Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

বন্দুক ধরে লুঠ শেওড়াফুলিতে

রাত পর্যন্ত দুষ্কৃতীদের কেউ ধরা পড়েনি। লুঠ হওয়া জিনিসপত্রও উদ্ধার হয়নি। পুলিশ জানিয়েছে, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিন জনকে আটক করা হয়েছে। দোষীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

এখানেই ব্যবসায়ীর উপর হামলা হয়। নিজস্ব চিত্র

এখানেই ব্যবসায়ীর উপর হামলা হয়। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেওড়াফুলি শেষ আপডেট: ১৭ অক্টোবর ২০১৭ ০১:৫৩
Share: Save:

দু’হাত দূরে জিটি রোড, পুরভব‌ন। পাশেই শেওড়াফুলি জংশন স্টেশন, আরপিএফ ব্যারাক, জিআরপি থানা, হাট। ঢিল ছোড়া দূরত্বে পুলিশ ফাঁড়ি। আর এমন এলাকায় মোটরবাইক আটকে, রিভলভার দিয়ে মাথা ফাটিয়ে ব্যবসায়ীর গয়না ও টাকা ভর্তি ব্যাগ ছিনিয়ে চম্পট দিল দুষ্কৃতীরা। রাতদুপুর নয়, বেপরোয়া দুষ্কৃতীদের এমন হামলা চলল সোমবার ভরদুপুরে।

রাত পর্যন্ত দুষ্কৃতীদের কেউ ধরা পড়েনি। লুঠ হওয়া জিনিসপত্রও উদ্ধার হয়নি। পুলিশ জানিয়েছে, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিন জনকে আটক করা হয়েছে। দোষীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, আক্রান্ত শুভাশিস অধিকারীর বাড়ি শেওড়াফুলি ডাকঘরের কাছে। নিস্তারিনী কালীবাড়িতে তাঁর শাঁখার দোকান। শাখায় সোনা বাঁধানোর কাজও করেন তিনি। এ দিন বেলা সওয়া দু’টো নাগাদ দোকান বন্ধ করে দোকানের কর্মচারী জয় শিটের সঙ্গে বাইক চেপে তিনি বাড়ি ফিরছিলেন। শুভাশিস পিছনে বসেছিলেন।

অভিযোগ, ছাতুগঞ্জ হয়ে জিটি রোডে ওঠার জন্য গলাপোলের সামনে আসতেই তিন দুষ্কৃতী তাঁদের ধাক্কা মেরে ফেলে দেয়। এর পরে দুষ্কৃতীরা তাঁদের মাথায় রিভলভার ঠেকায়। জয়ের মাথায় রিভলভারের বাঁট দিয়ে মারে। তাঁর মাথা ফেটে যায়। তাঁদের কাছে থাকা ব্যাগ নিয়ে মোটরবাইকে চেপে জিটি রোড ধরে নওগাঁর মোড়ের দিকে পালায় দুষ্কৃতীরা।

শুভাশিসই পুলিশে খবর দেন। শেওড়াফুলি ফাঁড়ির ইন-চার্জ শুভাশিস দাস ঘটনাস্থলে আসেন। কিন্তু দুষ্কৃতীরা ততক্ষণে পগার পার। আক্রান্ত ব্যবসায়ী জানান, অন্য দোকানের প্রায় ২০ গ্রাম সোনা-সহ কয়েকটি শাখা এবং নগদ কয়েক হাজার টাকা ছিল ব্যাগে। তাঁর কথায়, ‘‘প্রায় সাতাশ বছর ওখানে ব্যবসা করছি। রোজ এই পথ দিয়ে যাতায়াত করি। কোনও দিন কিছু হয়নি। কিন্তু আজ যা হল, হাড় হিম হয়ে গিয়েছিল।’’ তদন্তকারীদের অনুমান, ভুল করে ওই ব্যবসায়ীকে ‘টার্গেট’ করেছিল দুষ্কৃতীরা। তাঁর ব্যাগে বেশি সোনা বা টাকা ছিল না।

গোটা ঘটনায় সাধারণ মানুষ আতঙ্কিত। তাদের বক্তব্য, দুষ্কর্মে লাগাম পরাতে হুগলির শহরাঞ্চলের পুলিশি ব্যবস্থা সাজানো হল। গঠন করা হল কমিশনারেট। দুষ্কর্ম বাগে আনার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন চন্দননগর কমিশনারেটের আধিকারিকরাও। অথচ দুষ্কর্মের বিরাম নেই। শুধু তাই নয়, সম্প্রতি নানা ঘটনা ঘটেছে দিনের আলোয়। গত ১২ তারিখ দুপুরে নবগ্রাম হিরালাল পাল কলেজের সামনেই প্রকাশ্য রাস্তায় এক ইমারতি ব্যবসায়ীকে গুলি করে মারে দুষ্কৃতীরা। ওই ঘটনায় কাউকে ধরতে পারেনি পুলিশ। গত ৩০ সেপ্টেম্বর, দশমীর ভোরে শ্রীরামপুরের মানিকতলায় একটি নার্সিংহোমে আইসিইউ-তে ঢুকে রিভলভার উঁচিয়ে নার্স এবং হাসপাতাল কর্মীদের শাসানি দেয় দুষ্কৃতীরা। তার সঙ্গে যোগ হল এ দিনের ঘটনা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE