স্ত্রীকে গলা টিপে খুনের অভিযোগে স্বামীকে দোষী সাব্যস্ত করল শ্রীরামপুর আদালত। বুধবার শ্রীরামপুর আদালতের দ্বিতীয় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক সুমিত্রা রায় এই রায় দেন। পুলিশ জানায়, দোষী সাব্যস্ত যুবকের নাম পঙ্কজ কর্মকার। তবে এই ঘটনায় অপর দুই অভিযুক্ত পঙ্কজের মা এবং মাসি উপযুক্ত প্রমাণের অভাবে বেকসুর খালাস হয়ে গিয়েছেন।
পুলিশ এবং নিহতের পরিবার সূত্রে খবর, ২০১১ সালের জানুয়ারি মাসে হিন্দমোটরের কোতরং উদয়নপল্লির বাসিন্দা পঙ্কজের সঙ্গে বেলঘরিয়ার নুপুর কর্মকারের বিয়ে হয়। অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই নুপুরের স্বামী, শাশুড়ি-সহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাঁর উপর শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার শুরু করেন। এর মধ্যে ওই দম্পতির পুত্রসন্তান হয়। তারপরেও অত্যাচার কমেনি বলে অভিযোগ। নুপুরদেবীর পরিবারের দাবি, এর পর ২০১৩ সালের ১২ নভেম্বর সকাল সাড়ে ৭টা নাগাদ টেলিফোন মারফত নুপুরের শ্বশুরবাড়ির লোকেরা দিদি শিপ্রা মুখোপাধ্যায়কে খবর দেন, তাঁর বোন অসুস্থ। শিপ্রাদেবী বাড়িতে গিয়ে দেখেন, নুপুর খাটের উপর মৃত অবস্থায় পড়ে। গলায় কালশিটের দাগ।
পুলিশ জানিয়েছে, পঙ্কজ কর্মকার, তার মা অঞ্জনা কর্মকার এবং মাসি শিবানীদেবীর বিরুদ্ধে উত্তরপাড়া থানায় লিখিত অভিযোগ করেন শিপ্রাদেবী। তদন্তে নেমে অভিযুক্ত তিন জনকেই গ্রেফতার করে পুলিশ। তিন মাসের মধ্যে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী অফিসার অমলকুমার সাউ। তার কিছু দিন পর অঞ্জনাদেবী এবং শিবানীদেবী জামিন পেলেও পঙ্কজের জামিন মেলেনি। গত বছরের ১৫ মার্চ মামলার শুনানি শুরু হয়।
মামলার সরকারি আইনজীবী জয়দীপ মুখোপাধ্যায় জানান, নূপূরদেবীর দেহ কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্ত করা হয়। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে খুনের সম্ভবনাই উঠে আসে। যে চিকিৎসক ময়না তদন্ত করেছিলেন তিনি আদালতে এসে সাক্ষ্য দেন। সব মিলিয়ে মোট ১৩ জন এই মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন। শেষ পর্যন্ত বুধবার বিচারক সুমিত্রা রায় পঙ্কজকে দোষী সাব্যস্ত করেন। এ দিন আদালত থেকে বেরিয়ে জয়দীপবাবু বলেন, ‘‘ঘটনার মাত্র তিন বছরের মধ্যেই মামলার নিষ্পত্তি হল। বৃহস্পতিবার বিচারক সাজা ঘোষণা করবেন।’’
নূপূরের জামাইবাবু অমিতাভ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বিচারকের সিদ্ধান্তে আমরা খুশি। তবে আমরা দোষীর সর্বোচ্চ সাজা চাই। তবে ওর মা এবং মাসির সাজা হলে আরও ভাল লাগত।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy