বিভিন্ন দফতরের তথ্যপ্রযুক্তি কর্মীদের সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে রাজ্য সরকার। তার মধ্যে রয়েছেন নিয়োগ সংস্থা থেকে নেওয়া চুক্তিভিত্তিক তথ্যপ্রযুক্তি কর্মীরাও। কিন্তু পঞ্চায়েত স্তরে কাজ করা পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের কয়েক হাজার তথ্যপ্রযুক্তি কর্মীর (ভিলেজ লেভেল এন্টারপ্রেনর বা ভিএলই) কী হবে?
ওই কর্মীদের অভিযোগ, তাঁদের ওই সুযোগ-সুবিধার আওতায় আনা হয়নি। তাঁদের ক্ষোভ বাড়ছে। গত শুক্রবার তাঁরা রাজ্যের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করে তাঁদের জন্যেও বাড়তি সুযোগ-সুবিধার দাবি জানান।
ভিএলই কর্মী সংগঠনের সম্পাদক অপূর্ব প্রধান বলেন, ‘‘বছরের পর বছর ধরে আমরা কম বেতনে কাজ করছি। কাজের পাহাড় আমাদের উপরে। কতদিন আমরা কাজ করব তার কোনও নিশ্চয়তা নেই। অথচ যখন স্থায়ীকরণের একটা সুযোগ এল, তখন আমরা বাদ পড়লাম।’’ মন্ত্রী সুব্রতবাবু বলেন, ‘‘আমি সোমবার দফতরের প্রধান সচিবের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করব।’’
গত ১৬ অক্টোবর এক নির্দেশিকায় সরকার জানিয়ে দেয়, বিভিন্ন নিয়োগকারী সংস্থার মাধ্যমে এবং সরকারের বিভিন্ন সংস্থা বিভিন্ন সময়ে চুক্তির ভিত্তিতে যে সব তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী নিয়োগ করেছে, তাঁদের বেতন এ বার থেকে সরাসরি অর্থ দফতরের মাধ্যমে দেওয়া হবে। এতদিন ওই কর্মীরা বেতন পেতেন নিয়োগকারী সংস্থা থেকেই। চুক্তিভিত্তিক ওই কর্মীরা কতদিন কাজ করবেন, তারও কোনও সময়সীমা ছিল না। নতুন নির্দেশিকায় বলে দেওয়া হয়, তাঁরা ৬০ বছর বয়স পর্যন্ত কাজ করতে পারবেন। অবসরের সময়ে তাঁদের ৩ লক্ষ টাকা করে এককালীন দেওয়া হবে।
এরপরে ২৩ নভেম্বর আরও একটি নির্দেশিকা জারি করে সরকার বিভিন্ন দফতরের কর্তাদের কাছে জানতে চায়, তাঁদের দফতরে কতজন করে তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী আছেন। তাঁদের বিস্তারিত বিবরণও পাঠাতে বলা হয়। সেইমত পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের কাছেও এই দফতরের চুক্তিভিত্তিক তথ্যপ্রযুক্তি কর্মীদের তালিকা চাওয়া হয়। কিন্তু এই দফতরে কাজ করা প্রায় সাড়ে তিন হাজার তথ্যপ্রযুক্তি কর্মীর অভিযোগ, তাঁদের নাম দফতর থেকে রাজ্য সরকারের কাছে পাঠানো হয়নি।
পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর সূত্রের খবর, ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত ‘জেলা প্রোগ্রাম ম্যানেজার’, ‘অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রোগ্রাম ম্যানেজার’ এবং ‘ব্লক কম্পিউটার অ্যাসিস্ট্যান্ট’ এই তিনটি পর্যায়ের কর্মীর নাম সরকারের কাছে পাঠানো হয়েছে। যাঁদের নাম পাঠানো হয়নি, তাঁরা কাজ করেন পঞ্চায়েত স্তরে। তাঁরা হলেন ‘ভিলেজ লেভেল এন্টারপ্রেনর’ (ভিএলই)।
রাজ্যের সাড়ে তিন হাজার পঞ্চায়েতের প্রতিটিতে একজন করে ভিএলই আছেন। তাঁদের বক্তব্য, ১০০ দিনের কাজের খতিয়ান কম্পিউটারে তোলা থেকে শুরু করে ‘ডেটা এন্ট্রি’—সব কাজই তাঁরা করেন। তাঁরা জানান, ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী হিসেবেই তাঁদের ২০০৮ সালে নিয়োগ করেছিল পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর।