Advertisement
E-Paper

‘প্রচণ্ড গরমে’ কর্মবিরতি উঠল বিচারকের হস্তক্ষেপে

রোদের দাপট অনেকটাই স্তিমিত। গত চার-পাঁচ দিন ধরে রাতে বৃষ্টির জেরে গরমের তাপও কিছুটা কম। শ্রীরামপুর আদালতে অবশ্য উল্টো ছিরি। প্রচণ্ড গরমের কারণে সেখানে গত সোমবার থেকে তিন দিনের কর্মবিরতির ডাক দিয়েছিলেন আইনজীবীরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ মে ২০১৬ ০২:৫২
কর্মবিরতির জেরে সুনসান আদালত চত্বর। ছবি: দীপঙ্কর দে।

কর্মবিরতির জেরে সুনসান আদালত চত্বর। ছবি: দীপঙ্কর দে।

রোদের দাপট অনেকটাই স্তিমিত। গত চার-পাঁচ দিন ধরে রাতে বৃষ্টির জেরে গরমের তাপও কিছুটা কম। শ্রীরামপুর আদালতে অবশ্য উল্টো ছিরি। প্রচণ্ড গরমের কারণে সেখানে গত সোমবার থেকে তিন দিনের কর্মবিরতির ডাক দিয়েছিলেন আইনজীবীরা। ফলে কাজকর্ম লাটে ওঠায় নাকাল হচ্ছিলেন বিচারপ্রার্থীরা। এই পরিস্থিতিতে অবশ্য জেলা বিচারক বিবেক চৌধুরীর মধ্যস্থতায় আজ, বুধবারেই কর্মবিরতি তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

যৌথ সংগ্রাম কমিটির (মহিলা দেওয়ানি বিচারক মন্দাক্রান্তা সাহার বিরুদ্ধে আন্দোলনের সময় এই কমিটি গঠিত হয়েছিল) নামে এই কর্মবিরতির ডাক দেওয়া হয়। এর আগেও বার বার এই আদালতে আইনজীবীদের একাংশের কাজকর্ম নিয়ে বিতর্ক দানা বেঁধেছে। কখনও মহিলা বিচারককে বদলির দাবিতে দেড় মাসেরও বেশি এজ‌লাস বয়কট করা হয়েছে। কখনও আবার প্রবীণ আইনজীবীর মৃত্যুতে শোকপালনের জন্য কর্মবিরতির দিনেই মাঠে ক্রিকেটে মেতেছেন কতিপয় আই‌নজীবী। এ বার ‘গরম অনুভবের’ সময়কাল নিয়ে ফের বিতর্ক শুরু হয়েছে। এ রাজ্যের বিভিন্ন আদালতে আইনজীবীদের একাংশের কর্মবিরতি বা আদালত বয়কটের ফলে কর্মসংস্কৃতি শিকেয় উঠেছে বলে অভিযোগ। হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি মঞ্জুলা চেল্লুর এ ব্যাপারে কড়া মনোভাব পোষণ করলেও পরিস্থিতি বদলায়নি বলে অনেক আইনজীবীই মনে করেন।

তাঁদের বক্তব্য, গরম এখন কম থাকলেও অনেক হিসেব করেই গরমের কারণে কর্মবিরতির ডাক দেওয়া হয়েছে। শনি, রবিবার এমনিতেই আদালতে ছুটি গিয়েছে। সোমবার থেকে কর্মবিরতি শুরু হওয়ায় ছুটি টানা পাঁচ দিন। তার উপর বৃহস্পতিবার ভোট গণনা। সে দিন অনেক আইনজীবীই হয়তো আদালতে আসবেন না।

বলাবাহুল্য, আইনজীবীদের একাংশ এই কর্মবিরতির সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। যখন তখন যেন-তেন কারণে কর্মবিরতি করলে, জনমানসে তার বিরূপ প্রভাব পড়বে ব‌লে তাঁরা মনে করেন। কর্মবিরতির স্বপক্ষে থাকা আইনজীবীদের অবশ্য দাবি, আদপেই গরমের জন্য কর্মবিরতি করা হয়নি। বরং গরমে কাজ করতে আদালতে যে পরিবেশ দরকার, তা এখানে অমিল। পরিকাঠামো ঢেলে সাজার দাবিতেই তাঁদের কর্মবিরতির সিদ্ধান্ত। তাঁদের বক্তব্য, কিছুদিন আগে বিচারপ্রার্থীদের জন্য ঠাণ্ডা জলের দু’টি মেশিন বসানো হয়েছিল। সে দু’টি বিকল। দু’টি টিউবওয়েলের একটি খারাপ। তা ছাড়া, এজলাসে পর্যাপ্ত পাখা নেই।

সরকারি আইনজীবী জয়দীপ কর্মকারের কথায়, ‘‘ব্লকের প্রশাসনিক অফিসার, থানার ওসি-র চেম্বারও যেখানে বাতানুকুল, সেখানে আদালতের বিচারকের চেম্বারে এ সি থাকবে না! বিচারক থেকে বিচারপ্রার্থী, আইনজীবী থেকে মুহুরি সবাইকেই এখানে গলদঘর্ম হয়ে কাজ করতে হয়। এটা চলতে পারে না।’’

আইনজীবীদের যুক্তি, গত মাস দেড়েকের তীব্র গরমের অভিজ্ঞতা থেকেই তাঁরা কর্মবিরতির সিদ্ধান্ত নেন। এই ক’দিন যে বৃষ্টি হবে, তা তাঁরা জানতেন না। তা ছাড়া, সোম এবং মঙ্গলবার কিছু আইনজীবী কাজও করেছেন। তাঁদের বাধা দেওয়া হয়নি। বিচারকরাও এজলাসে বসেছেন। মঙ্গলবার জেলা বিচারক বিবেক চৌধুরী আইনজীবীদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন। আইনজীবী সূত্রের খবর, কর্মবিরতি তুলে নেওয়ার অনুরোধ জানান জেলা বিচারক। এর পরেই আলোচনা করে বুধবার থেকে কাজে ফেরার সিদ্ধান্ত হয়। জয়দীপবাবুর কথায়, ‘‘জেলা বিচারককে আমরা সব বুঝিয়ে বলেছি। উনি সমাধানের চেষ্টা করার আশ্বাস দিয়েছেন। ওঁর সম্মানে বুধবারেই কাজ চালুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’’

judge Strike
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy