শহরের প্রাচীন রথটির দেবতা রাধাবল্লভ জিউ। রথের প্রতিষ্ঠাকাল জানা নেই কারও। কথিত আছে, প্রায় ৫০০ বছর আগে বর্ধমানের রাজা বিগ্রহটি দান করেন আরামবাগের সদরঘাটের বিহারীনাথ মুখোপাধ্যায়ের পূর্বপুরুষকে।
সেই সময় কাঠের রথযাত্রা চালু হলেও মাঝে ছেদ পড়ে। পরে ১৩৩২ বঙ্গাব্দে স্থানীয় নাগ পরিবারের বিন্দুবালা দাসী স্বপ্নাদেশ পেয়ে তাঁর মেয়ে কুমুদিনী দাসীর সঙ্গে কাঠের রথের পরিবর্তন ঘটিয়ে পিতলের রথ প্রতিষ্ঠা করেন। ঘটা করে রথয়াত্রা তখন থেকেই শুরু হয়।
নাগ পরিবারের বর্তমান প্রজন্মের অভিযোগ, প্রাচীন রথের পিতল সব চুরি হয়ে গিয়েছে। চার মণের পিতলের দুটি ঘোড়ার একটি চুরি হয়ে গেছে। বিন্দুবালা দাসীর দান করা জমির আয় থেকে রথটি বর্তমানে সংস্কার করা হয়। এবং সেই জমির আয় থেকে রথ রাখার মাটির ঘরটি ভেঙে পাকা করা হয়েছে। রথের উচ্চতা প্রায় ১৫ ফুট। চওড়া প্রায় সাড়ে ৬ ফুট।
বিন্দুবালা দাসীর পিতলের রথ চালু করার পর বিগ্রহ রাধাবল্লভ জিউয়ের মাসি বাড়ি প্রথমে ছিল আরামবাগ থানার কাছে সিংহপাড়ায়। বর্তমানে সদরঘাট থেকে ৫ মিনিটের দূরত্বে ব্যানার্জি পাড়ায় মাসির বাড়ি পরিবর্তন করা হয়েছে বিগ্রহের। প্রায় ৭০ থেকে ৮০ হাজার ভক্ত পালা করে সঙ্কীর্ণ ওই পথে রথের রশি টানেন। পাঁচ মিনিটের পথ অতিক্রম করতে সময় লাগে আড়াই থেকে তিন ঘণ্টা।
পুরশুড়ার দেউলপাড়াতেও রথের মেলা জমে। দেউলপাড়ার বাসিন্দা প্রয়াত ভুদারীনাথ বাইরি গ্রামবাসীদের উৎসবমুখী করতে ১৯৪২ সালে কারুকার্য খচিত কাঠের রথটির উচ্চতা প্রায় ২৫ ফুট, চওড়া ১৪ ফুট। রথের দেবতা লক্ষী-নারায়ণ। দেউলপাড়া স্কুল সংলগ্ন মাঠের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত রথের গন্তব্যস্থল। আর সেই স্কুল মাঠেই বসে মেলা।