অবরুদ্ধ: ট্রাক উল্টে দুর্ঘটনার পর যানজটে থমকে রাস্তা।
প্রথমে একটি দুর্ঘটনাগ্রস্ত ট্রাকের কারণে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল যান চলাচল। তার পরে সেই ট্রাক সরাতে পুলিশ উদ্যোগী হয়নি, এই অভিযোগে ট্রাক-চালকদের অবরোধ।
এই জোড়া কারণে মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার দুপুর পর্যন্ত প্রায় ১৬ ঘণ্টা ধরে অবরুদ্ধ হয়ে রইল হরিপালের অহল্যাবাঈ রোড। ভ্যাপসা গরমে নাজেহাল হলেন বহু যাত্রী ও গাড়ি-চালকেরা। অবরোধের জেরে একদিকে গজার মোড়, শিয়াখালা হয়ে চাঁপাডাঙা এবং উল্টোদিকে কলাছড়া পর্যন্ত অন্তত দশ কিলোমিটার এলাকায় যান চলাচল থমকে যায়। শেষমেশ বুধবার দুপুরে পুলিশ একটি বড় ক্রেন এনে দুর্ঘটনাগ্রস্ত ট্রাকটিকে সরালে পরিস্থিতির উন্নতি হয়।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ট্রাকটি দুর্ঘটনায় পড়ার পরেই হরিপাল থানার পুলিশকে বারবার ফোন করা হয়। কিন্তু পুলিশ আসেনি। এর জেরে রাস্তার দু’দিকে কয়েকশো ট্রাক ও বড় গাড়ি সার দিয়ে দাঁড়িয়ে যায়। এসডিপিও (চন্দননগর) রানা মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ওই রাস্তাটি নতুন ভাবে তৈরি হচ্ছে। ফলে, গাড়ি চলাচলের ক্ষেত্রে সমস্যা হচ্ছে। তার উপর দুর্ঘটনার জেরে পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হয়। পুলিশের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে, সে ব্যাপারে খোঁজ নেব। অভিযোগের সারবত্তা থাকলে গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে।’’
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার রাতে ডানকুনি থেকে বাঁকুড়ার উদ্দেশে লোহার রড বোঝাই ট্রাকটি রওনা হয়। দশটার কিছু পরে হরিপালের ডাকাতিয়া খালের কাছে অহল্যাবাঈ রোডে একটি নতুন সেতুতে ট্রাকটি ধাক্কা মেরে আড়াআড়ি ভাবে দাঁড়িয়ে যায়। ফলে, ওই পথে বড় গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। রাস্তার ধার দিয়ে কোনওক্রমে ঝুঁকি নিয়ে ছোট গাড়ি যাতায়াত করতে থাকে। কিন্তু ঘণ্টার পর ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও পুলিশের দেখা মেলেনি। রাতভর তীব্র গরমে শ’য়ে শ’য়ে ট্রাক ও দূরপাল্লার বাস রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকে। ক্ষিপ্ত ট্রাক-চালকেরা পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে বুধবার সকাল থেকে ওই রাস্তায় ডাকাতিয়া খালের কাছে অবরোধ শুরু করেন। তাতে পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হয়ে ওঠে। স্থানীয় রুটের এবং বর্ধমান, মেদিনীপুর বা বাঁকুড়াগামী দূরপাল্লার বাসও আটকে যায়। কিছু বাস কোনওক্রমে ঘুরপথে অন্য রাস্তা দিয়ে যায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, অহল্যাবাঈ রোড এখন সম্প্রসারণের কাজ চলছে। তার ফলে পুরনো রাস্তা দিয়ে নতুন রাস্তায় ওঠার সময়ই লোহা বোঝাই ট্রাকটি দুর্ঘটনায় পড়ে।
মঙ্গলবার রাতে নিউটাউন থেকে বাঁকুড়ায় বালি আনতে যাচ্ছিলেন ট্রাক চালক শিবপ্রসাদ যাদব। তিনি বলেন, ‘‘আমি এই পথে প্রায়ই যাই। অন্য দিন পুলিশ থাকে। ট্রাক থেকে টাকা তুলতে দেখি। কিন্তু এই গরমে আমরা যখন বিপদে পড়লাম, পুলিশ এক বারের জন্যও এল না।’’
এক যাত্রীর ক্ষোভ, ‘‘আশপাশে কোনও হোটেল ছিল না। রাতভর কিছু খেতে পাইনি। কেউ দেখার ছিল না। অন্যদেরও একই অবস্থা হয়েছিল। এমন দুর্ভোগে কখনও পড়িনি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy