Advertisement
E-Paper

কল আছে, মেলে না জল

গ্রামে পাতা রয়েছে জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতরের পরিস্রুত পানীয় জলের পাইপ লাইন। রাস্তার উপর ও পাড়ায় পাড়ায় রয়েছে ট্যাপ কল। তা সত্ত্বেও পানীয় জলের সঙ্কটে ভুগছেন হাওড়ার বাগনান ১ নম্বর ব্লকের বাইনান ও সাবসিট গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দারা।

মনিরুল ইসলাম

শেষ আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০১৬ ০০:৩১
চালিধাউড়িয়ায় ট্যাপকলের এমনই হাল।—নিজস্ব চিত্র।

চালিধাউড়িয়ায় ট্যাপকলের এমনই হাল।—নিজস্ব চিত্র।

গ্রামে পাতা রয়েছে জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতরের পরিস্রুত পানীয় জলের পাইপ লাইন। রাস্তার উপর ও পাড়ায় পাড়ায় রয়েছে ট্যাপ কল। তা সত্ত্বেও পানীয় জলের সঙ্কটে ভুগছেন হাওড়ার বাগনান ১ নম্বর ব্লকের বাইনান ও সাবসিট গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দারা। কারণ, বেশিরভাগ ট্যাপ কল থেকেই জল পড়ে না। যেগুলি থেকে পড়ে সেখানেও জলের চাপ এতটাই কম যে, তা জল না পাওয়ারই সামিল বলে জানিয়েছেন এলাকার মানুষ।

এলাকার মানুষের অভিযোগ, গত পাঁচ-সাত বছর ধরেই এমন অবস্থা চলছে। অথচ হুঁশ নেই জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের। অবস্থা এতটাই খারাপ যে, বর্তমানে তাঁদের ভরসা নলকূপ বা পুকুর। কিন্তু সব জায়গায় নলকূপও আবার ঠিক নেই। অনের পুকুরই শুকনো বা জল খুবই নোংরা। তাই জল নিয়ে রীতিমত সঙ্কটে তাঁরা।

বাগনান ১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ সমীর সামন্ত বলেন, ‘‘নতুন পাম্প হাউসগুলো তৈরি হলে সমস্যা মিটে যাবে। পাম্প হাউসগুলো যাতে দ্রুত হয় তার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’’

প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে বাইনান গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা এবং সাবসিট গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার কিছু অংশে পরিস্রুত পানীয় জল দেওয়ার পরিকল্পনা করেছিল জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতর। সে জন্য বছর পনের আগে পশ্চিম বাইনানে দুটি পাম্প হাউস তৈরি করা হয়। ঠিক হয় ওই পাম্প হাউস থেকেই পূর্ব বাইনান, পশ্চিম বাইনান, খাজুরটি এবং সাবসিটের ব্রাহ্মণগ্রাম, কিসমত ব্রাহ্মণগ্রাম, বাগুর, চালিধাউড়িয়া, মুকুন্দদিঘি-সহ কয়েকটি এলাকায় পরিস্রুত পানীয় জল সরবরাহ করা হবে। জল সরবরাহের জন্য ওই সব এলাকায় পাইপ লাইনও পাতা হয়।

স্থানীয় মানুষের অভিযোগ, বছর পাঁচ-ছয় আগেও তাঁরা ঠিকমতো জল পেতেন। কিন্তু ধীরে ধীরে পূর্ব বাইনানের বিস্তীর্ণ এলাকা এবং সাবসিটের কিসমত ব্রাহ্মণগ্রাম, বাগুর, চালিধাউড়িয়া, মুকুন্দদিঘি এলাকায় জলের পরিমাণ কমতে কমতে পরে একেবারেই বন্ধ হয়ে যায়। বর্তমানে এলাকার লোকেদের একমাত্র ভরসা নলকূপ ও পুকুর। চালিধাউড়িয়া এলাকায় দেখা গেল রাস্তার ধারে ট্যাপকল রয়েছে। কিন্তু তা থেকে জল পড়ে না। চারপাশে আগাছা জন্মে গিয়েছে। ব্রাহ্মণগ্রাম এলাকায় আবার বহু জায়গায় ট্যাপকলের অস্তিত্বই নেই। কোথাও ট্যাপকল ভেঙে গিয়েছে। কোথাও মাটি চাপা পড়েছে। চালিধাউড়িয়া এলাকার বাসিন্দা অপর্ণা জানা বলেন, ‘‘একে তো পুকুরে সবসময় জল থাকে না। তার উপর ট্যাপকলেও জল নেই। বাধ্য হয়ে নলকূপ বসিয়েছি।’’ ব্রাহ্মণগ্রাম এলাকার বাসিন্দাদেরও একই বক্তব্য। এলাকার ট্যাপকলগুলোতে জল তো নেই-ই, নলকূপের সংখ্যাও নামমাত্র। নলকূপ খারাপ হয়ে গেলে সমস্যা আরও বাড়ে বলে জানালেন সেখানকার বাসিন্দারা। তাঁদের প্রশ্ন, ট্যাপকলে জলই যদি না পড়ে তাহলে তা রেখে লাভ কী? একই প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয় কংগ্রেস নেতা সেখ জাইদুল ইসলাম।

জেলা জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতরের এক কর্তা জানান, ওই দুটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় আরও দুটি পাম্প হাউস তৈরির পরিকল্পনা করা হয়েছে। বিষয়টি ঊর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। টাকা মঞ্জুর হলেই কাজ শুরু হবে। কিন্তু বছর পাঁচেকের বেশি ধরে এমন অবস্থা চললেও আরও আগে কেন ব্যবস্থা নেওয়া হল না? এ প্রশ্নের সদুত্তর মেলেনি জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতরের কাছে।

Water crisis
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy