Advertisement
E-Paper

বিকল্প আয়ের সন্ধানে জেলা পরিষদ

ভাঁড়ারে টান পড়তেই পথে নামল হাওড়া জেলা পরিষদ। কেন্দ্রীয় সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২০১৫-১৬ অর্থবর্ষ থেকে চতুর্দশ কেন্দ্রীয় অর্থ কমিশনের টাকা পাবে না জেলা পরিষদ।

নুরুল আবসার

শেষ আপডেট: ০১ জুন ২০১৬ ০২:৪২

ভাঁড়ারে টান পড়তেই পথে নামল হাওড়া জেলা পরিষদ।

কেন্দ্রীয় সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২০১৫-১৬ অর্থবর্ষ থেকে চতুর্দশ কেন্দ্রীয় অর্থ কমিশনের টাকা পাবে না জেলা পরিষদ। কিন্তু দৈনন্দিন কাজের খরচ তো কমছে না বরং দিন দিন বাড়ছে! তাই এ বার নিজেদের তত্ত্বাবধানে থাকা বাণিজ্যিক ভবন, হরিণ প্রকল্প থেকে আয়ের সন্ধানে নামলেন জেলা পরিষদের কর্তারা।

মঙ্গলবার জেলা পরিষদের একটি প্রতিনিধিদল ডোমজুড়, বড়গাছিয়া, তুলসীবেড়িয়ার বাণিজ্যিক ভবনগুলি ঘুরে দেখেন। এই ভবনগুলি থেকে আয় হয় না বললেই চলে। ওই প্রতিনিধি দলের সদস্যেরা শ্যামপুরের গড়চুমুক হরিণ প্রকল্পটি দেখে যান। সেখানে টিকিট বিক্রি অবস্থা খতিয়ে দেখেন। প্রতিনিধি দলের সদস্য তথা জেলা পরিষদের সহকারী সভাধিপতি অজয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘জেলা জুড়ে আমাদের আরও কয়েকটি বাণিজ্যিক ভবন আছে। সেগুলিও ঘুরে দেখা হবে। বাণিজ্যিক ভবনগুলি চালু করে আয় বাড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।’’

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৩ সালের আগে বামফ্রন্ট পরিচালিত হাওড়া জেলা পরিষদ ‘পরিকাঠামো উন্নয়ন তহবিল’ প্রকল্পের টাকায় এই বাণিজ্যিক ভবনগুলি তৈরি করেছিল। বর্তমানে এই প্রকল্পটির অস্তিত্ব নেই। কেন্দ্রীয় সরকার এবং রাজ্য সরকার যৌথভাবে এই প্রকল্পে টাকা দিত। উদ্দেশ্য ছিল, ভবিষ্যতে এমন পরিকাঠামো তৈরি করা যেখান থেকে জেলা পরিষদ আয় করতে পারবে। এই প্রকল্পে ডোমজুড় বাসস্ট্যান্ডে দু’টি, উলুবেড়িয়ার তুলসীবেড়িয়ায় একটি, বাগনানে একটি, জগৎবল্লভপুরের বড়গাছিয়ায় একটি বাণিজ্যিক ভবন তৈরি হয়েছে।কিন্তু পরিকাঠামো তৈরিই সার। শেষ পর্যন্ত কোনও বাণিজ্যিক ভবনই সঠিক ভাবে চালু হয়নি। কিন্তু সেগুলির সঠিক ব্যবহার হচ্ছে না বললেই চলে। যদিও এই বাড়িগুলি তৈরি করতে খরচ হয়েছে কয়েক কোটি টাকা।

জেলা পরিষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, তুলসীবেড়িয়ার যাঁরা স্টল পেয়েছেন তাঁরা এখনও টাকা জমা দেননি। ডোমজুড় এবং বড়গাছিয়ার বেশিরভাগ স্টল অবিক্রিত। বাগনানের বাণিজ্যিক ভবনটি অবশ্য আংশিকভাবে চালু হয়েছে।

দীর্ঘদিন ধরে অবহেলায় পড়ে থাকা বাণিজ্যিক ভবনগুলি থেকে আয় পেতে হঠাৎ এত উদ্যোগী কেন জেলা পরিষদের কর্তারা? জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, কিছুটা বাধ্য হয়েই এটা করতে হচ্ছে। কারণ এতদিন পর্যন্ত জেলা পরিষদের আয়ের অনেকটাই আসত কেন্দ্রীয় কেন্দ্রীয় অর্থ কমিশন থেকে। হাওড়া জেলা পরিষদ সূত্রের খবর, এই খাতে বছরে গড়ে ৭-৮ কোটি টাকা করে আসত জেলা পরিষদের তহবিলে। কিন্তু চতুর্দশ কেন্দ্রীয় অর্থ কমিশন সিদ্ধান্ত নিয়েছে, জেলা পরিষদ এই টাকা আর পাবে না। ঠিক হয়েছে কমিশনের সুপারিশ করা টাকা পাবে শুধুমাত্র গ্রাম পঞ্চায়েত। ২০১৫-১৬ আর্থিক বছর থেকে শুরু হয়েছে চতুর্দশ কেন্দ্রীয় অর্থ কমিশনের মেয়াদ। পঞ্চায়েতগুলি ইতিমধ্যেই টাকা পেতে শুরু করেছে। এই পরিস্থিতিতে আয়ের বিকল্প পথ খোঁজা ছাড়া অন্য উপায় নেই জেলা পরিষদের কাছে। তাই এই উদ্যোগ। জেলা পরিষদের এক কর্তা বলেন, ‘‘তুলসীবেড়িয়ায় তিনটি বড় হলঘর আছে। সেগুলি নেওয়ার জন্য ব্যাঙ্কের কাছে আবেদন করা হবে। ডোমজুড়ের বাণিজ্যিক ভবনে বেকার যুবকেরা স্বনির্ভর প্রকল্পে স্টল নিয়ে ব্যবসা করতে পারেন।’’ শুধু তাই নয়, গড়চুমুকের হরিণ প্রকল্প থেকেও আয় বাড়াতে চাইছে জেলা পরিষদ। সেখানে পরিষেবার মান বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

তৃণমূল পরিচালিত হাওড়া জেলা পরিষদের এই উদ্যোগে অবশ্য নিজেদের কৃতিত্ব দেখছে বামেরা। জেলা পরিষদের প্রাক্তন পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ তথা সিপিএম নেতা আনন্দ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আয় বাড়ানোর জন্যই আমরা এই বাণিজ্যিক ভবনগুলি করেছিলাম। সেগুলি যে বিপদের সময়ে কাজে লাগছে তাতে আমরা খুশি।’’ যদিও এতে বামেদের কোনও কৃতিত্ব দিতে রাজি নন জেলা পরিষদের সহকারী সভাধিপতি অজয়বাবু। তাঁর দাবি, ‘‘বামফ্রন্ট আমলে বাণিজ্যিক ভবনগুলি অপরিকল্পিত ভাবে তৈরি হয়েছিল। তাই সেগুলি কাজে লাগাতে আমাদের কালঘাম ছুটে যাচ্ছে।’’

District Council income
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy