একজোট: জবকার্ডের দাবিতে অনশন। নিজস্ব চিত্র
লকডাউনে ভেঙে পড়া গ্রামীণ অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে ১০০ দিনের কাজ জোর দিচ্ছে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার। ভিন্ রাজ্য থেকে ফিরে আসা শ্রমিকদেরও ওই কাজ দেওয়ার কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু আবেদন করা সত্ত্বেও জবকার্ড মিলছে না, এ অভিযোগ জেলার বেশ কিছু এলাকায় শোনা যাচ্ছে। ধনেখালির বেলমুড়ি পঞ্চায়েতের জয়হরিপুর গ্রামের কিছু মানুষ জবকার্ডের দাবিতে মঙ্গলবার থেকে রিলে অনশন শুরু করেছেন।
আবার জবকার্ড থাকা সত্ত্বেও কাজ মিলছে না, এই অভিযোগও উঠছে।
এর আগে একই দাবিতে গত মাসে ওই গ্রামবাসীরা বিডিও এবং পঞ্চায়েত প্রধানকে স্মারকলিপি দিয়েছিলেন। বুধবার অনশনে বসা মিলন রায় এবং চিরঞ্জিৎ রায়ের ক্ষোভ, ‘‘ব্লক প্রশাসন এবং পঞ্চায়েতকে বার বার অনুরোধ করেও সুরাহা হয়নি। অথচ, ব্লকের অন্য এলাকায় কাজ হচ্ছে। যতদিন না জবকার্ড পাব, অনশন চালিয়ে যাব। লকডাউন এবং আমপানে আমরা নিঃস্ব হয়ে গিয়েছি। খেতে পাচ্ছি না। প্রশাসনের এরপরেও যদি টনক না নড়ে, পরিবার নিয়ে আত্মহত্যা করা ছাড়া উপায় থাকবে না।’’
প্রধান নিতাই দাসের সঙ্গে চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি। বিডিও দীনেশ মিশ্র বলেন, ‘‘জয়হরিপুরের কিছু মানুষের অনশনে বসার কথা কানে এসেছে। আমি পঞ্চায়েত প্রধানের থেকে রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছি। দেখতে হবে, ওইসব পরিবারের কারও জবকার্ড আছে কিনা। ওখানে না হলে অনশনকারীদের বাড়ির পাঁচ কিলোমিটারের মধ্যে অন্যত্র কাজ দেওয়ার সুযোগ আছে।’’
জয়হরিপুরের এই আন্দোলন নিয়ে রাজনৈতিক চাপান-উতোরও শুরু হয়েছে। নতুন জবকার্ড নিয়ে শাসকদলের একাংশ ভুয়ো মাস্টাররোল তৈরি করে টাকা তুলে নিচ্ছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন সিপিআই (এমএল) লিবারেশন নেতা সজল অধিকারী। তিনি বলেন, ‘‘ধনেখালি ব্লকে ৭৭ হাজার জবকার্ড আছে। প্রশাসনের কর্তারাই বলছেন, এখন কমবেশি মাত্র ৪৫ হাজার মানুষ কাজ করেন। তা হলে বাকি ৩২ হাজার কার্ড কেন নতুন আবেদনকারীদের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে না? জয়হরিপুরের বাসিন্দারা বারবার আন্দোলনে নামছেন বলেই রাজনীতি করে তাঁদের ভাতে মারা হচ্ছে।’’
অভিযোগ মানেননি ধনেখালির বিধায়ক অসীমা পাত্র। তিনি বলেন, ‘‘বিধি অনুযায়ী পরিবারপিছু একটি করে জবকার্ড পাওয়ার কথা। দেখতে হবে, অনশনকারীদের পরিবারের অন্য কারও কার্ড আছে কিনা। ওই গ্রামের পরিবারগুলিকে ইন্ধন জোগানো হচ্ছে।’’
তবে, শুধু জয়হরিপুর নয়, জবকার্ড না-হওয়ায় গ্রামবাসীদের ক্ষোভের কথা শোনা যাচ্ছে পোলবা-দাদপুর, বলাগড় এবং পান্ডুয়া ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকা থেকেও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy