Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪

মেজাজে ব্যাটিং ঠান্ডার, কাবু দু’জেলার মানুষ 

এ বছরের গোড়ায় ঠান্ডা তেমন ছিল না। হালকা সোয়েটার বা চাদরেই কাজ চলে যাচ্ছিল। শীতের এই টেস্ট ম্যাচসুলভ ব্যাটিংয়ে মন খারাপ ছিল আমজনতার।

আশ্রয়: চলছে আগুন পোহানো। নিজস্ব চিত্র

আশ্রয়: চলছে আগুন পোহানো। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব প্রতিবেদন
চুঁচুড়া ও উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ২২ ডিসেম্বর ২০১৯ ০০:২৩
Share: Save:

সকাল থেকেই ঠান্ডা হাওয়া। সঙ্গে মিঠে রোদ। দিনের আলোটুকু ফুরোতেই বাড়ছে হাওয়ার গতি। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ঠান্ডা। সন্ধ্যা নামতেই শীতের কামড়ে পথঘাট ফাঁকা। রাস্তার ধারে জবুথবু হয়ে চলছে গুটিকতক মানুষের আগুন পোহানোর পালা। দিন কয়েক ধরে হুগলি এবং হাওড়ার বিস্তীর্ণ এলাকা এ ভাবেই শীতের চাদর মুড়ি দিচ্ছে।

এ বছরের গোড়ায় ঠান্ডা তেমন ছিল না। হালকা সোয়েটার বা চাদরেই কাজ চলে যাচ্ছিল। শীতের এই টেস্ট ম্যাচসুলভ ব্যাটিংয়ে মন খারাপ ছিল আমজনতার। গত কয়েক দিন ধরে অবশ্য মারকাটারি খেলে রীতিমতো চার-ছয় হাঁকাচ্ছে ঠান্ডা। সান্দাকফু-সহ উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন অংশে তুষারপাতের খবর মিলছে। উত্তরবঙ্গের হাত ধরে দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতেও জাঁকিয়ে বসেছে ঠান্ডা।

হাওড়া এবং হুগলিও তার ব্যতিক্রম নয়। হুগলিতে ধনেখালি, গুড়াপ বা গোঘাট, খানাকুলের মতো গ্রামগঞ্জ তো বটেই উত্তরপাড়া, শ্রীরামপুর, কোন্নগর, চন্দননগর, চুঁচুড়ার মতো শহুরে এলাকাতেও ঠান্ডার জন্য সন্ধ্যা থেকেই মানুষ ঘরমুখী হচ্ছেন। দোকানপাট অনেক তাড়াতাড়ি বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।

শনিবার সন্ধ্যায় উত্তরপাড়ার ভদ্রকালী ক্যাম্পের মোড়ে কয়েক জন রিকশাচালক আগুন পোহাচ্ছিলেন। তাঁরা জানান, বিকেল থেকেই যাত্রী নেই। পারদ নামতেই আগুন জ্বালিয়ে তাঁরা যাত্রীর জন্য অপেক্ষা করছেন। সখের বাজার এলাকার বাসিন্দা বিদিশা দাস বলেন, ‘‘স্বামী ব্যবসা করেন। ফিরতে দেরি হয়। অন্যান্য দিন স্থানীয় রাতে একটি দোকান থেকে রুটি কিনি। আজ সন্ধ্যাতেই রুটি কিনে ফ্ল্যাটে ঢুকে পড়ছি। যা ঠান্ডা, বেশি রাতে রাস্তায় বেরোনো কঠিন।’’ জিটি রোডে উত্তরপাড়া থেকে কোন্নগরমুখী অটো ছিল কম। ওই রুটে টোটো চালান ভুটান দাস। তাঁর কথায়, ‘‘এই ঠান্ডায় রাস্তায় লোক নেই। তাই আমরাও আগেভাগে বাড়িতে ঢুকে পড়ছি।’’

দু’দিন আগেও হাওড়ার উদয়নারায়ণপুর বাজার রাত ১০টা পর্যন্ত গমগম করত। এখন তা ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে দু’ঘণ্টা আগেই। আচমকা কনকনে ঠান্ডা পড়ে মানুষকে যেন ঘরে ঢুকিয়ে দিয়েছে প্রকৃতি। স্থানীয় বাসিন্দা তারকনাথ মেটে বলেন, ‘‘রাত ৮টার পরে ঠান্ডার চোটে নাকমুখ ঢেকেও বাইরে থাকা যাচ্ছে না।’’ উদয়নারায়ণপুর ঘোষপাড়ার বাসিন্দা নিমাই আদকের বাড়িতে প্রতিদিন সন্ধ্যা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত আড্ডা বসে। প্রবল শীতে সেই আড্ডা দ্রুত ভেঙে যাচ্ছে। নিমাইবাবুর কথায়, ‘‘শীতে কাঁপুনি ধরে যাচ্ছে। সবাই যেন তাড়াতাড়ি বাড়িতে ঢুকতে পারলে বাঁচেন।’’

গাদিয়াড়া ফেরিঘাট থেকে গেঁওখালি এবং নুরপুরের শেষ লঞ্চ ছাড়ে সন্ধ্যা ৭টা ৪০ মিনিটে। নিত্যযাত্রীরা অবশ্য তার ঢের আগেই ফিরে যাচ্ছেন। ঘাটের আধিকারিক উত্তম রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘নদীর হাওয়ায় সন্ধ্যার পরে ঠান্ডায় জমে যাওয়ার মতো অবস্থা। যাত্রীরা যতটা সম্ভব আগে চলে যেতে চাইছেন। ফলে, শেষ লঞ্চগুলি ফাঁকাই থাকছে।’’ বা

বাগনান, উলুবেড়িয়া, আন্দুল, সাঁকরাইল, আমতা— সব জনপদই শীতে কাবু। রাত ৮টা বাজলেই রাস্তাঘাট ফাঁকা। অনেকেই জানাচ্ছেন, বাড়িতে ফিরেই লেপ-কম্বলের ওম খুঁজতেই ব্যস্ত তাঁরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Winter Howrah Hoogly
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE