Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

মেয়ের খুনিদের শাস্তি চাই, দাবি বাবার

চুঁচুড়ার সিঙ্গিবাগানে সেই ঘরেই বাবা-মা এবং ভাইয়ের সঙ্গে থাকতেন জয়ন্তী সোরেন। চার সদস্যের পরিবার শুক্রবার রাত থেকে হয়ে গিয়েছে তিন জনের। পরিবারের একমাত্র মেয়ে আর নেই। সে দিন কারখানা থেকে কাজ সেরে বাড়ি ফেরার পথে একটি মিনি ট্রাকের খালাসি জয়ন্তীকে টেনে-হিঁচড়ে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিল বলে অভিযোগ।

জয়ন্তীর দেহ আসার পরে বাড়ির সামনে উপচে পড়া ভিড়। (ডান দিকে) কান্নায় ভেঙে পড়েছেন মা। ছবি: তাপস ঘোষ।

জয়ন্তীর দেহ আসার পরে বাড়ির সামনে উপচে পড়া ভিড়। (ডান দিকে) কান্নায় ভেঙে পড়েছেন মা। ছবি: তাপস ঘোষ।

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়
পোলবা শেষ আপডেট: ২৬ জুন ২০১৬ ০৭:০৯
Share: Save:

চুঁচুড়ার সিঙ্গিবাগানে সেই ঘরেই বাবা-মা এবং ভাইয়ের সঙ্গে থাকতেন জয়ন্তী সোরেন। চার সদস্যের পরিবার শুক্রবার রাত থেকে হয়ে গিয়েছে তিন জনের। পরিবারের একমাত্র মেয়ে আর নেই। সে দিন কারখানা থেকে কাজ সেরে বাড়ি ফেরার পথে একটি মিনি ট্রাকের খালাসি জয়ন্তীকে টেনে-হিঁচড়ে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিল বলে অভিযোগ। বাধা দিয়ে সম্মানহানি থেকে নিজেকে বাঁচাতে জীবন রক্ষা করতে পারেননি জয়ন্তী। ওই ট্রাকের চাকাতেই পিষ্ট হয়ে তাঁর মৃত্যু হয়। এই ঘটনায় ‘খুনি’দের শাস্তি চাইছেন পরিবারের সকলে।

জয়তীদের পরিবারের অবস্থা ভাল নয়। বাবা অসীম দাস এক জনের মাশরুমের বাগান দেখভাল করেন। বড় ছেলে জোগাড়ের কাজ করেন। শনিবার দুপুরে জয়ন্তীদের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল, বাড়ির উঠোনে জড়ো হয়েছেন আশপাশের বাসিন্দারা। মূলত মহিলারা। পাড়ার ছেলেদের একটা দল হাসপাতালে গিয়েছেন। অন্য দল থানায় গিয়েছেন অভিযোগ করতে।

বাড়িটির মালিক রীতা সমাদ্দার বলেন, ‘‘আট বছর ধরে ওঁরা এই এলাকায় থাকলেও আমার বাড়িতে সদ্য এসেছেন। পরিবারটি যথেষ্ট ভাল। জলজ্যান্ত মেয়েটা কাজে গেল। তার পরে আর ফিরল না, এটা ভাবতে পারছি না। অপরাধীদের শাস্তি চাই। পুলিশ ব্যবস্থা নিক।’’

অসীমবাবু কথা বলতে গিয়ে বারবার কেঁদে ফেলছিলেন। তিনি বলেন, ‘‘আর্থিক সামর্থ্য না থাকায় মেয়েকে সপ্তম শ্রেণির পরে আর পড়াতে পারিনি। আমাদের যা ক্ষতি হল তা বোঝাতে পারব না। যারা মেয়েকে খুন করল তাদের শাস্তি চাই।’’ তাঁর স্ত্রী অসুস্থ হয়ে পড়েন।

শুক্রবার রাত ৮টা নাগাদ কামদেবপুরের একটি লজেন্স কারখানা থেকে হেঁটে দিল্লি রোডে অটো ধরতে যাচ্ছিলেন সেখানকার কর্মী জয়ন্তী ও পূজা হাঁসদা। তাঁদের পাশে একটি মিনি ট্রাক গতি কমিয়ে চলে আসে। অভিযোগ, আচমকা ট্রাকটির খালাসি জয়ন্তীর হাত ধরে তাঁকে টেনে গাড়িতে তোলার চেষ্টা করে। বন্ধুকে বাঁচাতে পূজাও জয়ন্তীর অন্য হাত ধরে থাকেন। এই টানাটানিতে দু’জনেই এক সময়ে পড়ে যান। ট্রাকের পিছনের চাকায় পিষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই জয়ন্তী মারা যান। জখম হন পূজা। তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। তার পর থেকেই এই ঘটনাকে ঘিরে সরগরম পোলবা এবং সিঙ্গিবাগান— দুই এলাকাই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Victim Murder
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE