Advertisement
E-Paper

শিক্ষককে মারধর স্কুল সভাপতির

কিন্তু তার জন্য যে গায়ে হাত তুলবে ভাবিনি।’’ পক্ষান্তরে, মারধরের অভিযোগ উড়িয়ে গিয়ে স্কুল সভাপতি অভিজিৎবাবুর দাবি, ‘‘স্কুলে নানা দুর্নীতি রুখতেই টিচার ইনচার্জ পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কিন্তু তাঁকে মারধর করা হয়নি।’’ দুর্নীতির কথা মানেননি অনির্বাণবাবু।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ অগস্ট ২০১৭ ০২:১৪
দাদাগিরি: ভারপ্রাপ্ত প্রধান  শিক্ষককে তখন মারধর চলছে। নিজস্ব চিত্র

দাদাগিরি: ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে তখন মারধর চলছে। নিজস্ব চিত্র

স্কুলে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর বিবাদ। আর তার জেরে স্কুলের মধ্যেই চুলের মুঠি ধরে মাটিতে ফেলে চড়-থাপ্পড়, ঘুষি মারা হল পঞ্চাশোর্ধ্ব টিচার ইনচার্জকে। ফাটিয়ে দেওয়া হল তাঁর নাক।

খানাকুলের কেদারপুর হাইস্কুলের টিচার-ইনচার্জ অনির্বাণ রায়ের ‘অপরাধ’, তিনি নতুন পরিচালন সমিতির দাবিমতো ইস্তফা দেননি। সেই কারণে বুধবার বিকেলে ওই হামলার সময়ে জোর করে তাঁকে দিয়ে পদত্যাগপত্রে সই করিয়ে নেওয়া হয় বলেও অভিযোগ। গোটা ঘটনায় অভিযুক্ত স্কুলের সভাপতি অভিজিৎ দলুই-সহ চার জন। গোলমালের কথা শুনে ওই বিকেলে স্কুলে পুলিশ যায়। পুলিশই অনির্বাণবাবুকে উদ্ধার করে খানাকুল গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করে। রাতে গ্রেফতার করা হয় কানাই সিংহ নামে পরিচালন সমিতির এক সদস্যকে।

গোটা ঘটনায় স্তম্ভিত পড়ুয়ারা। তারা ভেবে পাচ্ছে না, কী কারণে এ ভাবে তাঁদের ‘স্যার’ মার খেলেন! মানসিক ভাবে পুরোপুরি বিধ্বস্ত অনির্বাণবাবুর খেদ, ‘‘নতুন পরিচালন সমিতির স্বেচ্ছাচারিতা নিয়ে কিছু আপত্তি তুলেছিলাম। তাই ওরা আমাকে সরিয়ে নতুন কাউকে টিচার ইনচার্জ পদে বসাতে চায়। এ জন্য বারবার ইস্তফা দেওয়ার কথা বলছিল। কিন্তু তার জন্য যে গায়ে হাত তুলবে ভাবিনি।’’ পক্ষান্তরে, মারধরের অভিযোগ উড়িয়ে গিয়ে স্কুল সভাপতি অভিজিৎবাবুর দাবি, ‘‘স্কুলে নানা দুর্নীতি রুখতেই টিচার ইনচার্জ পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কিন্তু তাঁকে মারধর করা হয়নি।’’ দুর্নীতির কথা মানেননি অনির্বাণবাবু।

খানাকুল-১ ব্লকের বিদ্যালয় পরিদর্শক আবিদ হাসান বলেন, ‘‘নিন্দনীয় ঘটনা। বিভাগীয় তদন্তের প্রয়োজন। গোটা বিষয়টি জেলা স্কুল পরিদর্শককে জানানো হয়েছে।’’ পুলিশ জানিয়েছে, বাকি তিন অভিযুক্ত পলাতক। তাঁদের খোঁজ চলছে। ধৃতকে বৃহস্পতিবার আরামবাগ আদালতে হাজির করানো হয়। বিচারক তাঁকে ১৪ দিন জেল-হাজতে রাখার নির্দেশ দেন।

পুলিশ ও স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, তৃণমূল পরিচালিত আগের পরিচালন সমিতি অনির্বাণবাবুকে টিচার ইনচার্জ হিসেবে মনোনীত করেছিল। তিনি বছর দুয়েক ওই দায়িত্ব সামলাচ্ছেন। সম্প্রতি স্কুলে নতুন পরিচালন সমিতি গঠন হয়েছে। নানা বিষয় নিয়ে দুই সমিতির নেতাদের মধ্যে বিবাদ চলছিল। বুধবার তা বড় আকার নেয়। এ দিন বেলা দেড়টা নাগাদ জনা কুড়ি লোক নিয়ে অভিজিৎবাবু স্কুলে আসেন। বিকেলের দিকে অনির্বাণবাবুর ঘরে ওই ঘটনা।

সিপিএমের জেলা সম্পাদক সুদর্শন রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘এই সরকার আসার পরেই রায়গঞ্জ কলেজের অধ্যক্ষকে মারধর করা হয়েছিল। ছ’বছর পরে সেই মারধর তো আছেই, জোর করে ইস্তফাপত্রও লেখানো হচ্ছে।’’ এবিটিএ-র রাজ্য সম্পাদক কৃষ্ণ ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘শিক্ষাঙ্গনে নৈরাজ্যের নতুন নজির।’’

গোটা ঘটনায় শাসকদল কড়া হওয়ারই বার্তা দিয়েছে। জেলা তৃণমূল সভাপতি তপন দাশগুপ্ত জানান, দলের যে মাপের নেতাই হোন, ওই শিক্ষকের গায়ে যাঁরা হাত দিয়েছেন, তাঁদের রেয়াত করা হবে না। পুলিশ সুপারকে অভিযুক্ত সকলকে গ্রেফতার করতে বলা হয়েছে।

Teacher School
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy