Advertisement
E-Paper

ডাক্তার কই, রোগী নাকাল

সকাল সওয়া ১০টা। অর্থোপেডিক বহির্বিভাগের সামনে লম্বা লাইন। ছাউনি না থাকায় অপেক্ষার পালা চলছে রোদ্দুরে, খোলা আকাশের নীচে। গলদঘর্ম হয়ে। যাঁর জন্য অপেক্ষা, সেই চিকিৎসক অবশ্য তখনও আসেননি।

প্রকাশ পাল

শেষ আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০১৭ ০২:৪৪

সকাল সওয়া ১০টা। অর্থোপেডিক বহির্বিভাগের সামনে লম্বা লাইন। ছাউনি না থাকায় অপেক্ষার পালা চলছে রোদ্দুরে, খোলা আকাশের নীচে। গলদঘর্ম হয়ে। যাঁর জন্য অপেক্ষা, সেই চিকিৎসক অবশ্য তখনও আসেননি। প্রতিবন্ধী বিভাগে তালা ঝুলছে। দরজায় বিজ্ঞপ্তি সাঁটা—‘স্টাফের অসুস্থতার জন্য বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে সোম, বুধ ও শুক্রবার বেলা সাড়ে ১২টা থেকে দুপুর ২টো পর্যন্ত বিভাগ খুলবে’। ফিজিশিয়ান বহির্বিভাগ চিকিৎসক শূন্য। বাইরে রোগীরা অপেক্ষায়।

মঙ্গলবারের এই চিত্র শ্রীরামপুর ওয়ালশ হাসপাতালের। যে হাসপাতালকে সুপার স্পেশ্যালিটি স্তরে উন্নীত করার কাজ চলছে, সেখানে পরিষেবা নিয়ে অভিযোগের অন্ত নেই সাধারণ মানুষের। বেশ কয়েক দিন ফিজিশিয়ান ছিল না। কয়েক দিন আগে এক জন যোগ দিয়েছেন। তবে প্রতিদিন ‘ডিউটি’ করা তাঁর পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। ফলে শুধু যে বহির্বিভাগে আসা রোগীরা হয়রান হচ্ছেন তা-ই নয়, সমস্যায় পড়ছেন অন্তর্বিভাগে ভর্তি রোগীরাও। সিঙ্গুরের বড়া হাওয়াখান‌ার বাসিন্দা চম্পা পাত্র চার ঘণ্টার চেষ্টাতেও ডাক্তার দেখাতে পারলেন না। রোগীদের ক্ষোভ, ওই বিভাগের চিকিৎসক যে আসবেন না, সেই তথ্যও জানানো হচ্ছে না।

হাসপাতালে দীর্ঘদিন ধরে চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ নেই। এক অর্থোপেডিক চিকিৎসক নিজের ইচ্ছেমতো হাসপাতালে আসেন বলে অভিযোগ রোগীর আত্মীয়দের। তিনি হাসপাতালে আসেন প্রাইভেট চেম্বার সামলে। আরও অভিযোগ, কিছু চিকিৎসক নিয়মিত নির্দিষ্ট সময়ে ওয়ার্ডে রোগী দেখেন না। রোগীর বাড়ির লোকের সঙ্গে কথা বলেন না। এই অভিযোগ অবশ্য মেনে নিয়েছেন হাসপাতালের এক কর্তা। তিনি বলেন, ‘‘কিছু চিকিৎসক সময়ে আসেন না, এটা ঠিক। বার বার তাঁদের বলা হয়েছে। ফের বলা হবে।’’

শুধু চিকিৎসক নিয়েই নয়, অভিযোগ রয়েছে নার্সদের ব্যবহার নিয়েও। নার্সদের একাংশের অবশ্য বক্তব্য, চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণ বা পরামর্শ সব সময় তাঁদের পক্ষে ভাল ভাবে বোঝানো সম্ভব হয় না। হাসপাতালের সুপার কমলকিশোর সিংহের দাবি, ফিজিশিয়ানের অভাব মিটেছে। তিনি না থাকলে অন্য চিকিৎসকদের দিয়ে সমস্যার সুরাহা করা হচ্ছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, পরিকাঠামোগত নানা সমস্যা নিয়েই ভাল মানের পরিষেবা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ভাল পরিষেবা দেওয়ার কথা বললেও রোগীর অবস্থা একটু জটিল হলেই ‘রেফার’ করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। অনেকে পরিষেবায় অসন্তুষ্ট হয়ে অন্যত্র চলে যান। এমন উদাহরণ অনেক আছে। রোগীদের পরিজনদের অভিযোগ, হাসপাতালে বেশ কিছু দালাল সর্বদা ঘুরপাক খায়। রোগীদের পরীক্ষার জন্য নিয়ে যাওয়া হোক বা অন্য হাসপাতালে, আগ বাড়িয়ে সাহায্যের জন্য হাজির তারা। হাসপাতালের এক কর্তা বলেন, ‘‘কেউ কোনও কোনও নির্দিষ্ট অভিযোগ করলে সত্যাসত্য তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শুভ্রাংশু চক্রবর্তী জানান, বিধানসভা ভোটের আগে সব হাসপাতালে পরিচালন সমিতি ভেঙে দেওয়া হয়েছিল। মাসখানেক আগে রাজ্য সরকারের তরফে বিধায়ক সুদীপ্ত রায়কে ফের ওয়ালশ হাসপাতালের রোগীক‌ল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান পদে মনোনীত করা হয়েছে। শীঘ্রই ওখানে কমিটির বৈঠক হবে। যাবতীয় সমস্যা নিয়ে সেখানে আলোচনা হবে।

Unavailability Doctors
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy