Advertisement
E-Paper

শিশুকে পিষল ট্রাক, অবরোধ

মৃতের নাম রুদ্রনীল সাহা। তার বাড়ি বৈদ্যবাটির পদ্মাবতী কলোনিতে। শিশুটি বৈদ্যবাটি-চৌমাথার কাছে একটি বেসরকারি স্কুলের শিশু শ্রেণিতে পড়ত। তাদের বাড়ির পাশে বৈদ্যবাটি-তারকেশ্বর রোড।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ ডিসেম্বর ২০১৭ ০১:৫২
শোকার্ত: কান্নায় ভেঙে পড়েছে মৃত শিশুটির বাবা-মা। মৃত রুদ্রনীল সাহা (ইনসেটে)

শোকার্ত: কান্নায় ভেঙে পড়েছে মৃত শিশুটির বাবা-মা। মৃত রুদ্রনীল সাহা (ইনসেটে)

মায়ের হাত ধরে স্কুলে যাওয়ার পথে ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়ে মৃত্যু হল পাঁচ বছরের একটি শিশুর। বৃহস্পতিবার সকালে এই দুর্ঘটনাকে ঘিরে তেতে ওঠে বৈদ্যবাটির দিল্লি রোডের নেতাজি মোড় লাগোয়া এলাকা। ওই জায়গায় সাবওয়ে নির্মাণ এবং দিনভর ট্রাফিক পুলিশ মোতায়েনের দাবিতে দফায় দফায় অবরোধ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। পুলিশ অবরোধকারীদের সঙ্গে আলোচনার পরে অবরোধ ওঠে।

মৃতের নাম রুদ্রনীল সাহা। তার বাড়ি বৈদ্যবাটির পদ্মাবতী কলোনিতে। শিশুটি বৈদ্যবাটি-চৌমাথার কাছে একটি বেসরকারি স্কুলের শিশু শ্রেণিতে পড়ত। তাদের বাড়ির পাশে বৈদ্যবাটি-তারকেশ্বর রোড। সাধারণত ওই রাস্তা দিয়ে মায়ের সঙ্গে হেঁটে দিল্লি রোডে গিয়ে সেখান থেকে অটো বা টোটোতে সে স্কুলে যেত। এ দিন সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ রুদ্রনীলকে স্কুলে পৌঁছে দিতে যাচ্ছিলেন মা কাকলি সাহা।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, নেতাজি মোড়ের কাছে পিছন থেকে একটি ট্রাক এসে কাকলিদেবীকে ধাক্কা মারলে তিনি ছিটকে পড়েন। শিশুটি মায়ের বাঁ দিকে ছিল। কিন্তু দুর্ঘটনার সময় সে কোনও ভাবে রাস্তায় চলে আসে। ট্রাকটির চাকা ছেলেটির পেটের উপর দিয়ে চলে যায়। ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। পুলিশ দেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শ্রীরামপুর ওয়ালশ হাসপাতালে পাঠায়।

দুর্ঘটনার খবর চাউর হতেই কয়েকশো লোক জড়ো হয়ে যান। রাস্তা অবরোধ হয়। শিখা দাস নামে স্থানীয় এক মহিলাও নিজের মেয়েকে নিয়ে কাকলিদেবীর সঙ্গেই স্কুলে যাচ্ছিলেন। শিখাদেবীর কথায়, ‘‘আমরা রোজ একসঙ্গেই বাচ্চাদের স্কুলে নিয়ে যাই। কাকলি আমার থেকে হাত দশেক এগিয়ে ছিল। ট্রাকটি ওদের গায়ের উপর চলে এল। চোখের সামনে বাচ্চাটা পিষে গেল।’’

দুর্ঘটনার পর পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ

অবরোধের জেরে বৈদ্যবাটি-তারকেশ্বর রোড এবং দিল্লি রোড— দুই সড়কেই সার দিয়ে গাড়ি দাঁড়িয়ে যায়। শ্রীরামপুর থানার আইসি নন্দদুলাল ঘোষ, শেওড়াফুলি ফাঁড়ির ইনচার্জ শুভাশিস দাস ঘটনাস্থলে আসেন। পরে রিষড়া থানার ওসি প্রবীর দত্তকে নিয়ে চন্দননগর কমিশনারেটের এসিপি কামনাশিস সেন পৌঁছন।

টুম্পা দাস, নমিতা ভৌমিকের মতো কয়েকজন বিক্ষোভকারীর অভিযোগ, সিভিক ভলান্টিয়াররা নিজেদের ‘ডিউটি’ ঠিক ভাবে করেন না। তাঁরা আড্ডা দিয়ে সময় কাটান। ট্রাক-চালকদের থেকে ‘সুবিধা’ নেন। মেয়েদের কটুক্তির অভিযোগও ওঠে। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত শহরে ঢোকা নিষেধ থাকায় বৈদ্যবাটি-তারকেশ্বর রোডের ধারে অনেক ট্রাক দাঁড়িয়ে থাকে। পুলিশ টাকা নিয়ে কিছু ট্রাক ছাড়ে বলেও অভিযোগ তোলেন তাঁরা। বিক্ষোভকারীদের অনেকের হাতে ছিল ঝাঁটা-লাঠি। এক সিভিক ভলান্টিয়ারকে তাড়া করতেও দেখা যায় মহিলাদের।

পুলিশ সূত্রের দাবি, সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছে, ট্রাকটি যথেষ্ট ধীরগতিতে আসছিল। ট্রাকটিকে আটক ও চালককে গ্রেফতার করা হয়েছে। সিভিক ভলান্টিয়ারদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ পুলিশকর্তারা মানেননি। তাঁদের দাবি, শুধু শেওড়াফুলি হাট বা বিভিন্ন চটকলের গাড়িই সকালে ছাড়া হয়। টাকা নিয়ে গাড়ি ছাড়ার প্রশ্নই নেই। এক পুলিশ অফিসারের বক্তব্য, ‘‘প্রয়োজনের তুলনায় পুলিশকর্মী অপ্রতুল। সেই কারণেই সব জায়গায় ট্রাফিক পুলিশ মোতায়েন করা সম্ভব হয় না। তবে, বিষয়টি পর্যালোচনা করে সেইমতো ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা করা হবে।’’

নিজস্ব চিত্র

Truck run Over Child death Road Blockade
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy