Advertisement
E-Paper

উনি তো আলো নিয়ে খেলতেন...

ডুগডুগি বাজাচ্ছেন শিব! গান গাইছেন বাউল! আগুন ওগরাচ্ছে ড্রাগন! পুজোর চার দিন ধরে বনগাঁর মতিগঞ্জ ঐক্য সম্মিলনী ক্লাবের দুর্গাপুজোর এই আলোকসজ্জা দেখে চমকে গিয়েছেন শহরের অনেকেই। এমনকী, দূর থেকে আসা দর্শনার্থীরা থমকে গিয়েছেন আলো দেখে!

সীমান্ত মৈত্র

শেষ আপডেট: ০৮ অক্টোবর ২০১৪ ০১:০৮
 এবার বনগাঁয় রঞ্জনবাবুর আলো।

এবার বনগাঁয় রঞ্জনবাবুর আলো।

ডুগডুগি বাজাচ্ছেন শিব!

গান গাইছেন বাউল!

আগুন ওগরাচ্ছে ড্রাগন!

পুজোর চার দিন ধরে বনগাঁর মতিগঞ্জ ঐক্য সম্মিলনী ক্লাবের দুর্গাপুজোর এই আলোকসজ্জা দেখে চমকে গিয়েছেন শহরের অনেকেই। এমনকী, দূর থেকে আসা দর্শনার্থীরা থমকে গিয়েছেন আলো দেখে!

যে আলোক-শিল্পীর এই আলোর কেরামতি চার দিনে কয়েক লক্ষ লোক টেনেছে ওই মণ্ডপে, চন্দননগরের সেই রঞ্জন সরকার খুন হয়ে গেলেন সোমবার রাতে। বাড়ির কাছেই গলার নলি কেটে, গুলি করে তাঁকে খুন করা হয়। মঙ্গলবার খবরটা কানে আসা ইস্তক ম্লান হয়ে গিয়েছে মতিগঞ্জ ঐক্য সম্মিলনীর কর্মকর্তাদের মুখ।

রঞ্জনের আলোর থিমে ভর করেই ওই ক্লাব যে আগে পর পর দু’বছর প্রশাসনের বিচারে ছিনিয়ে নিয়েছে আলোকসজ্জায় সেরার শিরোপা। তাই রঞ্জনের খুন হওয়ার কথা জানার পরে ক্লাব সম্পাদক দেবদাস মণ্ডল বলেন, “উনি আলোকে নিয়ে যেন খেলা করতেন। লোকে তা দেখে তারিফ করতেন। আর তাতে আমাদের বুক চওড়া হয়ে যেত। এমন এক জন শিল্পীর মৃত্যুতে আমাদের আগামী বছরের পুজোর আয়োজনে এখনই একটা শূন্যতা তৈরি হল।”

বছর তিনেক আগে এক মণ্ডপশিল্পীর মাধ্যমে ক্লাব কর্তৃপক্ষ রঞ্জনের খোঁজ পান। প্রথম বছর পুরনো রাজবাড়িতে ভৌতিক কর্মকাণ্ডের আলোকসজ্জা উপহার দিয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। সেই শুরু। পরের বার মালেশিয়ার টুইন টাওয়ারের আদলে আলোর গেট তৈরি করেন ওই মণ্ডপে। আর এ বারের আলো আরও তাক লাগানো। মণ্ডপের বাইরে দুবাইয়ের একটি হোটেলের আদলে প্রায় ৭৫ ফুট উচ্চতার একটি-সহ মোট চারটি আলোর গেট তৈরি করেছিলেন রঞ্জন। সঙ্গে শিব, দুর্গা, গণেশ থেকে ড্রাগন সবই ছিল। তবে আলোকসজ্জায় শিবের ডুগডুগি বাজানোর দৃশ্য সবচেয়ে উপভোগ করেছেন মানুষ। সঙ্গে ছিল ‘বোম ভোলা’ গান।

রঞ্জনের খুনের খবর শুনে বনগাঁয় আলোকশিল্পের গুণগ্রাহী অনেকেই বিশ্বাস করতে পারছেন না। গল্পকার কৃষ্ণেন্দু পালিতের বক্তব্য, “ওঁর তৈরি আলোর কারিকুরি দেখেছি। কোনও সন্দেহ নেই, উনি এক জন বড় মাপের শিল্পী ছিলেন। বনগাঁয় দুর্গাপুজোর আলোয় তিনি নতুনত্ব এনেছিলেন। খুনিরা একটা বড় প্রতিভাকে মেরে ফেলল।”

বহু মানুষ জানতেন না ঐক্য সম্মিলনীর আলোকসজ্জার দায়িত্বে ছিলেন রঞ্জন। তাঁরা শুধু জানতেন, এখানে চন্দননগরের আলো লাগানো হয়েছে। এ দিন ওই শিল্পীর নিহত হওয়ার খবরে তাঁদের অনেকেই স্তম্ভিত। সহিদুল মোল্লা নামে এক যুবকের কথায়, ‘‘খুবই খারাপ লাগছে। উনি আমাদের দুর্দান্ত সব থিম উপহার দিয়েছেন। ভবিষ্যতে নিশ্চয়ই আরও ভাল কিছু পাওয়া যেত।” সায়ন্তনী মৈত্র নামে এক মহিলা বললেন, ‘‘আমরা তো শিল্পীর নাম জানতাম না। শুধু জানতাম চন্দননগরের আলো। মুগ্ধ হয়ে ওই আলো উপভোগ করেছি। তাঁর খুন হওয়া মানতে পারছি না।”

simanta moitra ranjan sarkar murder case baghbazar light artist southbengal
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy