Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
ধরপাকড় চলছে, দাবি হুগলি জেলা পুলিশের

কানে ফোন নিয়ে ছুটছে মোটরবাইক

‘সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ’ কর্মসূচি চলছে রাজ্য জুড়ে। হেলমেট ছাড়া মোটরবাইক দেখলেই জরিমানার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনকী কর্মসূচির শুরুর দিকে, হেলমেট না পরলে পাম্প থেলে পেট্রোল মিলছিল না। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ঢিলে হয়েছে নজরদারি। রাস্তায় ফের হেলমেট ছাড়াই দাপট বাড়ছে বাইকের। আজ নজরে হুগলি জেলা।‘সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ’ কর্মসূচি চলছে রাজ্য জুড়ে। হেলমেট ছাড়া মোটরবাইক দেখলেই জরিমানার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনকী কর্মসূচির শুরুর দিকে, হেলমেট না পরলে পাম্প থেলে পেট্রোল মিলছিল না। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ঢিলে হয়েছে নজরদারি। রাস্তায় ফের হেলমেট ছাড়াই দাপট বাড়ছে বাইকের। আজ নজরে হুগলি জেলা।

মাথায় হেলমেট না পরে কানে ফোন নিয়ে বাইক সওয়ার শ্রীরামপুরে।

মাথায় হেলমেট না পরে কানে ফোন নিয়ে বাইক সওয়ার শ্রীরামপুরে।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২০ মে ২০১৭ ০২:৪২
Share: Save:

নজরদারি শিকেয়। উধাও সচেতনতা। পরিস্থিতি আবার যে কে সেই!

মুখ্যমন্ত্রীর ‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ’ স্লোগানকে সামনে রেখে মোটরবাইক আরোহীদের মাথায় হেলমেট থাকা বাধ্যতামূলক করেছিল রাজ্য সরকার। মাথায় হেলমেট ছাড়া পেট্রোল পাম্পে তেল মিলবে না বলেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কর্মসূচি সফল করতে মিছিল, সভা, নাটক, মূকাভিনয়— বাদ থাকেনি কিছুই। কিন্তু হুগলি জেলার বিভিন্ন এলাকায় মাস খানেক আগে থেকেই বেশিরভাগ মোটরবাইক আরোহীর মাথা থেকে উধাও হেলমেট। তেলও মিলছে বিনা হেলমেটে।

জিটি রোডের ধারে মগরা ২ পঞ্চায়েতের কাছে এক পেট্রোল পাম্পের মালিকের দাবি, ‘‘কী করব! কড়াকড়ি করলে তো খদ্দের কমে যাবে। বাইক আরোহীরাও আমাদের কথা শুনতে চান না। পুলিশকে বলেও লাভ হয় না। তাই বিনা হেলমেটে তেল দেওয়া হচ্ছে।’’

বলাগড়ের কোরলা এলাকায় অসম লিঙ্ক রোডের ধারে পেট্রোল পাম্পের এক কর্মীর দাবি, ‘‘হেলমেটহীন আরোহীদের তেল দিতে না চাইলে গালিগালাজ করে। ‘হেলমেট ছাড়া তেল দেওয়া হবে না’ বলে বোর্ড লাগানো হলেও লাভ হয়নি। পুলিশও নজরদারি চালায় না।’’ চণ্ডীতলা, ডানকুনি, সিঙ্গুর, হরিপালের বিভিন্ন পাম্পেও হেলমেট ছাড়াই মিলছে তেল।

নিয়ম-ভেঙে: হেলমেট ছাড়াই তেল মিলছে পান্ডুয়ার পেট্রোল পাম্পে।

পান্ডুয়ার তিন্না এলাকার ব্যবসায়ী কমল পাল স্বীকার করেছেন, ‘‘হেলমেট না পরে থাকায় কয়েকবার পুলিশ ধরেছিল। পরে ছেড়েও দেয়।’’ ভদ্রেশ্বরের তেলেনিপাড়ার এক যুবকের আবার দাবি, ‘‘প্রচন্ড গরম। হেলমেট মাথায় রাখা যাচ্ছে না।’’ দিন কয়েক আগে চণ্ডীতলার জঙ্গলপাড়া এলাকার একটি পাম্পে হেলমেট ছাড়াই তেল নিচ্ছিলেন স্বপন মণ্ডল নামে এক ব্যক্তি। তাঁর দাবি, ‘‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ কর্মসূচি ঘোষণার পরে কয়েক মাস পুলিশের নজরদারি চলছিল। কিন্তু এখন নেই। তাই এই গরমে আমি আর হেলমেট নিয়ে বেরোচ্ছি না।’’

শুধু সাধারণ মানুষ নয়, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশকে বুড়ো আঙুল দেখাচ্ছেন তাঁর দলের কর্মীরাই। সম্প্রতি শ্রীরামপুরে কয়েকশো মোটরবাইকের মিছিল করেছিল তৃণমূল। সেখানে হেলমেটের বালাই ছিল না বললেই চলে। মাথায় হেলমেট না থাকায় ঘটছে দুর্ঘটনা। মাস কয়েক আগে মশাট কলেজের কাছে লরির ধাক্কায় মারা গিয়েছিলেন এক যুবক। তাঁর মাথায় হেলমেট ছিল না। এছাড়াও জেলার বিভিন্ন এলাকায় যে কটি মোটরবাইক দুর্ঘটনা ঘটেছে তার মধ্যে বেশির ভাগ আরোহীর মাথাতেই হেলমেট ছিল না।

হুগলি জেলা পুলিশের এক কর্তার বক্তব্য, বিভিন্ন রাস্তায় রুটিনমাফিক মোটরবাইক ধড়পাকড় চলে। আবার নিচুতলার পুলিশ কর্মীদের ক্ষোভ, বহু ক্ষেত্রেই বিনা হেলমেটের বাইক আরোহীদের ধরলে তাঁদের ছাড়ানোর জন্য বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা সুপারিশ করেন। কয়েকজন মোটরবাইক আরোহীর দাবি, পুলিশ টাকার বিনিময়ে বিনা হেলমেটের যাত্রীদের ছেড়ে দেয়। সেই দেখেই অনেকে হেলমেট মাথায় না দিয়েই মোটরবাইক চালান। পুলিশ অবশ্য এই অভিযোগ মানেনি।

(তথ্য সহায়তা: প্রকাশ পাল, সুশান্ত সরকার, দীপঙ্কর দে)

—নিজস্ব চিত্র।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bike rider Helmet Safe Drive Save life
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE