Advertisement
E-Paper

মেলে হুমকি দিয়ে টাকা আদায়ের ছক

ই-মেলকে হাতিয়ার করে ফাঁদ পেতেছিল একাদশ শ্রেণির ছাত্রটি। তবে শেষ রক্ষা হল‌ না। এক চিকিৎসককে হুমকি দিয়ে টাকা আদায় করতে গিয়ে হাতেনাতে পুলিশের হাতে ধরা পড়ল ওই কিশোর। সোমবার রাতে রিষড়ার দেওয়ানজি স্ট্রিটের ঘটন‌া। ধৃত ছাত্রের বাড়িও ওই এলাকায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ জানুয়ারি ২০১৭ ০১:৫১

ই-মেলকে হাতিয়ার করে ফাঁদ পেতেছিল একাদশ শ্রেণির ছাত্রটি। তবে শেষ রক্ষা হল‌ না। এক চিকিৎসককে হুমকি দিয়ে টাকা আদায় করতে গিয়ে হাতেনাতে পুলিশের হাতে ধরা পড়ল ওই কিশোর। সোমবার রাতে রিষড়ার দেওয়ানজি স্ট্রিটের ঘটন‌া। ধৃত ছাত্রের বাড়িও ওই এলাকায়।

সঞ্জয় সুদ নামে ওই চিকিৎসক বলেন, ‘‘সাত লক্ষ টাকা চেয়ে মোট ১২টা ই-মেল পেয়েছিলাম। টাকা না দিলে নানা হুমকিও দেওয়া হয়েছিল। খুবই আতঙ্কে ছিলাম। শেষ পর্যন্ত সিআইডি যে রহস্য উদঘাট‌ন করল, সেটাই বাঁচোয়া।’’

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দিন কয়েক ধরে শ্রীরামপুরের খটিরবাজারের কাছে মাহেশ হাউজিং এস্টেটের বাসিন্দা চিকিৎসক সঞ্জয় সুদের কাছে হুমকি দিয়ে ই-মেল আসছিল। ওই চিকিৎসক জানান, ই-মেলে তাঁর কাছে সাত লক্ষ টাকা দাবি করা হয়। না হলে তাঁর ছেলেকে খুন এবং মেয়ের গায়ে অ্যাসিড ঢেলে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। হুমকিতে রীতিমতো ভয় পেয়ে যান তিনি। ২৯ ডিসেম্বর তিনি শ্রীরামপুর থানায় সমস্ত ঘটনা জানান। কলকাতায় ভবানীভবনে গিয়ে সিআইডি-র সাইবার ক্রাইম শাখার অফিসারদের কাছেও সব জানান। সোমবার তিনি শ্রীরামপুর থানায় এফআইআর করেন।

কোথা থেকে কে ই-মেল করছে তা জানার জন্য গোয়েন্দাদের পরামর্শে ওই চিকিৎসক ই-মেলের মাধ্যমেই টাকার অঙ্ক নিয়ে দর-কষাকষি শুরু করেন। সেই সূত্রে পুলিশ জানতে পারে রিষড়ার দেওয়ানজি স্ট্রিট থেকে ওই ই-মেল করা হচ্ছে। তবে ছেলেটিও কোনও ভাবে বুঝতে পারে, তার ই-মেল অ্যাকাউন্ট ‘হ্যাক’ করার চেষ্টা হচ্ছে। পুলিশ পিছনে লেগেছে সন্দেহ করে সঞ্জয়বাবুকে সে শাসায়। ছেলেটিকে ধরতে পুলিশ সঞ্জয়বাবুকে তার সঙ্গে দর কষাকষি চালিয়ে যেতে বলে।

পুলিশ সূত্রে খবর, দর কষাকষিতে পাঁচ লক্ষ টাকায় ছেলেটি রাজি হয়। সঞ্জয়বাবুকে সে জানায়, দেওয়ানজি স্ট্রিটে একটি নির্দিষ্ট জায়গায় তিনি যেন গাড়ি নিয়ে আসেন এবং যেন সাদা জামা পরেন। গাড়ি দাঁড় করিয়ে সিটে টাকার ব্যাগ রেখে তিনি যেন দূরে চলে যান। ‘চালাকি’ করলে ‘ফল ভাল হবে না’ বলেও হুমকি দেয় সে। কথামতো সোমবার রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ সঞ্জয়বাবু গাড়ি নিয়ে নির্দিষ্ট জায়গায় যান। ছেলেটি গাড়ি থেকে টাকার ব্যাগ নিতে এলে সাদা পোশাকে ওৎ পেতে থাকা গোয়েন্দারা তাকে ধরে ফেলেন।

পুলিশের বক্তব্য, ধৃতের বয়স ১৭ বছর ৯ মাস। মঙ্গলবার তাকে উত্তরপাড়ার জুভেনাইল আদালতে তোলা হয়। তার বিরুদ্ধে সাইবার অপরাধ-সহ বি‌ভিন্ন ধারায় মামলা করা হয়েছে।

কিন্তু এ ভাবে টাকা চাওয়া কেন?

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত কিশোর রিষড়া স্টেশনের কাছে একটি হিন্দি মাধ্যম স্কুলে একাদশ শ্রেণিতে পড়ে। পড়াশোনাতেও মেধাবী। তদন্তকারী এক অফিসারের কথায়, ‘‘কম্পিউটার এবং ইন্টারনেট সম্পর্কে ছেলেটার তুখোড় জ্ঞান।’’ ওই ছাত্রের বিমা কোম্পানির এজেন্ট। মা ক্যান্সারে ভুগে মারা গিয়েছেন। পুলিশের দাবি, জেরায় ওই কিশোর জানিয়েছে, চিকিৎসক সঞ্জয়বাবুর কাছে তার মায়ের চিকিৎসা হয়েছিল। সেই প্রেসক্রিপশন থেকেই সে ওই চিকিৎসকের ই-মেল‌ ‌আইডি পায়। জীবনযাত্রার মান বাড়ানোর জন্যই সে এ ভাবে টাকা হাতানোর ফন্দি এঁটেছিল।

ছেলের এমন কাণ্ড ঘুণাক্ষরেও জানতেন না বাবা। এ দিন সব জানতে পেরে তিনি বলেন, ‘‘ও অনেক রাত পর্যন্ত কম্পিউটার নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করত। ভাবতাম পড়াশোনা করছে। কিন্তু এমন যে কাণ্ড ঘটাবে বুঝতেই পারিনি।’’

Student arrested Extort money Rishra
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy