সঞ্চিতা চট্টোপাধ্যায়
কিছু ক্ষণ আগেও দিদির সঙ্গে টিভি দেখছিলেন। রাত ৯টা নাগাদ ফোন আসার পরেই উঠে যান তিনি। কিছু পরেই একটা শব্দ হয়। বাড়ির সবাই ছুটে গিয়ে দেখেন, মেঝেতে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় পড়ে ছোট মেয়ে। পাশে মোবাইল। আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাওড়া জেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁকে রেফার করা হয় কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। সোমবার রাত আড়াইটে নাগাদ মৃত্যু হয় তাঁর। পুলিশ জানায়, লিলুয়ার বি রোডের বাসিন্দা ওই তরুণীর নাম সঞ্চিতা চট্টোপাধ্যায় (২৬)।
হাওড়ার বেলগাছিয়ায় নিতাইচরণ চক্রবর্তী হোমিওপ্যাথি মেডিক্যাল কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিলেন সঞ্চিতা। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, এক চিকিৎসকের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপড়েনের জেরে আত্মঘাতী হয়েছেন ওই তরুণী। তাঁর পাকস্থলীতে বিষ মিলেছে বলে হাসপাতাল সূত্রে খবর। পুলিশ জানিয়েছে, ময়না-তদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পরেই মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত করে বলা যাবে। মেয়ের মৃত্যুর জন্য কল্যাণীর বাসিন্দা এনআরএসের এক চিকিৎসককে দায়ী করে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন সঞ্চিতার বাবা উত্তম চট্টোপাধ্যায়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, উত্তমবাবু বাড়ি বাড়ি পুজো করেই তাঁর দুই মেয়ে ও এক ছেলেকে বড় করেছেন। দুই মেয়ে অবিবাহিত। ছেলে বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত। সঞ্চিতার পড়াশোনার খরচ চালাচ্ছিলেন ছেলেই। পুলিশ জানায়, বছর দুই আগে এনআরএসের এক চিকিৎসকের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে ওঠে সঞ্চিতার। বিয়ের কথাও এগোয়। সম্প্রতি ওই যুবকের পরিবার তাঁদের সম্পর্ক মেনে না নিতে না চাওয়ায় অশান্তি শুরু হয়।
মঙ্গলবার সঞ্চিতার দিদি অর্পিতা চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘খুবই চাপা স্বভাবের হলেও আমাকে কিছু কথা বলত। তখনই জানতে পারি, আমাদের পারিবারিক অবস্থার জন্য ছেলেটির পরিবার বোনকে মেনে নেয়নি। উপরন্তু যুবকটির সঙ্গে অন্য মেয়ের সম্পর্ক তৈরি হয়। এর জেরে বোন খুব মানসিক যন্ত্রণায় ছিল।’’ অর্পিতা জানান, সন্ধ্যায় সঞ্চিতার মোবাইলে একটি মেসেজ আসার পরেই তিনি ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেন। অনুমান, তখনই বিষাক্ত কিছু খান তিনি। এর পরে কিছু ক্ষণ টিভি দেখেন। ফের ফোন আসায় উঠোনে যান। সেখানেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। পুলিশ জানায়, ওই যুবকের খোঁজে তল্লাশি চলছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy