Advertisement
০২ মে ২০২৪

উত্তম, সুচিত্রার স্মৃতিধন্য রাস্তা পাকা করার দাবি

দেখলে প্রথমেই অবাক হওয়া স্বাভাবিক। এই রাস্তা দিয়েই এসেছেন উত্তমকুমার, সুচিত্রা সেন, জয়া ভাদুড়ি, ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়, রবি ঘোষ? এই গ্রামেই শু্যটিংয়ে এসে বার বার এমন এবড়ো-খেবড়ো রাস্তা দিয়ে তাঁদের যাতয়াত করতে হয়েছে?

সেই রাস্তা। এই বাড়িতেই এসে থাকতেন উত্তমকুমার।—নিজস্ব চিত্র।

সেই রাস্তা। এই বাড়িতেই এসে থাকতেন উত্তমকুমার।—নিজস্ব চিত্র।

রমাপ্রসাদ গঙ্গোপাধ্যায়
জগৎবল্লভপুর শেষ আপডেট: ২৫ জুলাই ২০১৪ ০১:৫৮
Share: Save:

দেখলে প্রথমেই অবাক হওয়া স্বাভাবিক। এই রাস্তা দিয়েই এসেছেন উত্তমকুমার, সুচিত্রা সেন, জয়া ভাদুড়ি, ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়, রবি ঘোষ? এই গ্রামেই শু্যটিংয়ে এসে বার বার এমন এবড়ো-খেবড়ো রাস্তা দিয়ে তাঁদের যাতয়াত করতে হয়েছে? যদিও এক সময় রাস্তা পাকা করার কাজ শুরু হয়েছিল। গ্রামের মানুষ ভেবেছিলেন রাস্তা নিয়ে তাঁদের দীর্ঘ ভোগান্তির অবসান হতে চলেছে। কিন্তু অদ্ভূতভাবে কিছুটা কাজ হওয়ার পরেই কাজ বন্ধ হয়ে যায়। তারপর দীর্ঘ ১০ বছর কেটে দিয়েছে। কিন্তু রাস্তা আর পাকা হয়নি। হাওড়ার জগত্‌বল্লভপুর-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের গোহালপোতা গ্রামের প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে এক দিকে মুন্সির হাট ও অন্য দিকে পাতিহাল পর্যন্ত মোট আড়াই কিলোমিটার রাস্তা নিয়ে আজও ভোগান্তির শেষ নেই এলাকার মানুষের। বর্ষা নামলে দুর্ভোগ আরও বাড়ে পাতিহাল, গোহালপোতা, মুন্সিরহাট, সাহাপাড়া, হাজরাপাড়া, বাকুল, চাঁদুল প্রভৃতি এলাকার মানুষের।

বছর দশেক আগে বাম আমলে গোহালপোতা থেকে এক দিকে মুন্সির হাট ও অন্য দিকে পাতিহাল পর্যন্ত রাস্তা দু’টি পাকা করার জন্য জেলা পরিষদের তত্ত্বাবধানে কাজ শুরু হয়েছিল। সেই মতো গোহালপোতা গ্রামের রথতলা থেকে প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র পর্যন্ত প্রায় আধ কিলোমিটার লম্বা রাস্তা পিচ ঢেলে পাকা করার কাজ শুরু হয়। কিন্তু কোনও কারণে অল্প কিছুদিন পরেই কাজ বন্ধ হয়ে যায়। বাকি রাস্তায় মোরাম ফেলে কোনওরকমে চলাকর যোগ্য করা হয়। কিন্তু তার পর থেকে আজ পর্যন্ত ওই অবস্থাতেই রয়ে গিয়েছে রাস্তাদু’টি। তা পাকা করার জন্য জেলা পরিষদের তরফে আর কোনও পদক্ষেপই করা হয়নি। রাজ্যে পালা বদলের পরেও পরিস্থিতি একই থেকে গিয়েছে। এমনকী রাস্তায় নতুন করে মোরামও ফেলা হয়নি। ফলে বর্ষায় মোরাম ধুয়ে গিয়ে জায়গায় জায়গায় তৈরি হয়েছে গর্ত। খানাখন্দে ভরা সেই রাস্তা দিয়েই চলাচল করছে যানবাহন। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, দুর্ঘটনার আশঙ্কা তো রয়েইছে, তার উপর কেউ অসুস্থ হলে তাঁকে নিয়ে হাসপাতালে যেতে গেলেও প্রাণ ওষ্ঠাগত হচ্ছে।

স্থানীয় বাসিন্দা অচিন্ত্য ঘোষ, জয়দেব দাস, স্বপন মল্লিক সত্তরের দশকে চলচ্চিত্রের অভিনেতা-অভিনেত্রীদের আনাগোনায় গমগম করত গোহালপোতা গ্রাম। গ্রামেরই বাসিন্দা সত্যনারায়ণ খাঁয়ের গড়া চণ্ডীমাতা ফিল্ম স্টুডিওয় শ্যুটিং করতে আসতেন রুপোলি পর্দার বহু অভিনেতা-অভিনেত্রী। এসেছিলেন উত্তম কুমার, সুচিত্রা সেন, শর্মিলা ঠাকুর, রবি ঘোষ, ভানু বন্দোপাধ্যায় প্রমুখ। হার মানা হার, ধন্যি মেয়ের মতো বিখ্যাত সব সিনেমার শ্যুটিং হয়েছিল এই গ্রামেই। তখন এই রাস্তা দিয়েই আসাযাওয়া করতেন সবাই। তাই রাস্তার অন্য একটা ইতিহাসও রয়েছে। তা ছাড়া রাস্তা পাকা হলে কলকাতা থেকেও অনেকে এখানে এসে এ সব দেখতে পারবেন। কিন্তু সে সব নিয়ে পঞ্চায়েত থেকে জেলা প্রশাসন কারও কোনও মাথাব্যথাই নেই।

হাওড়া জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ কল্যাণ ঘোষ বলেন, “রাস্তাদুটি পাকা করতে প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনার আওতায় আনার জন্য সংশ্লিষ্ট দফতরকে জানিয়েছি। আশা করি শীঘ্রই কাজ শুরু হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE