Advertisement
E-Paper

সিঙ্গুরে ট্রমা কেয়ার সেন্টার আজও স্বপ্নই থেকে গিয়েছে

প্রস্তাবিত প্রকল্পের শিলা এখন এলাকার মানুষের ঘুঁটে লেপার জায়গা।পাঁচ বছর আগে রাজ্যের ক্ষমতা বদলের সময় সিঙ্গুরেকে ঘিরে উন্নয়ন আর পরিষেবার একাধিক স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এর অন্যতম ছিল দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ে লাগোয়া ট্রমা কেয়ার সেন্টার।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ এপ্রিল ২০১৬ ০১:১৪
যেখানে ট্রমা কেয়ার সেন্টার তৈরির কথা।

যেখানে ট্রমা কেয়ার সেন্টার তৈরির কথা।

প্রস্তাবিত প্রকল্পের শিলা এখন এলাকার মানুষের ঘুঁটে লেপার জায়গা।

পাঁচ বছর আগে রাজ্যের ক্ষমতা বদলের সময় সিঙ্গুরেকে ঘিরে উন্নয়ন আর পরিষেবার একাধিক স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এর অন্যতম ছিল দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ে লাগোয়া ট্রমা কেয়ার সেন্টার। তিন বছর আগে সিঙ্গুরের জলাঘাটা ও মল্লিকপুরে প্রস্তাবিত ওই হাসপাতালের ঘটা করে শিলান্যাস অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন রাজ্যের একাধিক মন্ত্রী। সেখানেই প্রতিশ্রুতি ছিল, দ্রুত কাজ শেষ হবে। কিন্তু কথা রাখেনি মমতা-সরকার। পঞ্চায়েত, লোকসভা ঘুরে বিধানসভার ভোট এসে গিয়েছে। একটা ইটও গাঁথা হয়নি ওই প্রকল্পে।

২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে হুগলিতে এসে ওই প্রকল্পের ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পরেই ট্রমা কেয়ার সেন্টারের জন্য জমি চিহ্নিত করার কাজ শুরু হয়ে যায়। দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের ধারে জমি বাছা হয়। ওই বছরেই ১৩ মার্চ হই হই করে প্রকল্পের শিলান্যাস করেন মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। স্থানীয় বিধায়ক তথা মন্ত্রী (এ বারও তৃণমূলের প্রার্থী) সিঙ্গুরের ‘মাস্টারমশাই’ রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য থেকে বেচারাম মান্না কে না ছিলেন শিলান্যাস অনুষ্ঠানে!

দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়েতে প্রচুর দুর্ঘটনা ঘটে। কিন্তু বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে এক্সপ্রেসওয়ের ধারেকাছে ভাল মানের হাসপাতাল নেই। আবার গ্রামীণ হাসপাতাল থাকলেও সেগুলিতে রক্ত দেওয়ার বন্দোবস্ত নেই। অন্য পরিকাঠামোর হালও তথৈবচ। ফলে দুর্ঘটনায় আহতকে ভাল হাসপাতালে নিয়ে যেতে যেতেই অনেকটা সময় গড়িয়ে যায়। যার ফলে স্রেফ সময়ের অভাবেই অনেক ক্ষেত্রে অঘটন রোখা যায় না বলে অভিযোগ।

রাজ্য সরকারের তরফে জানানো হয়েছিল, মূলত ওই সমস্যার সুরাহার লক্ষ্যেই ট্রমা কেয়ার সেন্টার তৈরির পরিকল্পনা করা হয়। যাতে দুর্ঘটনায় আহতদের দ্রুত চিকিৎসা শুরু করা যায়। প্রয়োজনে দ্রুত রক্ত দেওয়ার ব্যবস্থা করা যায়। প্রস্তাবিত ট্রমা কেয়ার সেন্টারের জন্য ৩ কোটি ৮৭ লক্ষ টাকা প্রাথমিক ভাবে বরাদ্দ হয়েছে জানিয়ে দ্রুত কাজ শুরু হবে বলে রাজ্য সরকার ঘোষণা করেছিল। শুধু তাই নয়, পর্যায়ক্রমে মোট ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হবে বলেও ঘোষণা করেছিল রাজ্য। এখন পর্যন্ত সরকারের সেই ঘোষণা ঘোষণাই থেকে গিয়েছে। ট্রমা সেন্টার আর জন্ম নেয়নি। তার জন্য নির্দিষ্ট জায়গায় এখন গরু-ছাগল চরে বেড়ায়। সম্প্রতি সেখানে গিয়ে দেখা গেল, প্রকল্পের শিলান্যাসের ফলকের অর্ধাংশে ঘুঁটে লেপার চিহ্ন।

সিঙ্গুরবাসী অবশ্য বলছেন, ‘রাজনৈতিক চমক’ তাঁদের গা সওয়া হয়ে গিয়েছে। গালভরা পরিকল্পনার কথা তাঁরা অনেক শুনেছেন। অভিজ্ঞতা থেকে বুঝেছেন না আঁচালে কোনও কিছুতেই বিশ্বাস নেই। স্থানীয় বিদায়ী বিধায়ক ও মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথবাবুর প্রতিক্রিয়া, ‘‘ওই প্রকল্পের কাজ যে এগোয়নি তা বাস্তব। তবে কেন হয়নি, তা বলতে পারব না।’’

নিজের এলাকার কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে বিদায়ী বিধায়কই যখন ওয়াকিবহাল নন, সেখানে প্রকল্পের ভবিষ্যৎ কী তা সহজেই অনুমান করতে পারছেন সিঙ্গুরের মানুষ।

singur trauma care center
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy