প্রতীকী ছবি।
আগামী বছরের মধ্যে ডিএলএড (ডিপ্লোমা ইন এলিমেন্টারি এডুকেশন) প্রশিক্ষণ নিতে হবে রাজ্যের মাধ্যমিক শিক্ষাকেন্দ্র (এমএসকে) এবং শিশু শিক্ষাকেন্দ্রের (এসএসকে) প্রায় ৪৩ হাজার শিক্ষককে। কিন্তু প্রশিক্ষণের এখনও কোনও সুষ্ঠু ব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি বলে অভিযোগ তুলছেন তাঁরা।
চাকরিরত যে সব শিক্ষক-শিক্ষিকার ডিএলএড প্রশিক্ষণ নেই, তাঁদের ২০১৯ সালের মধ্যে তা নিতে হবে, এই মর্মে সম্প্রতি নির্দেশ জারি করে কেন্দ্র। রাজ্যের শিক্ষা দফতর ইতিমধ্যে ৫৪ হাজার প্রশিক্ষণহীন শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছে। কিন্তু এমএসকে এবং এসএসকে শিক্ষকদের প্রশ্ন, তাঁদের কী হবে? তাঁরা রয়েছেন পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের অধীনে। ওই দফতর ইতিমধ্যে তাঁদের কেন্দ্রীয় সরকারি শিক্ষক-শিক্ষণ সংস্থা ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ওপেন স্কুলিং’ (এনআইওএস) থেকে প্রশিক্ষণ নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে। কিন্তু সেখানকার প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা যথাযথ নয় বলে তাঁদের অভিযোগ।
পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের এই বিভাগের ভারপ্রাপ্ত যুগ্মসচিব স্বাতী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘প্রতিটি ব্লকে সমিতি এডুকেশন অফিসারদের বলা হয়েছে প্রশিক্ষণকেন্দ্র খোলার জন্য। সেখানেই উপযুক্ত প্রশিক্ষক রেখে শিক্ষকদের এনআইওএস-র সিলেবাস অনুযায়ী গাইড করা হবে।’’
এমএসকে-এসএসকে শিক্ষকদের অনেকেরই অভিযোগ, এখনও অধিকাংশ জায়গাতেই প্রশিক্ষণকেন্দ্র খোলা হয়নি। অনেকে এনআইওএস-এ ভর্তি হয়েছেন ঠিকই, কিন্তু তা খরচসাপেক্ষ বলে জানিয়েছেন। তাঁদের অভিযোগ, প্র্যাকটিক্যাল পেপার জমা দিতে হয় বিশেষজ্ঞ শিক্ষকদের কাছে। কিন্তু বিশেষজ্ঞ শিক্ষক কোথায় মিলবে তার কোনও দিশা দেওয়া হয়নি। এর মধ্যেই ২৬ ফেব্রুয়ারি প্রথম সেমিস্টার পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা করেছে এনআইওএস। প্র্যাকটিক্যাল পেপার জমা দিতে হবে ৩০ জানুয়ারি। শিক্ষকদের একটা বড় অংশ জানিয়েছেন, এখনও তাঁরা জানতেই পারেননি কোথায় প্র্যাকটিক্যাল পেপার জমা দেবেন।
এনআইওএস-এর কলকাতা কেন্দ্রের এক কর্তা জানান, প্র্যাকটিক্যাল পেপার জমা দেওয়ার জন্য বিভিন্ন জেলায় শিক্ষক-শিক্ষণ কেন্দ্র বাছা হয়েছে। তার তালিকাও শিক্ষকদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেখানে তাঁরা যোগাযোগ করতে পারেন।
কিন্তু ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, তালিকাই সার। বেশির ভাগ জায়গাতেই পেপার জমা নেওয়া হচ্ছে না। হাওড়া জেলায় ২৭টি এমএসকে এবং ৩০০ এসএসকে আছে। প্রশিক্ষণহীন শিক্ষকের সংখ্যা প্রায় ৬০০। তাঁদের অভিযোগ, প্র্যাকটিক্যাল পেপার জমা দেওয়ার জন্য ২০টি বেসরকারি কলেজকে নির্বাচিত করা হয়েছে বলে জানানো হলেও ওই সব কলেজ কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁদের কাছে এনআইওএস কোনও লিখিত নির্দেশ পাঠায়নি।
এমএসকে-এসএসকে যৌথ শিক্ষক সমিতির রাজ্য সভাপতি মুকলেশ রহমান বিশ্বাস বলেন, ‘‘রাজ্যের সর্বত্র আমাদের প্রশিক্ষণ নিয়ে ছেলেখেলা হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে ডিগ্রি অর্জন করা আমাদের পক্ষে কতটা সম্ভব? অথচ, ২০১৯ সালের মধ্যে ডিগ্রি না-পেলে আমাদের তো চাকরি থাকবে না।’’
স্বাতীদেবী অবশ্য আশ্বাস দিয়েছেন, কোথায় সমস্যা হচ্ছে, তা খতিয়ে দেখা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy