বন্ধ: দরজায় তালা লাগিয়ে ছাড়তে হয়েছে ঘর। নিজস্ব চিত্র
মাস দুয়েক আগে হরিপালের খামারচণ্ডীর এক প্রৌঢ়ের অপমৃত্যুতে খুনের অভিযোগ দায়ের হয়েছিল এলাকার সাত জনের বিরুদ্ধে। পুলিশ পাঁচ জনকে গ্রেফতারও করেছিল। তার মধ্যে দুই অভিযুক্তের পরিবারকে গ্রামছাড়া করে রাখার অভিযোগ উঠল মৃতের দুই ছেলে এবং গ্রামবাসীর একাংশের বিরুদ্ধে। অভিযোগ মানেননি মৃতের ছেলেরা। পুলিশ জানিয়েছে, ওই ঘরছাড়াদের ফেরানোর চেষ্টা হচ্ছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বছর ২৫ ডিসেম্বর বন্ধুদের সঙ্গে হরিপালের খাজুরিয়া মোড় এলাকায় চড়ুইভাতি করতে গিয়েছিলেন নন্দলাল গুপ্ত নামে ওই প্রৌঢ়। কিন্তু আর ফেরেননি। ওই বিকেলে এলাকার একটি নয়ানজুলি থেকে তাঁর মৃতদেহ মেলে। নন্দলালবাবুর বন্ধুরা পুলিশকে জানিয়েছিলেন, স্নান করতে নেমে ডুবে যান নন্দলালবাবু। কিন্তু তাঁর ছেলে বিজয় খুনের অভিযোগ দায়ের করায় পুলিশ নন্দলালবাবুর পাঁচ বন্ধুকে ধরে। তাঁদের মধ্যে রবি সাঁতরা, শেখ আকবর এবং প্রশান্ত মণ্ডলের বাড়িতে এর পরে হামলা হয়। অভিযোগ, বিজয় ও তাঁর ভাই অমিতের নেতৃত্বে ওই হামলা চালায় কিছু গ্রামবাসী। আকবর এবং রবির পরিবারের লোকজনকে বের করে দিয়ে বাড়িতে তালাও ঝুলিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।
এর পর থেকেই আকবরের স্ত্রী বর্ধমানের জামালপুরে আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। রবির ক্যান্সার আক্রান্ত স্ত্রী মায়া, মেয়েকে নিয়ে তারকেশ্বরে বাড়িভাড়া করে রয়েছেন। গত ১ ফেব্রুয়ারি তাঁদের গ্রামে ফেরানোর চেষ্টা করেছিল পুলিশ। কিন্তু তা সফল হয়নি। বারবার পুলিশের দ্বারস্থ হয়েও লাভ হচ্ছে না বলে তাঁদের অভিযোগ। হরিপাল কলেজের এক ছাত্রনেতার মদতে ওই দুই ভাই অত্যাচার চালাচ্ছে, এমন অভিযোগও উঠেছে।
রবির স্ত্রী মায়া বলেন, ‘‘ওই মৃত্যু নিয়ে আদালতে মামলা চলছে। রায় আমরা মাথা পেতে নেব। কিন্তু আমাদের উপরে অত্যাচার কেন? স্বামীর মাছের ব্যবসা বন্ধ করে দিয়েছে বিজয়-অমিতরা। টাকার অভাবে ঠিকমতো চিকিৎসাও করাতে পারছি না।’’ অভিযোগ মানেননি বিজয়। তাঁর দাবি, ‘‘অভিযোগ ভিত্তিহীন। আমরা কাউকে ঘরছাড়া করিনি। ওঁরা নিজেরাই চলে গিয়েছেন। বিচার ব্যবস্থার উপর আমাদের আস্থা আছে। বাবার মৃত্যুর বিচার পাব।’’
পুলিশ জানিয়েছে, গত ১ ফেব্রুয়ারি গ্রামছাড়া দু’টি পরিবারকে ফেরানোর সময় গ্রামবাসীদের একাংশের বাধায় ফিরে যেতে হয়েছিল। ফের তাঁদের ফেরানোর ব্যবস্থা করা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy