Advertisement
E-Paper

অ্যাপ্রোচ রোড অসমাপ্ত, তবু উড়ালপুলের উদ্বোধন বাগনানে

এক দিকের অ্যাপ্রোচ রোড এখনও অসমাপ্ত। সংলগ্ন রাস্তার কাজও শুরু হয়নি। তা সত্ত্বেও, শুক্রবার দুপুরে বাঁকুড়ার একটি অনুষ্ঠান থেকে রিমোট কন্ট্রোলে বাগনান লেভেল ক্রসিংয়ের উপরে রেল ও রাজ্য সরকারের যৌথ উদ্যোগে গড়া উড়ালপুলটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ দিন থেকেই ওই উড়ালপুল দিয়ে ছোট গাড়ি চলাচলও শুরু হয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ অগস্ট ২০১৪ ০১:০৬
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সাংসদ সুলতান আহমেদ, মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: সুব্রত জানা।

উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সাংসদ সুলতান আহমেদ, মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: সুব্রত জানা।

এক দিকের অ্যাপ্রোচ রোড এখনও অসমাপ্ত। সংলগ্ন রাস্তার কাজও শুরু হয়নি। তা সত্ত্বেও, শুক্রবার দুপুরে বাঁকুড়ার একটি অনুষ্ঠান থেকে রিমোট কন্ট্রোলে বাগনান লেভেল ক্রসিংয়ের উপরে রেল ও রাজ্য সরকারের যৌথ উদ্যোগে গড়া উড়ালপুলটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ দিন থেকেই ওই উড়ালপুল দিয়ে ছোট গাড়ি চলাচলও শুরু হয়েছে। কিন্তু এক দিকে রাস্তার কিছু অংশে পিচের কাজ না হওয়ায় তা ব্যবহার করা অনুচিত এবং এতে দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকে বলেই মনে করছে পূর্ত (সড়ক) দফতর। ফলে, দুর্ভোগ এখনই মেটার আশা নেই বলে মনে করছেন সাধারণ যাত্রীরা। এ ভাবে তড়িঘড়ি উদ্বোধনের জন্য স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের একাংশেরও আপত্তি ছিল। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলিও এ ভাবে উদ্বোধনের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।

পূর্ত (সড়ক) দফতরের দাবি, উড়ালপুলটির উত্তর দিকের অ্যাপ্রোচ রোডটি যেখানে ৬ নম্বর জাতীয় সড়কের (মুম্বই রোড) সঙ্গে মিশছে, সেখানে মাত্র ৪০ ফুটের মতো রাস্তা পিচের করা বাকি রয়েছে। তা করার কথা জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের। সেই কাজ দ্রুত শেষ করার জন্য জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে। জেলা পূর্ত (সড়ক) দফতরের কার্যনির্বাহী বাস্তুকার বিনয় মজুমদার বলেন, “উড়ালপুলটি এখনই ব্যবহার না করা ভাল। কাঁচা রাস্তাটি পাকা করা হলে এবং সংলগ্ন রাস্তাটির কাজ শেষ হলেই পুরোদস্তুর গাড়ি যাতায়াত করতে পারবে।”

জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের তরফে কলকাতা ইউনিটের প্রকল্প আধিকারিক শিবকুমার কুশবাহা বলেন, “মুম্বই রোড সম্প্রাসারণের কাজ চলছে। বাগনানে সম্প্রসারণের কাজের সময়েই আমরা অ্যাপ্রোচ রোডের ওই অংশটুকুর কাজ করে দেব। তা যাতে দ্রুত হয়, সেই চেষ্টা হচ্ছে।”

ওই লেভেল ক্রসিং হয়ে বাগনান ও শ্যামপুরের মধ্যে প্রতিদিন কয়েক হাজার গাড়ি যাতায়াত করে। হাট-বাজার, হাসপাতাল, স্কুল-কলেজে যাতায়াতের জন্যও ওই রাস্তায় ভিড় লেগে থাকে। কিন্তু দক্ষিণ-পূর্ব রেলের হাওড়া-খড়্গপুর শাখায় ওই স্টেশন হয়ে ট্রেনের চাপ থাকায় রেলগেট বন্ধ হলে দু’দিকে দীর্ঘ ক্ষণ যানজটে নাজেহাল হন সাধারণ মানুষ। আবার অনেক সময়ে ট্রেন চলাচলও ব্যাহত হয় যানবাহনের কারণে। এই পরিস্থিতি থেকে মুক্তির জন্য বাগনান-শ্যামপুরের বাসিন্দাদের দীর্ঘ দিনের দাবি ছিল উড়ালপুলের।

পূর্ত (সড়ক) দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০১ সালে উড়ালপুলটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন হয়। ২০০৬ সাল থেকে শুরু হয় জমি অধিগ্রহণ। উড়ালপুলটির কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০১২ সালে। কিন্তু নকশায় ত্রুটি থাকায় ফের নতুন নকশা করে গড়ে তোলা হয় সব মিলিয়ে ৩৭১০ ফুট লম্বা উড়ালপুলটি। উত্তর দিকের অ্যাপ্রোচ রোডে সংলগ্ন যে রাস্তাটি বাগনান বাসস্ট্যান্ড থেকে শ্যামপুরের দিক হয়ে এসে মিশেছে, সেই কাজও বাকি রয়েছে। সেই রাস্তার কাজে শীঘ্রই হাত দেওয়া হবে বলে আশ্বাস দিয়েছে পূর্ত (সড়ক) দফতর।

কিন্তু এ ভাবে অসমাপ্ত উড়ালপুল উদ্বোধন করে কী লাভ হল বলে প্রশ্ন তুলেছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। জেলা বিজেপি (গ্রামীণ) সভাপতি গৌতম রায় বলেন, “রাজ্য সরকার তো সব কাজই খাপছাড়া ভাবে করছে। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে কাজটি সম্পূর্ণ করার কোনও উদ্যোগই সরকারের ছিল না। ঠিকমতো সমন্বয় থাকলে নিশ্চয়ই এত দিনে কাজ সম্পূর্ণ হত।” প্রায় একই সুর শোনা গিয়েছে কংগ্রেস নেতা অসিত মিত্র এবং সিপিএম নেতা আক্কেল আলির গলাতেও।

বস্তুত, উড়ালপুলটি যে এ দিন মুখ্যমন্ত্রী উদ্বোধন করবেন, সে খবর উলুবেড়িয়া মহকুমা প্রশাসনের কাছে আসে গত ৩০ জুলাই বিকেলে। মুখ্যমন্ত্রী পুরুলিয়া রওনা হওয়ার আগে। এর পরেই ব্যস্ত হয়ে পড়ে প্রশাসন। কিন্তু রাস্তা না করে উড়ালপুলের উদ্বোধনে স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের একাংশ মনে করেছেন, এতে আসল উদ্দেশ্যই সাধিত হবে না। তবে, এ সব কথাকে আমল দিতে রাজি হননি উলুবেড়িয়ার তৃণমূূল সাংসদ সুলতান আহমেদ। তাঁর আশ্বাস, “বাগনান-শ্যামপুরের মানুষের বহু দিনের দাবি পূরণ হল। রাস্তার যে কাজ বাকি রয়েছে, তা জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ দ্রুত করে দেবেন।” উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সাংসদ ছাড়াও ছিলেন মন্ত্রী অরূপ রায়, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, শঙ্কর চক্রবর্তী, দক্ষিণ পূর্ব রেলের চিফ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ অফিসার রতন কুমার প্রমুখ।

approach road bangnan flyover southbengal
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy