Advertisement
E-Paper

ধর্মঘটের দিন না চালানোয় ‘হুমকি’, বন্ধ বাস চলাচল

বামফ্রন্টের ডাকা গত বৃহস্পতিবারের ধমর্ঘটে হাওড়ার কয়েকটি রুটে বাস চালাননি মালিকেরা। কিন্তু তার পর ধমর্ঘট মিটে গেলেও ওই সব রুটে বাস চলছে না। কারণ, তৃণমূলের ‘হুমকি’— এমনই অভিযোগ ওই সব রুটের বাস-মালিকদের। বাস চলাচল বন্ধ হওয়ায় সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন উদয়নারায়ণপুরের পাঁচারুল-হাওড়া রুটের যাত্রীরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ মে ২০১৫ ০১:০৮

বামফ্রন্টের ডাকা গত বৃহস্পতিবারের ধমর্ঘটে হাওড়ার কয়েকটি রুটে বাস চালাননি মালিকেরা। কিন্তু তার পর ধমর্ঘট মিটে গেলেও ওই সব রুটে বাস চলছে না। কারণ, তৃণমূলের ‘হুমকি’— এমনই অভিযোগ ওই সব রুটের বাস-মালিকদের। বাস চলাচল বন্ধ হওয়ায় সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন উদয়নারায়ণপুরের পাঁচারুল-হাওড়া রুটের যাত্রীরা। ওই রুটে বাস চলাচল বন্ধ থাকার কথা স্বীকার করলেও দলের তরফে কোনও রকম হুমকি দেওয়ার কথা উড়িয়ে দিয়েছেন উদয়নারায়ণপুরের তৃণমূল বিধায়ক সমীর পাঁজা। তাঁর দাবি, ‘‘দলের কারও সঙ্গে বাস-মালিকদের কোনও বিবাদ নেই। আসলে ধর্মঘটের দিনে পাঁচারুলের কিছু যাত্রীর সঙ্গে বাস বন্ধ রাখাকে কেন্দ্র করে কয়েক জন বাস-মালিকের বচসা হয়। হামলার ভয়েই মালিকেরা ইচ্ছা করে রাস্তায় বাস নামাচ্ছেন না বলে আমার কাছে খবর আছে।’’

শুধু পাঁচারুল-হাওড়াই নয়, তৃণমূলের ‘হুমকি’তে রামপুর-হাওড়া ভায়া উদয়নারায়ণপুর এবং তারকেশ্বর-হাওড়া ভায়া রামপুর, উদয়নারায়ণপুর রুটের বাস চলাচলও গত ১ মে থেকে বন্ধ রয়েছে বলে বাস-মালিকেরা জানিয়েছেন। একই কারণে বন্ধ রয়েছে উদয়নারায়ণপুর-আমতা রুটের ট্রেকারও। বাস চলাচল বন্ধ থাকায় সমস্যায় পড়েছেন হাজার হাজার মানুষ। উদয়নারায়ণপুরের সঙ্গে শহরে যোগাযোগের জন্য কোনও ট্রেন চলাচলের ব্যবস্থা নেই। হাওড়া এবং কলকাতায় যাতায়াতে বাস-ট্রেকারই যাত্রীদের ভরসা। একমাত্র ডিহিভুরসুট-হাওড়া রুটের বাসই চালু আছে। তাতে আবার বাদুড়ঝোলা ভিড়। এ ছাড়া মানুষ মিনি ট্রাক এবং ভ্যান-রিকশায় কোনও মতে আমতা বা তারকেশ্বরে গিয়ে ট্রেন ধরছেন। কিন্তু এতে এক দিকে যেমন তাঁদের বিস্তর ঝামেলা সহ্য করতে হচ্ছে, অন্যদিকে যাতায়াত প্রচুর টাকা গচ্ছা যাচ্ছে।

ঠিক কী হয়েছে উদয়নারায়ণপুরে?

বাস মালিকেরা জানিয়েছেন, ধর্মঘটে সচরাচর তাঁরা রাস্তায় বাস নামান না। কারণ, এই সময়ে বাসের ক্ষতি হলে বিমা সংস্থাগুলি তা মেটানোর দায় নেয় না। রামপুর-হাওড়া ভায়া উদয়নারায়ণপুর রুটের এক বাস-মালিক জানান, এই ঝুঁকি সত্ত্বেও শাসকদলের আবেদন মেনে ধর্মঘটের দিনে তাঁরা রাস্তায় বাস নামিয়েছিলেন। কিন্তু যাত্রী ছিল না বললেই চলে। তা ছাড়া অনেক চালক-কন্ডাক্টর আসতে পারেননি। সেই কারণে বেলার দিকে তাঁরা বাস তুলে নেন। পরের দিন স্থানীয় কিছু তৃণমূল নেতা বিভিন্ন রুটের ‘স্টার্টার’দের (যাঁরা স্ট্যান্ড থেকে বাস ছাড়ার সময় নির্দিষ্ট করেন) হুমকি দিয়ে বাস চালাতে বারণ করে দেন বলে বাস-মালিকদের অভিযোগ। সেই ভয়েই তাঁরা বাস নামাচ্ছেন না বলে মালিকেরা জানান। একই ভাবে তাঁদেরও হুমকি দেওয়া হয় বলে উদয়নারায়ণপুর-আমতা রুটের ট্রেকার-মালিকেরা অভিযোগ করেছেন। বাস মালিকরা জানান, এরপরে তাঁরা আর সাহস করে বাস নামানোর ঝুঁকি নেননি। রামপুর-হাওড়া ভায়া উদয়নারায়ণপুর রুটের বাস একদিন মাত্র চলেছিল বলে মালিকেরা জানান। তবে, ওই ‘হুমকি’ নিয়ে বাস-মালিকেরা পুলিশ প্রশাসনের দ্বারস্থ হননি। কারণ, সে ক্ষেত্রে শাসকদলের কোপে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে তাঁরা জানিয়েছেন।

সমীরবাবু পাল্টা বলেন, ‘‘ধর্মঘটের দিনে ডিহিভুরসুট-হাওড়া রুট, উদয়নারায়ণপুর-উলুবেড়িয়া রুটের বাস চলাচলও তো বন্ধ ছিল। তা হলে ধর্মঘট মিটে যাওয়ার পরে সেই সব রুটের বাস ফের চলছে কী ভাবে?’’ একই সঙ্গে সমীরবাবুর দাবি, রামপুর-হাওড়া ভায়া উদয়নারায়ণপুর রুটের বাস চলাচলও বন্ধ হয়নি। তিনি বলেন, ‘‘বাস মালিকেরা তো বিষয়টি আমাকে জানাতে পারতেন। তা ছাড়া পুলিশ ও প্রশাসনের কাছেও তো সমস্যাটির কথা জানানো যেত। বাস-মালিকরা সেটাও তো করেননি। তাঁরা বাস নামিয়ে দেখুন না, কে বাধা দেয়? মানুষের ক্ষতি হয় এমন কোনও কাজ তৃণমূল করে না।’’

udaynarayanpur tmc udaynarayanpur bus service tmc stopped bus service tmc resisted bus servic general strike day
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy