Advertisement
E-Paper

চুল্লিতে দেহ সৎকার শুরু হলে স্কুল ছুটি

স্কুলে ছুটি দেওয়া ছাড়া উপায় থাকে না। বছরে পর বছর এ ভাবেই চলছে স্কুলের পঠনপাঠন। দূষণের অভিযোগ তুলেছেন এলাকাবাসীও।

নুরুল আবসার

শেষ আপডেট: ০৯ মার্চ ২০১৮ ০০:৪৫
সঙ্কট: শ্মশানের পিছনেই স্কুল। ছবি: সুব্রত জানা

সঙ্কট: শ্মশানের পিছনেই স্কুল। ছবি: সুব্রত জানা

স্কুলের কাছেই খোলা শ্মশান। দেহ সৎকার শুরু হলেই দরজা-জানলা দিয়ে ঢোকে ধোঁয়া, ছাই, দুর্গন্ধ। তাই দাহকাজ শুরু হলে প্রায়ই ছুটি দিয়ে দেওয়া হয় বাগনান উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়।

বেড়াবেড়িয়া গ্রামের ওই শ্মশানটি স্কুল থেকে মাত্র ৫০ মিটার দূরে। সম্প্রতি সেখানে শবদাহের কারণে ধোঁয়া-দুর্গন্ধে ছাত্রীদের অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়ে। স্কুল কর্তৃপক্ষ চতুর্থ পিরিয়ডের পরে ছুটি ঘোষণা করে দেন। তাঁরা জানিয়েছেন, সে দিনের মতো ঘটনা আগেও একাধিকবার ঘটেছে। ফলে, স্কুলে ছুটি দেওয়া ছাড়া উপায় থাকে না। বছরে পর বছর এ ভাবেই চলছে স্কুলের পঠনপাঠন। দূষণের অভিযোগ তুলেছেন এলাকাবাসীও।

স্কুল কর্তৃপক্ষ এবং স্থানীয় বাসিন্দারা অবশ্য শ্মশানটি সরাতে চান না। তাঁদের দাবি, শ্মশানটিকে বিজ্ঞানসম্মত ও দূষণমুক্ত ভাবে গড়ে তোলা হোক। বছর দুয়েক আগে শ্মশানটির সংস্কার করা হয়েছে বাগনান-১ পঞ্চায়েত সমিতির পক্ষ থেকে। শ্মশানের মাথায় আচ্ছাদন দেওয়া হয়ে। শবযাত্রীদের বসার জায়গা করা হয়েছে। কিন্তু কোনও চিমনি নেই। শ্মশানের মাথার ছাউনির কিছুটা অংশ ফাঁকা রাখা হয়েছে। সেখান থেকে ধোঁয়া বেরিয়ে যায়।

গ্রামবাসীদের দাবি, শুধু ছাউনির অংশ খোলা রাখলেই হবে না। চিমনি তৈরি করতে হবে, যাতে ধোঁয়া অনেকটা উপরে উঠে বাতাসের সঙ্গে মিশে যায়। না- হলে সমস্যার সমাধান হবে না। ঢাকা চুল্লিরও ব্যবস্থা করা দরকার। স্কুলের তরফে শ্মশান কমিটির কাছে আবেদন করা হয়েছে, আপাতত পঠন-পাঠনের সময়ে যেন শবদাহ না-করা হয়। পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি নয়‌ন হালদার বলেন, ‘‘আমিও শ্মশান কমিটির কাছে অনুরোধ করব, যাতে স্কুলের সময়ে শবদাহ না করা হয়।’’

কিন্তু এটা যে কোনও স্থায়ী সমাধান নয়, তা মানছেন স্কুল‌ কর্তৃপক্ষ এবং গ্রামবাসী। কারণ, কোনও দেহ যদি সকাল সকাল দাহ করার প্রয়োজন হয়, তা হলে স্কুল ছুটির সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করা যাবে কী ভাবে? শ্মশান কমিটির পক্ষে জানানো হয়েছে, ওই ভাবে সময় বেঁধে দাহকাজ সম্ভব নয়।

সমস্যা সমাধানের জন্য তিনি বাগনানের বিধায়কের সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানান স্কুল পরিচালন সমিতির সভাপতি অমরনাথ চৌধুরী। বিধায়ক অরুণাভ সেন বলেন, ‘‘বিধায়ক তহবিলের টাকা থেকে শ্মশানটিকে দূষণমূক্ত এবং বিজ্ঞানসম্মত ভাবে গড়ে তোলার চেষ্টা করব।’’ কেউ কেউ বৈদ্যুতিক চুল্লি তৈরির দাবি জানালেও তা নস্যাৎ করে দিয়েছেন বিধায়ক। তিনি জানান, কাছে কোনও নদী নেই। তাই এখানে বৈদ্যুতিক চুল্লি সম্ভব নয়।

একই রকম সমস্যায় বছরের পর বছর ভুগছিল উলুবেড়িয়ার যদুরবেড়িয়া বালিকা বিদ্যালয়টিও। এখানেও স্কুলের কাছে খোলা শ্মশানের জন্য সমস্যা হচ্ছিল ছাত্রী এবং স্কুল কর্তৃপক্ষের। এখানেও দাহকাজ শুরু হলে প্রায়ই স্কুলে ছুটি দিয়ে দেওয়া হচ্ছিল। সম্প্রতি পুরসভা বৈদ্যুতিক চুল্লি তৈরিতে উদ্যোগী হয়। কাজ শীঘ্রই শুরু হতে চলেছে বলে পুরসভা জানিয়েছে।

বাগনানের স্কুলটির সমস্যা কবে মেটে, এখনই সেটাই প্রশ্ন।

School Cremation
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy