Advertisement
E-Paper

কেউ চায় ইঞ্জিনিয়ার হতে, কেউ ডাক্তার

ওদের কেউ গোয়েন্দা গল্পের পোকা, কেউ ভালবাসে ক্রিকেট, কেউ সময় পেলেই হাতে তুলে নেয় তুলি। তবে, প্রত্যেকেই পড়াশোনায় একনিষ্ঠ। রাজ্যের উচ্চ মাধ্যমিকের মেধা-তালিকায় তৃতীয় স্থান দখল করায় শুক্রবার হাওড়ার শ্যামপুরের হোগলানির মৃণ্ময় রায়কে নিয়ে যখন তাঁর আত্মীয় এবং পড়শিরা আনন্দে মেতে ওঠেন, তখন উলুবেড়িয়ার আরও কয়েকটি প্রান্তেও কিছু পরীক্ষার্থীকে ঘিরে দেখা গিয়েছে একই ছবি। সেই সব পরীক্ষার্থীদের নাম মেধা-তালিকায় না থাকলেও জেলার কৃতীদের মধ্যে তারা জায়গা করে নিয়েছে একদম প্রথম সারিতে।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ৩০ মে ২০১৫ ০২:০৩

ওদের কেউ গোয়েন্দা গল্পের পোকা, কেউ ভালবাসে ক্রিকেট, কেউ সময় পেলেই হাতে তুলে নেয় তুলি।

তবে, প্রত্যেকেই পড়াশোনায় একনিষ্ঠ। রাজ্যের উচ্চ মাধ্যমিকের মেধা-তালিকায় তৃতীয় স্থান দখল করায় শুক্রবার হাওড়ার শ্যামপুরের হোগলানির মৃণ্ময় রায়কে নিয়ে যখন তাঁর আত্মীয় এবং পড়শিরা আনন্দে মেতে ওঠেন, তখন উলুবেড়িয়ার আরও কয়েকটি প্রান্তেও কিছু পরীক্ষার্থীকে ঘিরে দেখা গিয়েছে একই ছবি। সেই সব পরীক্ষার্থীদের নাম মেধা-তালিকায় না থাকলেও জেলার কৃতীদের মধ্যে তারা জায়গা করে নিয়েছে একদম প্রথম সারিতে।

মৃণ্ময়ের বাড়ি শ্যামপুরের হোগলানিতে। তার বাবা শ্যামলবাবু গাড়ি সারানোর কাজ করেন। এলাকাতেই একটি গ্যারাজ চালান। মৃণ্ময় ছোট থেকেই নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশনের ছাত্র। সেখান থেকে উচ্চ মাধ্যমিক দিয়ে এ বার সে রাজ্যে তৃতীয়। তার প্রাপ্ত নম্বর ৪৮৯। অঙ্কে ১০০, পদার্থবিজ্ঞানে ৯৯, রসায়নে ৯৯, বাংলায় ৯৯ এবং ইংরেজিতে ৯২। তবে, একেবারে মুখ গুঁজে পড়াশোনা নয়, সময় পেলেই সে আবৃত্তি এবং বিতর্ক প্রতিযোগিতায় যোগ দিতে ভালবাসে।

শ্যামলবাবুর দুই ছেলের মধ্যে বড় ছেলে ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়াশোনা করছেন। মৃণ্ময়কে চিকিৎসক হিসেবে দেখতে চান শ্যামলবাবু। মৃণ্ময়ও চায় বাবার স্বপ্ন সফল করতে। মৃণ্ময় বলে, ‘‘বাবার মুখ উজ্জ্বল করার যথাসাধ্য চেষ্টা করব।’’ শ্যামলবাবু বলেন, ‘‘যত কষ্টই হোক, ছেলের উচ্চ শিক্ষার জন্য আরও বেশি পরিশ্রম করে উপার্জন করব। হাল ছাড়ব না।’’

মৃণ্ময়ের থেকে কিছুটা কম নম্বর পেয়েছে আমতা পীতাম্বর হাইস্কুলের পার্থসারথি পাত্র। তবে, ৪৭০ নম্বর তাকে বসিয়ে দিয়েছে জেলার কৃতীদের মধ্যে একদম প্রথম সারিতে। আমতার বেতাইয়ের বাসিন্দা পার্থ পড়াশোনার পাশাপাশি খেলাধুলো, বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডাও চালিয়ে গিয়েছে সমান তালে। বাংলা বাদে অন্য সব বিষয়েই তার শিক্ষক ছিল। কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার হতে চায় রহস্য ও হাসির গল্পের পোকা ছাত্রটি। তার বাবা তড়িৎবাবু পেশায় হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক। মা কনিকাদেবী গৃহবধূ। ছেলের সাফল্যে দু’জনেই খুশি। পার্থ বলে, ‘‘খেলাধুলো আর আড্ডা ছাড়া থাকতে পারি না। তাই উচ্চ মাধ্যমিক পড়ার ফাঁকেও চালিয়ে গিয়েছি।’’

৪৭০ নম্বর পেয়েছে উলুবেড়িয়া হাইস্কুলের দেবতোষ বসুও। উলুবেড়িয়ার নতিবপুরের বাসিন্দা স্কুল শিক্ষক শক্তিপদ বসুর একমাত্র ছেলে দেবতোষ একটু বেশিই নজর দিয়েছিল পড়াশোনায়। জয়েন্টে ইঞ্জিনিয়ারিং ও ডাক্তারি— দুই বিভাগেই পরীক্ষা দিলেও দেবতোষের ইচ্ছা চিকিৎসক হওয়ার। তার দিদিও ডাক্তারি পড়ছে। উচ্চ মাধ্যমিকে পাঁচ শিক্ষকের কাছে পড়েছে সে। কমিকস্ এবং গোয়েন্দা গল্প তার খুব পছন্দ। দেবতোষের কথায়, ‘‘দিদিই আমায় পড়াশোনায় সবচেয়ে উৎসাহ দেয়। তাই দিদির মতো ডাক্তারি নিয়েই পড়তে চাই।’’

বাগনান উচ্চ বিদ্যালয়ের সৈকত মণ্ডল পেয়েছে ৪৬৯। এই নম্বরে সে অবশ্য পুরোপুরি খুশি নয়। তাঁর কথায়, ‘‘ভেবেছিলাম আরও বেশি পাব।’’ আগামী দিনে সে পদার্থবিজ্ঞান নিয়ে গবেষণা করতে চায়। অবসরে গোয়েন্দা গল্প পড়ে সৈকত। ক্রিকেট দেখতেও ভালবাসে। মহেন্দ্র সিংহ ধোনি তার প্রিয় ক্রিকেটার। বাবা সমীরবাবু ওই স্কুলেরই শিক্ষক। মা শিখাদেবী গৃহবধূ। উলুবেড়িয়ার বীণাপাণি হাইস্কুলের ক্যামেলিয়া জানার প্রাপ্ত নম্বর ৪৬৬। সৈকতোর মতো সে-ও পদার্থবিদ্যা নিয়ে গবেষণা বা অধ্যাপনা করতে চায়। রহস্য-গল্প পড়তে ভালবাসে। ‘কাকাবাবুর গোয়েন্দাগিরি’ তার বেশ পছন্দ। বাবা প্রবীরবাবু স্কুল শিক্ষক। মা প্রভাদেবী গৃহবধূ।

শ্যামপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের পৌলমী মণ্ডল চিকিৎসক হতে চায়। উচ্চ মাধ্যমিকে জেলার কৃতিদের মধ্যে সে জায়গা করে নিয়েছে। সে পেয়েছে ৪৬৩ নম্বর। পৌলমি থাকে শ্যামপুরের মৌলা চন্দনপুরে। পড়াশোনার পাশাপাশি সে ছবি আঁকতে পছন্দ করে। অবসর সময়ে বই পড়ে। শরৎচন্দ্র, বঙ্কিমচন্দ্র বা সমরেশ বসুর লেখা পড়তে ভালবাসে। পৌলমীর বাবা মলয়বাবু হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক। মা শ্যামলী মণ্ডল গৃহবধূ। মেয়ের সাফল্যে তাঁরা খুশি।

uluberia southbengal doctor engineer HS exam HS result
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy