Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

নাবালিকাকে বিয়ে করতে ব্যর্থ হয়ে তার বাড়িতে হামলা

নাবালিকাকে বাড়ি থেকে ফুসলিয়ে নিয়ে গিয়েও বিয়ে করতে পারেনি যুবক। সেই রাগের মাসুল দিল মেয়েটির গোটা পরিবার।

জখম মাসি ও তাঁর ছেলে। বুধবার, হাওড়ায়। —নিজস্ব চিত্র।

জখম মাসি ও তাঁর ছেলে। বুধবার, হাওড়ায়। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ নভেম্বর ২০১৬ ০১:৫৫
Share: Save:

নাবালিকাকে বাড়ি থেকে ফুসলিয়ে নিয়ে গিয়েও বিয়ে করতে পারেনি যুবক। সেই রাগের মাসুল দিল মেয়েটির গোটা পরিবার। পুলিশ জানায়, বছর ষোলোর ওই কিশোরীকে নিয়ে চম্পট দিয়েছিল এক যুবক। কিন্তু পুলিশের চাপে তাকে বাড়িতে ফিরিয়ে দিতে বাধ্য হয়েছে সে। সেই রাগ গিয়ে পড়ে মেয়েটির পরিবারের উপরে। তার বাড়িতে গিয়ে দফায় দফায় হামলা চালানোর অভিযোগ উঠল ওই যুবক ও তার সঙ্গীদের বিরুদ্ধে। শেষ পর্যন্ত অবশ্য ওই যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বুধবার ঘটনাটি ঘটেছে হাওড়ার নবকুমার ব্যানার্জি লেনে।

পুলিশ সূত্রে খবর, মাস দেড়েক আগে হাওড়ার বাসিন্দা ওই কিশোরীকে বিয়ে করবে বলে বাড়ি থেকে নিয়ে পালিয়েছিল স্থানীয় যুবক ঋত্বিক পাসোয়ান। কিন্তু পুলিশে অভিযোগ দায়ের হওয়ায় মেয়েটিকে তার পরিবারের হাতে ফিরিয়ে দিতে হয়েছিল যুবকের।

পুলিশ জানায়, বুধবার সকাল ১০টা নাগাদ ওই কিশোরীর দুই মাসতুতো বোন বাড়ির বাইরে জল নিতে বেরিয়েছিল। অভিযোগ, সেই সময়ে ঋত্বিকের সঙ্গীরা তাদের ঘিরে ধরে। মুখে সিগারেটের ধোঁয়া ছেড়ে খৈনি ছিটিয়ে দেয়। ওই দুই নাবালিকার গায়ে জ্বলন্ত বাজিও ছুড়ে দেয় তারা। ওই দুই কিশোরী বাড়ি ফিরে পুরো ঘটনাটি জানালে পরিবারের লোকেরা হাওড়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ, এর পরে দুপুরে ওই দুই নাবালিকার মা মঙ্গলা সাউ বাড়ির বাইরে বেরোলে ওই যুবকেরা তাঁর উপরেও চড়াও হয়। ব্লেড দিয়ে মঙ্গলাদেবীর বাঁ হাত ফালাফালা করে কেটে দেওয়া হয়। রক্তাক্ত অবস্থায় তিনি মাটিতে পড়ে গেলে তাঁর দুই ছেলে রাকেশ ও টিঙ্কু মাকে হাসপাতালে নিয়ে যান। হাওড়া হাসপাতালে চিকিৎসা করানোর পরে মঙ্গলাদেবীরা হাওড়া থানায় গিয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানান। সেই সময়েই তাঁরা খবর পান ঋত্বিকের অনেক সঙ্গী মিলে তাঁদের বাড়িতে তাণ্ডব চালাচ্ছে। ভাঙচুর করা হচ্ছে বাড়ির সব কিছু। খবর পেয়েই মঙ্গলাদেবীরা বাড়িতে ছুটে আসেন।

মঙ্গলাদেবীরা জানান, ভাঙচুর চালানোর পাশাপাশি আগ্নেয়াস্ত্র নিয়েও তাণ্ডব চালাচ্ছিল ঋত্বিকের সঙ্গীরা। তারাই রিভলভারের বাঁট দিয়ে রাকেশের পেটে ও মুখে আঘাত করে। এমনকী, মঙ্গলাদেবীর বোন লালি সাহানিকেও মাটিতে ফেলে মারধর করা হয়। ছাড় দেওয়া হয়নি অন্তঃসত্ত্বা এক মহিলাকেও। অভিযোগ, তাঁকে লাঠি দিয়ে পেটায় ওই যুবকেরা। ভাঙচুরের খবর পেয়ে হাওড়া থানার পুলিশ এলেও কোনও ব্যবস্থা নেয়নি বলেই অভিযোগ। পুলিশের সামনেই ওই যুবকেরা তাণ্ডব চালাচ্ছিল বলে অভিযোগ মঙ্গলাদেবীদের। পরে অবশ্য বিশাল পুলিশবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। ঋত্বিককে গ্রেফতার করা হয়।

তবে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে ওঠা অভিযোগ স্বীকার করেননি হাওড়ার পুলিশ কমিশনার দেবেন্দ্রপ্রকাশ সিংহ। তিনি বলেন, ‘‘প্রেমঘটিত বিষয়ে দু’পক্ষের বচসা, মারামারি হয়েছে। এক জনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। পুলিশ প্রথমে কিছু করেনি, ঠিক নয়। পুলিশই তো গিয়ে সব সামলেছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

teenage girl marriage proposal attacked
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE