষণ সংক্রান্ত ছাড়পত্র পাওয়া নিয়ে সমস্যা তৈরি হয়েছিল তার সুরাহা হয়েছে। আমরা কমিটি গঠন করে চিহ্নিত করেছি, কোথায় কোথায় কতটা বালি তোলা যাবে। খুব শীঘ্রই বাণিজ্যিক লেনদেন প্রক্রিয়া শুরু হবে।’’

sand digging
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy