হরিপাল গ্রামীণ হাসপাতালে আহতেরা। ছবি: দীপঙ্কর দে।
দু’টি পৃথক পথ দুর্ঘটনায় রবিবার হুগলিতে ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। জখম হন অন্তত ২৩ জন।
সকালে একটি ছোট ট্রাকে চড়ে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিষ্ণুপুর থেকে তারকেশ্বরে যাচ্ছিলেন বেশ কয়েক জন পুণ্যার্থী। হরিপালের নন্দকুঠির কাছে লরির ধাক্কায় ছোট ট্রাকটি উল্টে যাওয়ায় তিন পুণ্যার্থীর মৃত্যু হয়। অন্য দুর্ঘটনাটি ঘটে ভোরে, শেওড়াফুলি বৌবাজারের কাছে জিটি রোডে। ট্রাকের ধাক্কায় মৃত্যু হয় একটি ছোট ট্রাকের চালক এবং সওয়ার দুই সব্জি ব্যবসায়ীর।
পুলিশ সূত্রে খবর, হরিপালের নন্দকুঠির কাছে বৈদ্যবাটি-তারকেশ্বর ১২ নম্বর রুটে দুর্ঘটনায় মৃত পুণ্যার্থীরা হলেন তুলসী নস্কর (৫০), দিলীপ মণ্ডল (৪৫) এবং ছোট্টু সাউ (২৭)। তুলসীবাবু এবং দিলীপবাবুর বাড়ি বিষ্ণুপুরের কদম্বতলায়। ছোট্টুর বাড়ি রাইপুরে। শিশু-মহিলা মিলিয়ে তুলসীবাবুরা ছোট ট্রাকে প্রায় ৩৫ জন ছিলেন। তাঁদের ছোট ট্রাকটির পিছনে একটি লরি আসছিল। সকাল সাড়ে ন’টা নাগাদ নন্দকুঠির কাছে ছোট ট্রাকটিকে পাশ কাটিয়ে বেরনোর চেষ্টা করে লরিটি। তখনই ছোট ট্রাকটির ডালায় সেটির ধাক্কা লাগে। সংঘর্ষের অভিঘাতে ছোট ট্রাকটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার ধারে রাখা বালির উপর উল্টে যায়। বেগতিক বুঝে লরি নিয়ে চালক পালায়।
ঘটনাস্থলেই দিলীপবাবু মারা যান। অন্তত ২০ জন জখম হন। হরিপাল থানার ওসি বঙ্কিম বিশ্বাস পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে যান। আহতদের হরিপাল গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ছোট্টু এবং তুলসীবাবুর মৃত্যু হয়। আঘাত গুরুতর থাকায় তিন জনকে কলকাতার হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। হুগলি জেলা পরিষদের উপাধ্যক্ষ সমীরণ মিত্র হাসপাতালে গিয়ে আহতদের চিকিৎসার তদারক করেন। পুলিশ জানায়, দুর্ঘটনাগ্রস্ত ছোট ট্রাকটিকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। লরিটিকে ধরার চেষ্টা চলছে। জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘ছোট ট্রাকটিতে অতিরিক্ত লোক তোলা হয়েছিল। বালিতে ছিটকে পড়ায় অনেকে রক্ষা পেয়েছেন। না হলে বিপদ বাড়তে পারত।’’
শেওড়াফুলির দুর্ঘটনায় মৃতদের নাম কৃষ্ণচন্দ্র দলুই (৫১), হারাধন ভৌমিক (৪৩) এবং কালীপদ করণ (৫০)। কৃষ্ণচন্দ্রবাবুর বাড়ি কোন্নগরের পিসি মুখার্জি স্ট্রিটে। হারাধনবাবু সেখানকার কালীতলা কলোনিতে থাকতেন। কালীপদবাবুর বাড়িও কোন্নগরে। তিনিই ছোট ট্রাকটি চালাচ্ছিলেন। ভোর সাড়ে পাঁচটা নাগাদ হারধানবাবু, কালীপদবাবু-সহ ছয় সব্জি ব্যবসায়ী ওই ছোট ট্রাকে করে শেওড়াফুলি হাটে যাচ্ছিলেন। বৌবাজারের কাছে উল্টো দিক থেকে আসা ট্রাকের সঙ্গে সেটির সংঘর্ষ হয়। ঘটনাস্থলেই হারাধনবাবু মারা যান। বাকি যাত্রীরা সকলেই জখম হন। বেগতিক বুঝে অপর ট্রাকের চালক গাড়ি পেলে পালান। আহতদের শ্রীরামপুর ওয়ালশ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে কৃষ্ণচন্দ্রবাবুকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। পরে কালীপদবাবুও মারা যান। দুর্ঘটনাগ্রস্ত দু’টি গাড়িকেই আটক করে পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy