Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

প্লাস্টিকে বন্ধ নালা, এ বারও ডুবেছে ডানকুনি

উপ-পুরপ্রধান দেবাশিস মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ডানকুনি পুর এলাকার জমা জল সার্বিক ভাবে নিকাশির জন্য আমাদের একটি পাম্পিং স্টেশন তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে। সেটি হলে বর্তমান সমস্যার অনেকটাই সুরাহা হবে।’’

—ফাইল চিত্র

—ফাইল চিত্র

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায় ও দীপঙ্কর দে
ডানকুনি শেষ আপডেট: ১৯ অগস্ট ২০১৯ ০৩:৪০
Share: Save:

নালার মুখ ভরেছে প্লাস্টিক-থার্মোকলে। সংস্কার নেই নিকাশি খালের। জমা জল যাবে কোথায়?

যথারীতি এই বর্ষাতেও জলমগ্ন হয়েছে ডানকুনির অন্তত পাঁচটি ওয়ার্ডের বেশ কিছু এলাকা। নাভিশ্বাস উঠছে বাসিন্দাদের। বহু বাড়িতে জল ঢুকে গিয়েছে। তা বেরনোর পথ পাচ্ছে না। লোকজন ঘরে ইট পেতে যাতায়াত করছেন। এ বারও জমা জল থেকে পরিত্রাণ পেতে সপ্তাহ গড়িয়ে যাবে বলে মনে করছেন ভুক্তভোগীরা। তিন দিনের টানা বৃষ্টি রবিবার বিকেলের পর ধরেছে। কিন্তু আবার দু’এক দিনের মধ্যে প্রবল বৃষ্টি হলে কী হবে, ভেবে কূল পাচ্ছেন না অনেকেই। তাঁদের অভিযোগ, পুরসভাকে জানিয়েও প্রতিকার মেলে না।

পুর কর্তৃপক্ষের দাবি, নিকাশি সমস্যাকে বাগে আনতে ১ কোটি ৩৪ লক্ষ টাকার একটি প্রকল্প রাজ্য সরকারের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে। পুর এলাকার গোবর খাল সংস্কারের জন্য চার কোটি টাকার আরও একটি ভিন্ন প্রকল্প তৈরি করে সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরে দেওয়া হয়েছে। সেই কাজ হলে সমস্যার সুরাহা হবে।

উপ-পুরপ্রধান দেবাশিস মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ডানকুনি পুর এলাকার জমা জল সার্বিক ভাবে নিকাশির জন্য আমাদের একটি পাম্পিং স্টেশন তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে। সেটি হলে বর্তমান সমস্যার অনেকটাই সুরাহা হবে।’’

শুক্রবার থেকে টানা বৃষ্টিতে ডানকুনি পুরসভার ১৪, ১৫, ২০, ১৮ ও ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের বেশ কিছু এলাকা জলমগ্ন হয়। পরিকল্পনামাফিক নিকাশি ব্যবস্থা গড়ে না-ওঠাতেই এই হাল বলে অভিযোগ। তার উপর শহরে প্লাস্টিক ব্যবহারে লাগাম পরেনি। সেই প্লাস্টিক গিয়ে জমছে নালার মুখে। বন্ধ হচ্ছে জল বেরোর পথ। স্কুল-কলেজ-অফিস যাত্রীদের নোংরা জল পেরিয়েই গন্তব্যে যেতে হচ্ছে। তাঁতিপাড়া, হঠাৎ কলোনি, সূর্য সেন নগর, পূর্বাঞ্চল, দক্ষিণ স্টেশন পল্লি, সারদা পল্লি-সহ বেশ কিছু এলাকায় রবিবার পর্যন্ত রীতিমতো জল দাঁড়িয়ে।

ডানকুনি শিল্পাঞ্চল এবং পুর এলাকার নিকাশি ব্যবস্থা মূলত সরস্বতী নদী, ডানকুনি খাল, গোবর খাল এবং বেলানগর খালের উপরই নির্ভরশীল। কিন্তু সরস্বতী নদীর দীর্ঘদিন সংস্কার হয় না। পুরসভার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে যাওয়া ‘গোবর খাল’-এরও সংস্কার হয় না দীর্ঘদিন। এক সময় ওই খালটির উপরেই নির্ভর করত ডানকুনির নিকাশি ব্যবস্থা। কিন্তু ওই খালের পাশে বেশ কিছু খাটাল এক দশকেরও বেশি সময় ধরে রয়েছে। বাম আমলে কলকাতা থেকে খাটাল উচ্ছেদ হয়। সেই সময় উচ্ছেদ হওয়া খাটাল পাকাপাকি ভাবে ওই খালের পাশে বসে যায়। খাটালের গোবর ওই খালে ফেলা হয়। তার জেরে ওই খালটি সংস্কারের অভাবে পুরোপুরি মজে গিয়েছে। তার জেরেই বৃষ্টির জল পুর এলাকায় জমছে।

তাঁতিপাড়া এলাকার বাসিন্দা প্রদীপ্ত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পুর কর্তৃপক্ষের প্লাস্টিকের বিরুদ্ধে প্রচার রয়েছে। কিন্তু কোনও নজরদারি নেই। ফলে, এখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে।’’ পূর্বাঞ্চল এলাকার বাসিন্দা গোপা চক্রবর্তীর ক্ষোভ, ‘‘৩২ বছর বাস করছি। আগে এত সমস্যা ছিল না। সুষ্ঠু নিকাশি নেই। যে পরিকল্পনাহীন ভাবে লোকালয়ের মধ্যে কারখানা গজিয়ে উঠছে। তার ফলেই জল জমার সমস্যা লাগামছাড়া।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Water Rain Drainage System Plastic Dankuni
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE