Advertisement
E-Paper

কাদা ছিটকে আসায় বাসের চালককে মার

খানাখন্দে ভরা রাস্তায় বাসের চাকা পড়ায় ছিটকে গিয়েছিল বৃষ্টির জল-কাদা। এই ‘অপরাধে’ রবিবার রাতে চুঁচুড়া-হরিপাল ১৮ নম্বর রুটের এক বাস-চালককে মারধর করা হল ধনেখালির মোগলপুরে। স্থানীয় কয়েক জন যুবক পরেশ মালিক নামে ওই চালককে বাস থেকে নামিয়ে রাস্তায় ফেলে বাঁশ-লাঠি দিয়ে বেধড়ক পেটায় বলে অভিযোগ। গুরুতর জখম পরেশবাবুকে ধনেখালি গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ অগস্ট ২০১৪ ০০:৪৭
বাসস্ট্যান্ডে পড়ে রয়েছে বাস। হরিপালে।—নিজস্ব চিত্র।

বাসস্ট্যান্ডে পড়ে রয়েছে বাস। হরিপালে।—নিজস্ব চিত্র।

খানাখন্দে ভরা রাস্তায় বাসের চাকা পড়ায় ছিটকে গিয়েছিল বৃষ্টির জল-কাদা। এই ‘অপরাধে’ রবিবার রাতে চুঁচুড়া-হরিপাল ১৮ নম্বর রুটের এক বাস-চালককে মারধর করা হল ধনেখালির মোগলপুরে। স্থানীয় কয়েক জন যুবক পরেশ মালিক নামে ওই চালককে বাস থেকে নামিয়ে রাস্তায় ফেলে বাঁশ-লাঠি দিয়ে বেধড়ক পেটায় বলে অভিযোগ। গুরুতর জখম পরেশবাবুকে ধনেখালি গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।

ঘটনার প্রতিবাদে এবং দোষীদের গ্রেফতারের দাবিতে সোমবার সকাল থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৮ নম্বর এবং ১৮এ (হরিপাল-দশঘরা) রুটের সব বাস চলাচল বন্ধ করে দেন কর্মীরা। তাঁদের এই আন্দোলনে সামিল হন ওই দুই রুটের ট্রেকার-চালকেরাও। এ নিয়ে এ দিন তাঁরা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তথাগত বসুকে স্মারকলিপিও দেন। তাঁদের অভিযোগ, শুধু রবিবারের ঘটনাই নয়, প্রায়ই ওই রুটে নানা ভাবে তাঁদের হেনস্থা হতে হয়। দু’টি রুটে ২২টি বাস এবং ১০টি ট্রেকার চলে। এ দিন বাস-ট্রেকার না চলায় দুর্ভোগে পড়েন বহু যাত্রী। অনেককেই মোটরভ্যানে চড়ে গন্তব্যে পৌঁছতে হয়।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জানান, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ঘটনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার দুপুর ৩টে নাগাদ ১৮ নম্বর রুটের একটি বাস ধনেখালির মোগলপুরে পৌঁছলে একটি গর্তে চাকা পড়ে। সেই চাকা থেকে ছিটকে যাওয়া জল-কাদা উল্টো দিক থেকে আসা একটি ছোট গাড়ির জানলা দিয়ে ভিতরে বসা যাত্রীদের গায়ে লাগে। বাসটি চালাচ্ছিলেন পরেশবাবুই। ছোট গাড়ির চালক এ নিয়ে পরেশবাবুর সঙ্গে বচসায় জড়ান এবং তাঁকে হুমকি দেন বলে অভিযোগ।

গোলমাল তখনকার মতো মিটে গেলেও তা বড় আকার নেয় রাতে। ১০টা নাগাদ ওই রুটে চুঁচুড়ার দিক থেকে ছাড়া শেষ বাসটি পরেশবাবুই চালাচ্ছিলেন। মোগলপুরে বাসটি পৌঁছতেই জনা আঠারো যুবক পথ আটকায়। সকালের ঘটনার কথা তুলে তারা পরেশবাবুর সঙ্গে প্রথমে বচসায় জড়ায়। তার পরে তাঁকে বাস থেকে নামিয়ে মারধর শুরু করে বলে অভিযোগ। বাধা দিতে গিয়ে বাসকর্মীরাও প্রহৃত হন। যাত্রীরা পরেশবাবুকে উদ্ধার করতে গিয়ে ব্যর্থ হন। মারমুখী যুবকেরা তাঁদের হুমকি দেন এবং ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দেন বলে যাত্রীরা জানিয়েছেন।

মোগলপুর থেকে কিছুটা এগোলেই ভাণ্ডারহাটি। সেখানেই দু’টি রুটের বাস এবং ট্রেকার স্ট্যান্ড রয়েছে। যাত্রীরা সেখানে গিয়ে ঘটনার কথা জানান। সেখান থেকে বাসকর্মীরা এলে দু’পক্ষের ফের গোলমাল বাধে। খবর পেয়ে পুলিশ আসে। তার আগেই অবশ্য হামলাকারীরা পালায়। বাসকর্মীরা ধনেখালি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

বাস-মালিক ও কর্মীদের মিলিত সংগঠনের সম্পাদক নকুলেশ্বর সাহা বলেন, “দোষীদের যত দিন না গ্রেফতার না করা হবে, আমরা তত দিন বাস বন্ধ রাখব। প্রায়ই ওই দুই রুটে চালকদের নানা ভাবে হেনস্থা করা হচ্ছে। দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন যাত্রীরা। তাঁদের কথা মাথায় রেখে প্রশাসন অবিলম্বে এই সমস্যার সমাধান করুক।”

১৮ নম্বর রুটের একটি বাসের মালিক সম্পদ চৌধুরী বলেন, “সামান্য বচসাকে কেন্দ্র করে যে ভাবে এক চালককে মারা হল, ভাবতে পারছি না। এ সব মেনে নেব না।” কয়েক জন চালক জানান, হরিপাল, ভাণ্ডারহাটি, মোগলপুর, ধনেখালির মতো কিছু জায়গায় বাস ধীরে বা জোরে চালানো, অন্য গাড়িকে জায়গা দেওয়া ইত্যাদি ছোটখাটো নানা ঘটনায় বাসে হামলা করা হয়। তাঁদেরও হেনস্থা করা হয়।

southbengal haripal bus driver bitten
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy