Advertisement
১৪ জুন ২০২৪
West bengal news

শ্লীলতাহানিতে অভিযুক্ত দলের নেতা

দলে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বন্ধ করতে বার বার বলে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু তারকেশ্বরে শাসকদলের নেতা-কর্মীদের কানে সেই কথা ঢুকছে কই! এখানে তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল গড়াচ্ছে মারামারিতে। থানা-পুলিশ পর্যন্তও হচ্ছে। সম্প্রতি এক পরিবারিক গোলমালকে কেন্দ্র করে শাসকদলের দুই গোষ্ঠীর ঝামেলায় জখম হন বুথ সভাপতি-সহ অন্তত চার জন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
তারকেশ্বর শেষ আপডেট: ২৩ জুলাই ২০১৬ ০১:৪০
Share: Save:

দলে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বন্ধ করতে বার বার বলে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু তারকেশ্বরে শাসকদলের নেতা-কর্মীদের কানে সেই কথা ঢুকছে কই! এখানে তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল গড়াচ্ছে মারামারিতে। থানা-পুলিশ পর্যন্তও হচ্ছে। সম্প্রতি এক পরিবারিক গোলমালকে কেন্দ্র করে শাসকদলের দুই গোষ্ঠীর ঝামেলায় জখম হন বুথ সভাপতি-সহ অন্তত চার জন। শুক্রবার দলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মারধর এবং শ্লীলতাহানির অভিযোগ আনলেন তৃণমূলের এক পঞ্চায়েত সদস্যা। ওই নেত্রীর বিরুদ্ধেও মারধরের পাল্টা অভিযোগ দায়ের হল। ঘটনার জেরে সরগরম হয়ে রইল তারকেশ্বরের চাঁপাডাঙা এলাকা। পুলিশ জানায়, দু’পক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে।

পুলিশ ও তৃণমূল সূত্রের খবর, চাঁপাডাঙায় নিয়ন্ত্রিত বাজার সমিতির অর্থানুকূল্যে মাছ বিক্রির একটি বাজার তৈরি হয়েছে। শুক্রবার সেটির উদ্বোধন করেন তারকেশ্বর পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি তথা ব্লক তৃণমূল সভাপতি আনন্দমোহন ওরফে কেশব ঘোষ। তৃণমূলের একাংশের অভিযোগ, অনুষ্ঠানে স্থানীয় অনেক জনপ্রতিনিধিকে ডাকা হয়নি। সকাল ৯টা নাগাদ চাপাডাঙা পঞ্চায়েতের স্থানীয় তৃণমূল সদস্যা সেখানে যান। তিনি অভিযোগ তোলেন, চাঁপাডাঙা বাজার এলাকার পঞ্চায়েত সদস্য হওয়া সত্ত্বেও অনুষ্ঠানের ব্যাপারে তাঁকে কিছু জানানো হয়নি। চুপিচুপি উদ্বোধন করা হয়েছে। কাকে কাকে মাছ বিক্রির জায়গা দেওয়া হল সেটাও কেন গোপন করা হ‌ল, তা তিনি জানতে চান। এই নিয়ে দু’পক্ষের বচসা বাধে। ওই সদস্যার অভিযোগ, ‘‘প্রশ্ন তোলায় পঞ্চায়েতের উপপ্রধান শিবরাম দাঁ, দলীয় কর্মী পান্নালাল সাউ, নন্দলাল সাউ, প্রভাত চট্টোপাধ্যায় এবং সূরজ বাউড়ি আমাকে মারধর করেন। শ্লীলতাহানিও করেন।’’ ঘটনার খবর পেয়ে তাঁর ছেলে সেখানে গে‌লে তাঁর পালিয়ে যান বলে দাবি ওই সদস্যার। পুলিশ জানায়, এই মর্মে তারকেশ্বর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে এবং তাঁকে তারকেশ্বর গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।

এ দিকে, নন্দলালবাবু ওই পঞ্চায়েত সদস্যার বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ দায়ের করেছেন। নন্দলালবাবুর লটারির দোকান আছে। থানায় করা অভিযোগে জানিয়েছেন, এ দিন সকাল ৯টা নাগাদ তিনি এবং পান্নালালবাবু দোকানে ছিলেন। সেই সময় ওই তৃণমূল সদস্যা দলবল নিয়ে তাঁর দোকানে যান। তাঁদের হাতে লোহার রড, বাঁশ, আগ্নেয়াস্ত্র ছিল। নন্দলালবাবু এবং পান্নালালবাবুকে মারধর করা হয়। লটারির টিকিট ও নগদ কয়েক হাজার টাকা লুঠ করেন। উপপ্রধান শিবরামবাবুর দাবি, ‘‘ওই সদস্যা মিথ্যা অভিযোগ করছেন। ওঁর সঙ্গে আমার কোনও কথাই হয়নি। ২০-৩০ হাত তফাতে ছিলাম আমরা। উনিই আমাদের ছেলেদের মারধর করেন। নন্দলাল হাসপাতালে ভর্তি।’’ অভিযোগ অস্বীকার করে ওই সদস্যা বলেন, ‘‘ওঁরাই তোলাবাজি করছেন। আমি প্রতিবাদ করছি বলে সহ্য হচ্ছে না। দিদির কাছে (মুখ্যমন্ত্রী) বিহিত চাইব।’’ তারকেশ্বরের বিধায়ক রচপাল সিং বলেন, ‘‘মাছ বাজারের একটা শেডের উদ্বোধন নিয়ে একটা ছোটখাটো গোলমাল হয়েছে। স্থানীয় সদস্যাকে জানানো উচিত ছিল। জানালে এই সমস্যা হত না। দু’পক্ষের সঙ্গে কথা বলছি।’’

তবে দলের অন্দরে দ্বন্দ্ব রয়েছে তা স্বীকার করে নিয়েছেন শিবরামবাবু। তিনি বলেন, ‘‘‘আমরা একদল হলেও বিভাজন আছে। সেই কারণেই হয়তো উনি অভিযোগ করছেন।’’ গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রসঙ্গে বিধায়ক বলেন, ‘‘দু’একটা জায়গায় সমস্যা হচ্ছে এটা সত্যি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ যাঁরা মানবেন না, তাঁদের বিরুদ্ধে দল কড়া ব্যবস্থা নেবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

TMC Molestation
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE