Advertisement
E-Paper

২১ জুলাইয়ের প্রস্তুতিতেও অন্তর্দ্বন্দ্বের ছবি

কর্মিসভার মঞ্চে বড় থেকে মাঝারি হয়ে ছোট, হরেক কিসিমের নেতার ভিড়। চেয়ার বাড়ন্ত। ফলে প্রচণ্ড গরমেও গা-ঘেঁষাঘেঁষি করেই থাকতে হচ্ছে সকলকে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ জুলাই ২০১৬ ০১:০৫

কর্মিসভার মঞ্চে বড় থেকে মাঝারি হয়ে ছোট, হরেক কিসিমের নেতার ভিড়। চেয়ার বাড়ন্ত। ফলে প্রচণ্ড গরমেও গা-ঘেঁষাঘেঁষি করেই থাকতে হচ্ছে সকলকে।

এমনই আবহে ২১ শে জুলাইকে সামনে রেখে সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় আর মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের কলকাতায় আহ্বান জানালেন দলের সকল স্তরের নেতা-কর্মী-সমর্থকদের। সেই সঙ্গে ছিল দুই নেতার সিপিএম আর কংগ্রেসকে যারপরনাই আক্রমণ। তারই ফাঁকে মাস্টারমশাই তথা বিরোধী দলনেতা আবদুল মান্নানকে ‘কুলাঙ্গার’ বলে গালপাড়া। রবিবারের সকালে উত্তরপাড়ার সিএ মাঠে এটাই ছিল তৃণমূলের কর্মিসভার ছবি।

বস্তুত জেলা নেতৃত্ব মানতে না চাইলেও প্রবীণ-নবীনের তাল ঠোকাঠুকিতে এবার শহিদ স্মরণকে কেন্দ্র করে হুগলিতে তৃণমূলের রাজনীতি বেশ উত্তপ্ত। ২১ জুলাই নিয়ে এতদিন জেলায় ছোট ছোট পথসভা বাদে একটাই বড় প্রস্তুতি সভা হত। কিন্তু এ বার রাজ্য যুবার সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আবদুল মান্নানের খাসতালুক শেওড়াফুলিতে সভা করতে চান। যদিও তার আগেই জেলা নেতৃত্ব আগাম ঘোষণামত উত্তরপাড়ায় সভার কর্মসূচির প্রস্তুতি শুরু করে দেন। সে ক্ষেত্রে শেওড়াফুলির সভা বাতিলের প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। নাছোড় জেলার যুব নেতারা বেঁকে বসেন। শুরু হয় দুই তরফের চাপান-উতোর।

তৃণমূল সূত্রে খবর, চন্দননগরের বিধায়ক ইন্দ্রনীল সেনের সঙ্গে হুগলির এক সাংসদের বাদানুবাদও হয় এই নিয়ে। সেখানে এমন প্রশ্নও ওঠে, কেন হুগলিতে দুটো সভা? এরপর আকচা-আকচি এড়াতে প্রস্তাব আসে মধ্যপন্থার। সমস্যা এড়াতে শে‌ষ পর্যন্তঠিক হয়, উত্তরপাড়া এবং শেওড়াফুলি দু’টি জায়গাতেই সভা হবে।

জেলা যুবার কার্যনিবাহী সভাপতি শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়কে সামনে রেখে শুরু হয়ে যায় শেওড়াফুলিতে ১৩ জুলাইয়ের সভার প্রস্তুতি। জেলা নেতৃত্বের কাছে সরাসরি কলকাতা থেকে নির্দেশ পৌঁছয় শেওড়াফুলির সভা সফল করার জন্য।

কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। দলের মধ্যে যে বিশৃঙ্খলা রয়েছে তা এদিন উত্তরপাড়ার সভাতেও দেখা গিয়েছে। সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তৃতার মাঝেই কর্মীরা ওঠাবসা, জোরে কথা বলা সবই করছিলেন। বার কয়েক নিষেধের পরেও সে সব চলতে থাকায় এক সময় মেজাজ হারান সাংসদ। এ টুকু বাদ দিলে এদিন উত্তরপাড়া পুরসভার চেয়ারম্যান দিলীপ যাদবের উদ্যোগে সভায় ভিড়, আয়োজন ছিল চোখে পড়ার মতো। তবে অন্য ছবিও ছিল। চোখে পড়েছে জেলার দুই মন্ত্রী এবং দুই সাংসদের এদিন কর্মিসভায় অনুপস্থিতি।

রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য সভায় থাকলেও গরহাজির ছিলেন হরিপালের বিধায়ক বেচারাম মান্না। জেলা সভাপতি ও কৃষি বিপণন মন্ত্রী তপন দাশগুপ্ত অবশ্য এ সব পাত্তা দিতে নারাজ। তিনি বলেন, ‘‘অনৈক্যের গল্প পুরোটাই সাংবাদিকদের। ২১ জলাই জেলা থেকে ৩ লক্ষ কর্মী-সমর্থক কলকাতায় যাবেন। তারই প্রস্তুতি চলছে।’’

পুরনো জল্পনা উসকে দিয়ে জাতীয় স্তরে মমতা যাতে আরও বেশি করে সময় দেন সেই প্রশ্নে ভিন রাজ্যের সাংসদেরা কতটা উন্মুখ এ দিন তা ব্যাখ্যা করেন কল্যাণবাবু। তাঁর কথায়, ‘‘ফেডারেল ফ্রন্ট এখন অন্য রাজ্যের সাংসদদের অনেকেই চাইছেন। ফেডারেল ফ্রন্ট হলে দেশ একজন বাঙালি প্রধানমন্ত্রী পাবে।’’ পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘‘৩৪ বছর কংগ্রেস সিপিএমের বিরুদ্ধে লড়াই করল। আর এই জেলার নেতা কংগ্রেস নেতা মান্নান পিএসসি-র পদটা সিপিএমের পায়ে অর্পণ করলেন। মান্নান একটা কুলাঙ্গার।’’

বিধায়ক এবং প্রবীণ এক মাস্টারমশাইয়ের সম্পর্কে এমন মন্তব্যে সভা মঞ্চে উপস্থিত অনেক তৃণমূল নেতাই অস্বস্তিতে পড়ে যান। যদিও সরাসরি এই নিয়ে তাঁরা কিছু বলতে চাননি।

TMC 21st July Uttarpara
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy