Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪
পুজো বোনাসের দুই ছবি হুগলিতে

পুজোর মুখে বন্ধ কারখানা, বেকার চার হাজার শ্রমিক

বোনাসের দাবিতে আন্দোলনের জেরে ব্যাহত হচ্ছে উৎপাদন—এমন অভিযোগে মঙ্গলবার ‘সাসপেনশান অফ ওয়ার্ক’ এর নোটিস ঝুলিয়ে দেওয়া হল মগরার কুন্তীঘাটে কেশোরাম রেয়ন সুতোকলে। পুজোর মুখে কাজ হারালেন এই কারখানার চার হাজার শ্রমিক।

বোনাসের দাবির জেরে বন্ধ কারখানা। ছবি: তাপস ঘোষ।

বোনাসের দাবির জেরে বন্ধ কারখানা। ছবি: তাপস ঘোষ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মগরা শেষ আপডেট: ০৫ অক্টোবর ২০১৬ ০২:২৯
Share: Save:

বোনাসের দাবিতে আন্দোলনের জেরে ব্যাহত হচ্ছে উৎপাদন—এমন অভিযোগে মঙ্গলবার ‘সাসপেনশান অফ ওয়ার্ক’ এর নোটিস ঝুলিয়ে দেওয়া হল মগরার কুন্তীঘাটে কেশোরাম রেয়ন সুতোকলে। পুজোর মুখে কাজ হারালেন এই কারখানার চার হাজার শ্রমিক।

সংস্থার চিফ লেবার অফিসার প্রদীপ দত্ত বলেন, ‘‘কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বোনাস দেওয়া হয়। তাতে শ্রমিকেরা কাজ বন্ধ করে আন্দোলন করায় উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছিল। তাই বাধ্য হয়েই ‘সাসপেনশন অফ ওয়ার্ক’-এর নোটিস দেওয়া হয়।’’

আইএনটিটিইউসি-র হুগলি জেলা সম্পাদক বিদ্যুৎ রাও বলেন, ‘‘পুজোর মুখে কারখানা বন্ধের ফলে শ্রমিকেরা সঙ্কটে পড়লেন। আমরা চেষ্টা করছি জেলা প্রশাসন ও কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে যাতে সমস্যার সমাধান করা যায়।’’

যদিও এ দিন কর্তৃপক্ষের কারখানা বন্ধের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে কুন্তীঘাট স্টেশনে প্রায় দু’ঘণ্টা রেল অবরোধ করেন শ্রমিকেরা। যার জেরে দুর্ভোগে পড়েন অফিসমুখো নিত্যযাত্রীরা। সদর মহাকুমাশাসক সুদীপ সরকার বলেন, ‘‘কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে।’’

পুলিশ ও কারখানা সূত্রে খবর, মগরার কুন্তিঘাট এলাকার সুতো তৈরির ওই কারখানায় কয়েকদিন ধরেই শ্রমিকদের মধ্যে বোনাস নিয়ে অশান্তি চলছিল। কারখানা কর্তৃপক্ষ পুজো বোনাস দিলেও তাতে শ্রমিকেরা খুশি ছিলেন না। তাঁদের দাবি, শ্রম আইন অনুযায়ী বোনাস দিতে হবে। কিন্তু কারখানা কর্তৃপক্ষ তাতে রাজি হননি। এই নিয়ে গত কয়েকদিন ধরে শ্রমিক -কর্তৃপক্ষের টানাটানিতে কারখানার উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছিল। কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, শ্রমিকরা কাজ বন্ধ করে আন্দোলন করছিলেন। এই কারণেই ‘সাসপেনশান অফ ওয়ার্ক’-এর নোটিস দেওয়া হয়েছে।

এই নোটিস দেখার পরেই ক্ষিপ্ত শ্রমিকেরা এদিন সকাল ৮টা নাগাদ কুন্তীঘাট স্টেশনে রেল অবরোধ করেন। তাঁদের দাবি, অবিলম্বে কারখানা খুলতে হবে। অবরোধের জেরে আটকে পড়ে কাটোয়া-হাওড়া শাখার লোকাল সহ বেশ কয়েকটি দূরপাল্লার ট্রেন। বেলা ১০টা নাগাদ জেলা প্রশাসনের কর্তারা এসে কারখানা খোলার আশ্বাস দেওয়ার পরে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়। তারপরেও ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হতে কয়েক ঘণ্টা কেটে যায়।

কারখানা এক শ্রমিক জয়ন্ত রায় বলেন, ‘‘বছরে একবারই বোনাস দেওয়া হয়। সেখানে নিয়মমতো বোনাস না দিয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষ খেয়াল খুশিমতো বোনাস দিচ্ছেন। সেই কারণেই শ্রমিকেরা ক্ষুব্ধ। শ্রমিক অসন্তোযে উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার জন্য কারখানা বন্ধের সিদ্ধান্ত, কর্তৃপক্ষের অজুহাত ছাড়া কিছু নয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE