Advertisement
E-Paper

ওড়িশার ছাত্রীকে ঘরে ফেরালেন যুবক

মহিলাদের নিরাপত্তা যখন হাজারো প্রশ্নের মুখে, তখন এক যুবকের সহায়তায় বাড়ি থেকে পালানো ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্রীকে উদ্ধার করল পুলিশ। সোমবার ঘটনাটি ঘটেছে হাওড়ার বাগনানে।

নুরুল আবসার

শেষ আপডেট: ২১ মার্চ ২০১৭ ০১:১০
মানবিক। সেখ আসরাফুল। নিজস্ব চিত্র

মানবিক। সেখ আসরাফুল। নিজস্ব চিত্র

মহিলাদের নিরাপত্তা যখন হাজারো প্রশ্নের মুখে, তখন এক যুবকের সহায়তায় বাড়ি থেকে পালানো ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্রীকে উদ্ধার করল পুলিশ। সোমবার ঘটনাটি ঘটেছে হাওড়ার বাগনানে। ছাত্রী নাবালিকা হওয়ায় উদ্ধারের পরে তাকে সিডব্লিউসি-তে হাজির করায় পুলিশ। তার বাবা মাকেও খবর দেওয়া হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই ছাত্রীর বাড়ি ওড়িশার কটকের টাঙ্গি থানার জরিপাড়া গ্রামে। কটকেরই একটি বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং-এর প্রথম বর্ষের ছাত্রী সে। রবিবার সকালে তার বিশেষ ক্লাস থাকায় বাড়ি থেকে সকাল আটটা নাগাদ সে কলেজে আসে। দুপুর ১২টা নাগাদ ক্লাস শেষ হয়। কিন্তু বাড়ি না ফিরে সে অটোয় চেপে কটক স্টেশনে আসে। তখন স্টেশন ছেড়ে হাওড়ার দিকে যাচ্ছিল ফলকনামা এক্সপ্রেস। চলন্ত ট্রেনে লাফ দিয়ে উঠে পড়ে সে। ওই ট্রেনে বাড়ি ফিরছিলেন হাওড়ার বাগনানের কল্যাণপুর গ্রামের বাসিন্দা বছর পঁচিশের সেখ আসরাফুল। কর্মসূত্রে থাকেন ওড়িশায়। রবিবার বাড়ি আসছিলেন। আসরাফুল বলে‌ন, ‘‘ট্রেনে বেশ ভিড় ছিল। ট্রেনে উঠেই মোবাইল ফোনের সিম খুলে ফেলে দেয় সে।’’ তিনি জানান, বালেশ্বরে আসার পরে মেয়েটি তাঁকে জিজ্ঞাসা করে ট্রেন কোথায় যাবে? তিনি তাকে ট্রেন হাওড়ায় যাবে বলার পর জানতে চান সে কোথায় যাবে? উত্তরে ছাত্রীটি জানায় যে সে কলকাতায় যাবে। বাড়ি থেকে ঝগড়া করে পালিয়ে এসেছে।

আসরাফুল জানান, তিনি তাকে বুঝিয়ে বাড়ি ফিরে যেতে বলেন। কিন্তু মেয়েটি রাজি হয়নি। উল্টে তাঁর বাড়িতে যাবে বলে জিদ ধরে। আসরাফুল বলেন, ‘‘ওই ছাত্রীর কাছ থেকে ফোন নম্বর নিয়ে রাতেই আমি তার বাড়ির লোকের সঙ্গে যোগাযোগ করে সব জানাই। সোমবার সকালে আমাদের গ্রামের ভিলেজ পুলিশকেও খবর দিই।’’

ভিলেজ পুলিশ মনিরুল জামাল বাগনান থানার আইসি উজ্জ্বল দাসকে বিষয়টি জানান। তিনি ছাত্রীটিকে উদ্ধার করে আনেন। তার বাবা মাকে খবর দেওয়া হয়।

এ দিন ফোনে পেশায় মুদির দোকানদার ছাত্রীটির বাবা বলেন, ‘‘আমার ছেলেও ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ছাত্র। সামান্য বকার জন্য মেয়ে যে বাড়ি ছেড়ে পালাবে ভাবতে পারিনি।’’ মেয়েকে উদ্ধারের জন্য পুলিশ এবং আসরাফুলের প্রশংসা করেন তিনি। আশরাফুলের প্রশংসায় পুলিশও। জেলা পুলিশের এক কর্তা জানান, চারপাশে যা ঘটছে তাতে ওই যুবক যা করছে তা দৃষ্টান্ত। আসরাফুলের নিজের কথায় অবশ্য ‘এটা তেমন কিছু নয়’। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘এক শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষের যা করা উচিত সেটাই করেছি।’’

আর কী বলছে ছাত্রীটি?

ঝোঁকের মাথায় ভুল করে বাড়ি ছাড়লেও এখন বাড়ি ফিরতে উদগ্রীব সে। এ দিন সে বলে, ‘‘ওই যুবক আমার সঙ্গে কোনও খারাপ ব্যবহার করেননি। অভিভাবকের মতো আগলে রেখেছিলেন। ওঁর বাড়িতেও সবাই খুব ভাল। আমার অসুবিধা হয়নি।’’

Odisha's student Home
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy