Advertisement
E-Paper

‘বারণ শুনল না, চিরদিনের মতো চলে গেল’, আক্ষেপ মায়ের

ফেসবুকেও তিনি ‘রেস’-এ ইচ্ছুকদের আমন্ত্রণ জানাতেন। সেই ‘রেস’-ই কাল হল উলুবেড়িয়ার যদুবেড়িয়া গ্রামের ব্যবসায়ী অমিত সিংহ (২৯)।

সুব্রত জানা

শেষ আপডেট: ২৯ অক্টোবর ২০১৮ ০১:২৯
অন্য কোনও রবিবার অমনই সফরে বেরিয়েছিলেন অমিত। ফাইল চিত্র

অন্য কোনও রবিবার অমনই সফরে বেরিয়েছিলেন অমিত। ফাইল চিত্র

গাড়ি-বাইক চালানোর নেশা তাঁর দীর্ঘদিনের।

বাড়িতে দু’টি গাড়ি, দু’টি দামি বাইক। ফি-রবিবার বন্ধুদের সঙ্গে বাইক নিয়ে বেরিয়ে পড়া ছিল তাঁর নেশা। তবে, নিছক বাইক-সফর নয়, তাঁর নেশা ছিল ‘রেস’-এ। এমনকী, ফেসবুকেও তিনি ‘রেস’-এ ইচ্ছুকদের আমন্ত্রণ জানাতেন। সেই ‘রেস’-ই কাল হল উলুবেড়িয়ার যদুবেড়িয়া গ্রামের ব্যবসায়ী অমিত সিংহ (২৯)। রবিবার পাঁশকুড়ার মঙ্গলদাড়িতে ভেড়িবাঁধ এলাকায় দুর্ঘটনায় ছেলের মৃত্যুর কথা জানার পরে মা নিলম সিংহের আক্ষেপ, ‘‘আমি ছেলেকে বারবার বাইকে রেস করতে বারণ করতাম। কিন্তু ও শুনত না। শনিবার রাতেও বোঝাই। ও প্রথমে যাবে না বলেছিল। ভোরে কোনও এক বন্ধুর ফোন আসতেই আমাদের কিছু না বলে বেরিয়ে যায়।’’

অমিতের বাবা অশোক সিংহ বলেন, ‘‘ছেলেকে সাড়ে তিন লক্ষ টাকার ওই বাইক কিনতে না করেছিলাম। ওটা হাইস্পিড বাইক। কিন্তু আমাকে না জানিয়েই ও কেনে। এ দিন ও আমার সঙ্গে ইটভাটায় যাবে বলেছিল। কিন্তু কিছু না জানিয়ে চিরদিনের মতো চলে গেল।’’

আরও পড়ুন: মাত্র পাঁচ ঘণ্টায় সব শেষ! এই প্রথম বার কথা রাখল না মতিউর

অশোকবাবু তিনটি ইটভাটার মালিক। আদতে তিনি বিহারের মজফ্‌ফরপুরের বাসিন্দা। বছর কুড়ি আগে উলুবেড়িয়া যদুরবেড়িয়া মাঝেরহাটিতে জমি কিনে বাড়ি করেন। অমিত তাঁর একমাত্র ছেলে। মেয়ে বিবাহিত। কয়েক মাস আগে অমিতও বিয়ে করেন। স্নাতক হওয়ার পরেই তিনি বাড়িতে টায়ারের শোরুম খোলেন। রবিবার শোরুম বন্ধ থাকে। তাই ছুটির দিনে অমিত বেরিয়ে পড়তেন।

চুরমার: দুর্ঘটনার পর দুমড়ে মুচ়ড়ে যাওয়া মোটরবাইক। নিজস্ব চিত্র

ওই পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার ভোর ছ’টা নাগাদ সাড়ে তিন লক্ষ টাকার বাইক নিয়ে অমিত বের হন। গন্তব্য ছিল পশ্চিম মেদিনীপুরের গনগনি। বাগনান থেকে আত্মীয় সুমিত সিংহ এবং তিন বন্ধু তাঁর সঙ্গে যোগ দেন। কোলাঘাটে জলখাবার সেরে ফের ঝড়ের গতিতে বাইক চালিয়ে ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে রওনা দেয় দলটি।

আরও পড়ুন: নাবালিকা স্ত্রীকে খুনের নালিশ, গ্রেফতার যুবক

পাঁশকুড়ার মঙ্গলদাড়িতে ভেড়িবাঁধ এলাকায় বাইক নিয়ে রাস্তা পেরোচ্ছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা উত্তম সামন্ত। প্রচণ্ড জোরে আসা অমিতের বাইকের সামনে পড়ে যান তিনি। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে অমিতের বাইক সজোরে ধাক্কা মারে উত্তমবাবুর বাইকে। দু’জনেই ছিটকে পড়েন ডিভাইডারের ওপর। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় অমিতের।

কিছুক্ষণের মধ্যেই সেই খবর আসে যদুরবেড়িয়ায়। আর তারপর থেকেই ‘‘বারণ শুনলে ছেলের এই পরিণতি হত না,’’— টানা আক্ষেপ করে যাচ্ছিলেন সিংহ দম্পতি।

Accident Bike Accident Uluberia
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy