Advertisement
E-Paper

পর্যটনকেন্দ্র কবে হবে, প্রশ্ন মাহেশে

জেলাশাসক সঞ্জয় বনশল অবশ্য বলেন, ‘‘কাজটা পূর্ত দফতর করবে। টেন্ডার প্রক্রিয়া হয়ে গিয়েছে। রথযাত্রা মিটলেই কাজ শুরু হয়ে যাবে বলে আশা করছি।’’ 

প্রকাশ পাল

শেষ আপডেট: ১৮ জুন ২০১৮ ০৩:০৬
ঐতিহ্য: মাহেশের রথযাত্রা। ফাইল চিত্র

ঐতিহ্য: মাহেশের রথযাত্রা। ফাইল চিত্র

বছর ঘুরেছে। সামনে রথযাত্রা উৎসব। মাহেশকে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার কাজ কবে শুরু হবে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করলেন এলাকাবাসী।

মাহেশকে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ার দাবি দীর্ঘদিনের। স্থানীয় বিধায়ক সুদীপ্ত রায়ের প্রস্তাবে ২০১৫ সালে রাজ্য সরকার ওই প্রকল্প অনুমোদন করে। কিন্তু কাজ এগোয়নি। গত বছরের পয়লা জুন তারকেশ্বরে প্রশাসনিক বৈঠকে শ্রীরামপুরের পুরপ্রধান বিষয়টি উত্থাপন করতেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সবুজ সঙ্কেত দেন। ঘোষণার সুরে তিনি বলেন, ‘‘মাহেশে পর্যটন কেন্দ্র গড়তে হবে। এটা আমার প্রকল্প। উই হ্যাভ টু ডু ইট।’’ কয়েক দিন পরে ১৭ জুন, রথযাত্রার এক সপ্তাহ আগে মাহেশে ঘুরে যান পর্যটন দফতরের প্রতিমন্ত্রী তথা এই জেলারই বিধায়ক ইন্দ্রনীল সেন। কোথায় কী করা হবে, সে বিষয়ে কথা বলেন পুরসভা এবং মন্দির কর্তৃপক্ষের সঙ্গে।

মন্ত্রী সে দিন এক বছরের মধ্যেই পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজের আশ্বাস দিয়েছিলেন। প্রস্তাবিত প্রকল্প অনুযায়ী, জগন্নাথ মন্দির এবং ‘মাসির বাড়ি’র মন্দিরের প্রবেশদ্বার সংস্কার করা হবে। স্নানপিঁড়ি এবং মাসির বাড়ির মাঠ সাজানো হবে। আধুনিক মানের অতিথিশালা করা হবে। মন্দির চত্বর এবং রাস্তাঘাট আলোয় সাজানো হবে। গাছ লাগানো হবে। পানীয় জল, শৌচাগার করা হবে। জগন্নাথ ঘাটেরও সৌন্দর্যায়ন‌ করা হবে। গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গা করার প্রস্তাবও রয়েছে। দু’টি তোরণ করার কথাও বলা হয়। প্রকল্পের খরচ ধরা হয় ১০ কোটি টাকা।

এ বার রথযাত্রার আগে কাজ শেষের কথা থাকলেও একটি ইটও পড়েনি। রথটিও সারা বছর জি টি রোডের ধারে অযত্নে পড়ে থাকে। কাজ না-হওয়ায় আশাহত মাহেশ তথা শ্রীরামপুরের সাধারণ মানুষ। মাহেশের বাসিন্দা তরুণকুমার দাস বলেন, ‘‘দীর্ঘদিন পর্যটন কেন্দ্রের কথা শুনেছি। গত বছর তোড়জোড় দেখে আশান্বিত হয়েছিলাম। এখন কোথায় কী!’’ নরেন ঘটক নামে শহরের আর এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘পরিকাঠামো না-থাকায় মাহেশে তীর্থযাত্রীর সংখ্যা কমছে। তাঁদের ন্যূনতম স্বাচ্ছন্দ্যটুকু নেই। গত বছর ঘোষণার পরে ভেবেছিলাম কাজ হবে। এখনও কিছুই হল না।’’

জগন্নাথ মন্দিরের প্রধান সেবাইত সৌমেন অধিকারী অবশ্য বলেন, ‘‘কোনও কারণে দেরি হচ্ছে ঠিকই। তবে ঘোষণাটা মুখ্যমন্ত্রী করেছিলেন বলেই আমরা আশাবাদী, কাজ হবে।’’ একই বক্তব্য মন্দিরের ম্যানেজিং সেবাইত তথা শ্রীরামপুর পুরসভার কাউন্সিলর অসীম পণ্ডিতেরও। পুরপ্রধান অমিয় মুখোপাধ্যায় অবশ্য বলেন, ‘‘কয়েকটা বৈঠক হয়েছে। এক বার তোরণের জন্য মাটি পরীক্ষা হয়েছে। কবে কাজে হাত পড়বে, তা নিয়ে আমাদের কাছে কোনও খবর নেই। মুশকিল হল সাধারণ মানুষের কাছে আমাদের জবাবদিহি করতে হচ্ছে। দ্রুত কাজের জন্য ফের প্রশাসনকে বলব।’’

জেলাশাসক সঞ্জয় বনশল অবশ্য বলেন, ‘‘কাজটা পূর্ত দফতর করবে। টেন্ডার প্রক্রিয়া হয়ে গিয়েছে। রথযাত্রা মিটলেই কাজ শুরু হয়ে যাবে বলে আশা করছি।’’

মাহেশের রথযাত্রা এ বার ৬২২ বছরে পড়ল। বঙ্কিমচন্দ্রের ‘রাধারাণী’ গল্পে এখানকার রথযাত্রার উল্লেখ রয়েছে। চৈতন্যদেব স্বয়ং এখানকার রথে এসেছিলেন। ঐতিহ্যের মুকুটে আরও বহু পালক রয়েছে। আগামী ২৮ জুন স্নানযাত্রা উৎসব। ১৪ জুলাই রথযাত্রা। তার পরে কবে পর্যটন কেন্দ্রের কাজ শুরু হয়, সেটাই দেখার।

Tourist center Mahesh Rath yatra
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy