Advertisement
E-Paper

কুপ্রস্তাবে অভিযুক্ত শিক্ষক, কলেজ ছেড়ে দিলেন ছাত্রী

এক বছর ধরে কুপ্রস্তাব দিচ্ছিলেন শিক্ষক এবং তাতে রাজি না হওয়ায় চলছিল প্রাণনাশের হুমকিচন্দননগর উইমেন্স পলিটেকনিক কলেজের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে এমনই অভিযোগ তুলে কলেজ ছেড়ে দিলেন দ্বিতীয় বর্ষের এক ছাত্রী। চন্দননগরের ছবিঘর এলাকায় মেয়েদের একটি হস্টেলে থেকে ওই কলেজে ‘কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি’ নিয়ে পড়াশোনা করতেন ঝাড়গ্রামের ওই ছাত্রী।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ জুলাই ২০১৪ ০২:০৬

এক বছর ধরে কুপ্রস্তাব দিচ্ছিলেন শিক্ষক এবং তাতে রাজি না হওয়ায় চলছিল প্রাণনাশের হুমকিচন্দননগর উইমেন্স পলিটেকনিক কলেজের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে এমনই অভিযোগ তুলে কলেজ ছেড়ে দিলেন দ্বিতীয় বর্ষের এক ছাত্রী।

চন্দননগরের ছবিঘর এলাকায় মেয়েদের একটি হস্টেলে থেকে ওই কলেজে ‘কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি’ নিয়ে পড়াশোনা করতেন ঝাড়গ্রামের ওই ছাত্রী। শুক্রবার কলেজ যাওয়ার জন্য হস্টেল থেকে বেরিয়ে নিখোঁজ হয়ে যান তিনি। তাঁর ঘর থেকে একটি চিঠি মেলে।

ওই চিঠিতে কলেজ-শিক্ষক আদিত্য তা-র বিরুদ্ধে মানসিক নির্যাতন চালানো এবং অপমান করার অভিযোগ তুলেছিলেন ওই ছাত্রী। সেই অভিযোগ মানেননি আদিত্যবাবু। ওই রাতে ছাত্রীর খোঁজ মেলে মধ্যমগ্রাম স্টেশনে। রাগে-অপমানে তিনি ট্রেনের সামনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যার কথা ভেবেছিলেন বলে জানান।

ফিরে এসে শনিবার আদিত্যবাবুর বিরুদ্ধে চন্দননগর থানায় তাঁকে কুপ্রস্তাব দেওয়ার এবং তাতে রাজি না হওয়ায় তাঁর উপর মানসিক নির্যাতন চালানো এবং প্রাণনাশের হুমকির লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ওই কলেজ ছাত্রী। এই কারণে তিনি এ দিনই কলেজ ছেড়ে দেন। বাবা-মায়ের সঙ্গে ফিরে যান ঝাড়গ্রামে নিজের বাড়িতে।

ওই ছাত্রী বলেন, “আদিত্যবাবুর ব্যবহার আর সহ্য হচ্ছিল না। কুপ্রস্তাবে রাজি হইনি বলে নানা ভাবে অপমান করতেন। এক শিক্ষকের ল্যাপটপ চুরির অপবাদও দিয়েছিলেন। পড়াশোনায় সাহায্য করতেন না। বন্ধুদের আমার সঙ্গে মিশতে বারণ করেছিলেন। প্রাণনাশেরও হুমকি দিয়েছেন। তাই কলেজ ছাড়ছি।” আদিত্যবাবুর উপযুক্ত শাস্তিরও দাবি করেন তিনি।

এ দিন কলেজ ছুটি থাকায় আদিত্যবাবু আসেননি। অধ্যক্ষ অশোক দে জানান, আদিত্যবাবুর সঙ্গে কোনও ভাবে যোগাযোগ করা যায়নি। গোটা বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। এ নিয়ে কলেজে তদন্ত-কমিটি গড়া হবে।

ওই কলেজের ‘কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি’ বিভাগের অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সেক্রেটারি আদিত্যবাবু চন্দননগরের নারকেলপাড়ার বাসিন্দা। এ দিন তাঁর বাড়ি তালাবন্ধ ছিল। মোবাইলেও যোগাযোগ করা যায়নি। ওই ছাত্রীর সহপাঠিনীরা গোটা ঘটনায় আদিত্যবাবুর বিরুদ্ধে ক্ষোভ গোপন রাখেননি। তাঁদের বক্তব্য, ওই ছাত্রী নরম এবং চাপা স্বভাবের ছিলেন বলে আদিত্যবাবু কুপ্রস্তাব দেওয়ার সাহস পেয়েছিলেন। এমন ঘটনা ফের তাঁদের সঙ্গেও হতে পারে বলে কেউ কেউ আশঙ্কা প্রকাশ করেন।

ওই ছাত্রী আরও জানিয়েছেন, তিনি শুক্রবার হস্টেল থেকে বেরিয়ে লঞ্চ ধরে জগদ্দলে চলে যান। সেখান থেকে ট্রেনে শিয়ালদহ। সারা সন্ধ্যা শিয়ালদহ স্টেশন চত্বরে ঘোরাঘুরি করার পরে একটি ট্রেন ধরে রাত ১০টা নাগাদ মধ্যমগ্রাম স্টেশনে নামেন। স্টেশন ফাঁকা হলে আত্মহত্যা করবেন ভেবেছিলেন।

কিন্তু বাবা-মায়ের কথা মনে পড়ায় সেই ভাবনা থেকে সরে আসেন ওই ছাত্রী। বসে ছিলেন টিকিট কাউন্টারের সামনের প্ল্যাটফর্মে। তাঁর হাবভাব সন্দেহজনক মনে হওয়ায় এক ব্যক্তি তাঁর সঙ্গে কথা বললে গোটা ঘটনা ছাত্রী জানান। এর পরেই রেল পুলিশের মাধ্যমে যোগাযোগ করা হয় ছাত্রীর হস্টেল-মালিক সঞ্জিত করের সঙ্গে।

ওই রাতেই ছাত্রীকে চন্দননগরে ফিরিয়ে আনা হয়।

শনিবার ফেরার আগে ওই ছাত্রীর বাবা পুলিশের বিরুদ্ধে তদন্তে উদাসীনতার অভিযোগ তোলেন। তিনি বলেন, “পুলিশ ওই শিক্ষককে গ্রেফতার করছে না।

উল্টে মেয়ের দু’টি মোবাইল ফোন বাজেয়াপ্ত করে নিয়েছে।” পুলিশ জানায়, আদিত্যবাবু পলাতক। তাঁর খোঁজ চলছে। তদন্তের স্বার্থে ছাত্রীর মোবাইল দু’টি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।

college student chandannagar college southbengal
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy