Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Howrah

চুঁচুড়ায় নিয়োগে প্রশ্ন পরীক্ষক সংস্থাকে নিয়ে

হুগলি-চুঁচুড়া পুরসভার ওই দুই পদে যাঁরা যোগ সম্প্রতি দিয়েছেন, তাঁদের অধিকাংশই শাসকদলের আত্মীয়—এমনই অভিযোগ।

চুঁচুড়া পুরসভার সামনে স্থায়ী চাকরির দাবিতে মঙ্গলবার অস্থায়ী কর্মীদের ফের বিক্ষোভ।—ফাইল চিত্র।

চুঁচুড়া পুরসভার সামনে স্থায়ী চাকরির দাবিতে মঙ্গলবার অস্থায়ী কর্মীদের ফের বিক্ষোভ।—ফাইল চিত্র।

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাপস ঘোষ
চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ১৮ জুন ২০২০ ০৬:২৭
Share: Save:

দুর্নীতির সলতে পাকানো হয়েছিল গত বছরই! দুর্নীতির প্রশ্নে হুগলি-চুঁচুড়া পুরসভায় যে নিয়োগ (গ্রুপ-সি ও গ্রুপ-ডি পদে) বাতিল হয়েছে, তা নিয়ে এখনও সর্বত্র চর্চা চলছে। ওই নিয়োগের পরীক্ষা হয়েছিল গত বছরের মার্চে। একটি বেসরকারি সংস্থাকে দিয়ে। এ নিয়েই প্রশ্ন তুলে বিরোধীদের অভিযোগ, সরকারি ব্যবস্থাপনায় আস্থা না-রেখে শাসকদলের নেতাদের আত্মীয়েরা যাতে সেই চাকরি পান, তা নিশ্চিত করতেই ওই সংস্থাকে বাছা হয়।

ওই বছরই জেলার আরও দু’টি পুরসভাতেও নিয়োগের পরীক্ষা হয়। তবে, সেগুলি হয় শ্রম দফতর এবং জেলাশাসকের দফতরের অফিসারদের তত্ত্বাবধানে। সেই নিয়োগ নিয়ে এখনও কোনও প্রশ্ন ওঠেনি।

হুগলি-চুঁচুড়া পুরসভার ওই দুই পদে যাঁরা যোগ সম্প্রতি দিয়েছেন, তাঁদের অধিকাংশই শাসকদলের আত্মীয়—এমনই অভিযোগ। বিরোধীদের দাবি, শাসকদলের দুই প্রভাবশালীর কথাতেই ওই বেসরকারি সংস্থাকে ‘শিখণ্ডী’ হিসেবে দাঁড় করিয়ে ‘কাজ’ সারা হয়।

বিদায়ী পুরবোর্ডের বিরোধী দলনেতা সমীর মজুমদার বলেন, ‘‘পুরবোর্ড চালানোর প্রশ্নে শুরু থেকে যে স্বজনপোষণ ও নিয়ম ভাঙার খেলা দেখেছি, তাতে চক্ষু চড়ক গাছ হয়ে গিয়েছে। নিয়োগ দুর্নীতি তার নবতম সংযোজন।’’ বিজেপির চুঁচুড়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি গৌতম চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ওদের দুই প্রভাবশালী নেতা এর পিছনে রয়েছে। বহু টাকা খরচ হয়েছে। গোটা ঘটনার যথাযথ তদন্ত হোক।’’

কেন বেসরকারি সংস্থাকে পরীক্ষা নেওয়ার জন্য বেছে নেওয়া হয়েছিল, সেই প্রশ্নের সরাসরি উত্তর এড়িয়ে গিয়েছেন বিদায়ী পুরপ্রধান তথা ওই পুরসভার বর্তমান প্রশাসক গৌরীকান্ত মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘সরকারি নির্দেশে নিয়োগ বাতিল করা হয়েছে। এখন মনগড়া যে যা খুশি বলতে পারেন। অনেক গুজবও বাজারে রটছে। একটা কথা মাথায় রাখা উচিত। বিরোধীরা নয়, আমাদের সরকারই কিন্তু নিয়োগ বাতিল করেছে।’’

জেলা তৃণমূল সভাপতি দিলীপ যাদব বলেন, ‘‘পুর প্রশাসন কী ভাবে চলবে, সেটা পুরবোর্ডই ঠিক করে। সেই বোর্ডে তো বিরোধী কাউন্সিলরাও থাকেন। বহু ক্ষেত্রে স্বচ্ছতার প্রশ্নে তাঁদের গুরুত্বও দেওয়া হয়।’’

শাসকদল নিজেদের পিঠ বাঁচাতে স্বচ্ছতার প্রশ্নে ঢাক-ঢোল পেটালেও কিন্তু বিতর্ক পিছু ছাড়ছে না হুগলি-চুঁচুড়া পুরসভার। কর্মীরাও সরব হচ্ছেন। তাঁদেরই এক জন বলেন, ‘‘বিদায়ী পুরবোর্ড চলেছে পুরপ্রধান আর জেলার এক বিধায়কের অঙ্গুলিহেলনে। স্বচ্ছতাই যদি থাকত, তা হলে ডেঙ্গি-করোনায় প্রাণ বাজি রেখে যে সব সাফাইকর্মী কাজ করছেন, মানবিকতার খাতিয়ে তাঁদের মধ্যে অন্তত পাঁচ জনকে স্থায়ী করা গেল না কেন?’’

পুরসভার অর্থ বিভাগের এক কর্মীর সংযোজন, ‘‘জেলাশাসকের অফিসের সরকারি অফিসার আর শ্রম দফতরের অফিসারেরা থাকলে তো পুরবোর্ডে শাসকদলের লোকেরা আইন ভাঙার সুযোগ পেতেন না। তাই কলকাতার ‘কলের পুতুল’ এক সংস্থাকে খাড়া করে যা খুশি করা হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Howrah Hooghly Municipality
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE