চিকিৎসাধীন: উলুবেড়িয়া হাসপাতালে অসুস্থ আসমিনা। সুব্রত জানা
বিবাহ বিচ্ছেদের জন্য সই করতে রাজি না হওয়ায় এক বধূকে বেধড়ক মারধর করার অভিযোগ উঠল শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়, মারধর করে তাঁর গলায় বেল্টের ফাঁস লাগিয়ে, হাত-পা বেঁধে বস্তায় পুরে রাস্তায় ফেলে দিয়ে আসার অভিযোগও উঠেছে শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে।
বৃহস্পতিবার সকালে ঘটনাটি ঘটে হাওড়ার বাগনানের বাইনান নাজিরপাড়ায়। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, তাঁরা বস্তা খুলে ওই বধূকে উদ্ধার করেন। খবর দেওয়া হয় থানায়। পুলিশ এসে আসমিনা বেগম নামে ওই মহিলাকে প্রথমে বাগনান গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করায়। পরে তাঁকে পাঠানো হয় উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালে।
গ্রামীণ জেলা পুলিশের এক কর্তা জানান, গ্রামবাসীরা থানায় ফোন করে জানান বস্তাবন্দি একটি দেহ পড়ে আছে। তবে ঘটনাস্থলে গিয়ে বস্তাবন্দি অবস্থায় আসমিনাকে পাওয়া যায়নি। তাঁর হাত-পাও বাঁধা ছিল না। রাস্তার ধারে তিনি পড়েছিলেন। পুলিশই তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। আসমিনার বাপের বাড়ির তরফে অভিযোগ পেয়ে পুলিশ তাঁর এক ননদ ও জা’কে গ্রেফতার করেছে। সেভ ডেমোক্রেসির সদস্যরা এ দিন উলুবেড়িয়া হাসপাতালে এসে আসমিনার সঙ্গে দেখা করেন। ঘটনার উপযুক্ত তদন্তের দাবি জানান। পুলিশ জানিয়েছে, মহিলার মায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে শ্বশুরবাড়ির আটজনের বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টার অভিযোগে মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, আসমিনার বাপের বাড়ি বাগনানেরই ব্রাহ্মণগ্রামে। তাঁর বিয়ে হয়েছিল নাজিরপাড়ার জরির কারিগর সেখ আখিরুলের সঙ্গে। বিয়ের আগে থেকেই প্রেম ছিল তাঁদের। কিন্তু আখিরুলের বাড়ির লোকেরা এই বিয়ে মেনে নেননি। আসমিনাকে বাড়িতে ঢুকতে দেননি। শ্বশুরবাড়ি থেকে দেওয়া জায়গায় বাবা ঘর তৈরি করে দিলে সেখানে স্বামীকে নিয়ে থাকতেন আসমিনা। সংসারের আর্থিক অবস্থা ভাল না হওয়ায় কাজের খোঁজে মাসতিনেক আগে সৌদিআরবে চলে যান আখিরুল। আসমিনার অভিযোগ, তার পর থেকেই স্বামীকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য তাঁকে শ্বশুরবাড়ি থেকে চাপ দেওয়া হচ্ছিল। কিন্তু তিনি রাজি হননি।
তাঁর অভিযোগ, ‘‘বুধবার রাতে একটি অনুষ্ঠানের নাম করে আমাকে শ্বশুরবাড়িতে ডেকে নিয়ে যান ভাসুর এবং ননদাই। সেখানে বিবাহ বিচ্ছেদের জন্য সাদা কাগজে সই করতে বলা হয়। আমি সই করতে অস্বীকার করায় বেধড়ক মারধর শুরু করে ভাসুর, ভাসুরের ছেলে, জা, ননদ এবং ননদাই। গলায় বেল্ট দিয়ে ফাঁস লাগিয়ে দেওয়া হয়। আমি জ্ঞান হারাই। জ্ঞান ফিরলে দেখি হাসপাতালে শুয়ে আছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy