Advertisement
E-Paper

কর বাড়ানোর দাবি তুলে মাছ চাষে বাধা, অভিযুক্ত তৃণমূলের পঞ্চায়েত সমিতি

কর বাড়ানোর দাবিতে সমবায় সমিতিকে মাছ চাষ ও মাছ বিক্রিতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠল সমিতির বিরুদ্ধে। সরকার যেখানে রাজ্যে মাছের চাহিদা পূরণের জন্য নিবিড় মৎস্যচাষ পদ্ধতির নতুন উপায়ে বেশি পরিমাণে মাছ চাষে উদ্যোগী হচ্ছে, সেখানে সরকার অনুমোদিত এক মৎস্য সমবায় সমিতিকে মাছ চাষে বাধা দেওয়ার অভিযোগ নিয়ে নড়েছড়ে বসেছে জেলা প্রশাসন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০১:০৭
সমবায় সমিতির এই পুকুরেই মাছ চাষ বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ছবি: সুব্রত জানা।

সমবায় সমিতির এই পুকুরেই মাছ চাষ বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ছবি: সুব্রত জানা।

কর বাড়ানোর দাবিতে সমবায় সমিতিকে মাছ চাষ ও মাছ বিক্রিতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠল সমিতির বিরুদ্ধে।

সরকার যেখানে রাজ্যে মাছের চাহিদা পূরণের জন্য নিবিড় মৎস্যচাষ পদ্ধতির নতুন উপায়ে বেশি পরিমাণে মাছ চাষে উদ্যোগী হচ্ছে, সেখানে সরকার অনুমোদিত এক মৎস্য সমবায় সমিতিকে মাছ চাষে বাধা দেওয়ার অভিযোগ নিয়ে নড়েছড়ে বসেছে জেলা প্রশাসন। সমবায় সমিতিটি সিপিএম পরিচালিত। আর তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েত সমিতির বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠায় বিষয়টি রাজনৈতিক মাত্রা পেয়েছে।

প্রশাসন ও সমবায় সমিতি সূত্রে জানা গিয়েছে, হাওড়ার আমতা-১ পঞ্চায়েত সমিতির অধীনে চাকপোতায় ২১ বিঘার একটি পুকুরে ১৯৯৬-’৯৭ সাল থেকে মাছচাষিরা মাছচাষ শুরু করেন। ২০০৪ সালে ওই মাছচাষিরা বাসুদেব মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি নামে এক সমিতি গঠন করেন। তার রেজিস্ট্রেশনও করা হয়। তখন সমবায়ের সদস্য সংখ্যা ছিল ১০ জন। পরে আরও ৫ জন সমবায়ে যোগ দেন। অভিযোগ, ওই সমবায় সমিতির মাছচাষের স্বত্ব থাকা সত্ত্বেও তাদের পুকুরে মাছ ছাড়তে বা ছাড়া মাছ তুলে বাজারে বিক্রি করতে দেওয়া হচ্ছে না। এমনকী নিয়ম মেনে নতুন কর ধার্য করার আবেদন জানালেও তা গ্রাহ্য করা হচ্ছে না। জেলার সরকারি সম্পত্তি লিজ ও কর সংক্রান্ত তিন (জেলাশাসক, অতিরিক্ত জেলাশাসক ভূমিসংস্কার, জেলা মৎস্য আধিকারিক) সদস্যের কমিটির নির্দেশও অমান্য করার অভিযোগ পঞ্চায়েত সমিতির বিরুদ্ধে। এই পরিস্থিতিতে নজরদারির অভাবে লক্ষ লক্ষ টাকার সরকারি সম্পত্তি (মাছ) চুরি হয়ে যাচ্ছে বলে দাবি সমবায়ের সদস্যদের। তাঁদের অভিযোগ, তাঁরা সিপিএম সমর্থক বলেই এ ভাবে হেনস্থা করা হচ্ছে। পঞ্চায়েত সমিতির কর্তাব্যক্তিদের দাবি, পঞ্চায়েত সমিতিকে সামান্য কর দিয়ে ওই সমবায় সমিতির মাছচাষিরা লক্ষ লক্ষ টাকা আয় করছে। তাই নতুন কর ধার্য করতে হবে।

প্রশাসন ও সমবায় সমিতি সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৪ সালে তৎকালীন বাম পরিচালিত পঞ্চায়েত সমিতির সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী ঠিক হয় বছরে সাড়ে সাত হাজার টাকা করে সমবায় সমিতি পঞ্চায়েত সমিতিকে দেবে। ২০১২ সাল পর্যন্ত নিয়মিত সেই টাকাও সমবায় সমিতি মিটিয়ে দিয়েছে বলে মৎস্য দফতরের সূত্রে জানানো হয়েছে। পাশাপাশি নিয়মানুযায়ী অডিট-সহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাজও সমবায় সমিতি করেছে। ২০১৩ সালে পঞ্চায়েত সমিতি তৃণমূলের দখলে আসে। তারা করের পরিমাণ বাড়াতে উদ্যোগী হয়। তারা দাবি করে, কর বাবদ সাড়ে সাত হাজার টাকা অত্যন্ত কম। করের পরিমাণ বছরে কমপক্ষে ২ লক্ষ টাকা করা প্রয়োজন। বিষয়টি তারা জেলার কর নির্ধারণ কমিটিকে জানায়। তাদের তরফে আমতা-১ পঞ্চায়েত সমিতিকেই বিষয়টি দেখার নির্দেশ দেওয়া হয়। অভিযোগ, তার পর এক বছর কেটে গেলেও পঞ্চায়েত সমিতি নতুন করে কর নির্ধারণ করার প্রক্রিয়া তো শেষ করেইনি, উল্টে বাসুদেব মৎস্যচাষি সমবায় সমিতির মাছচাষিদেরও উল্টে মাছচাষে বাধা দিচ্ছে। সমবায় সমিতির সম্পাদক বুদ্ধদেব বাগ বলেন, “আমরা পঞ্চায়েত সমিতিকে বলেছি বর্তমানে যা কর নির্ধারিত হবে তা দিতে এবং চুক্তিপত্র নবীকরণ করতে আমরা রাজি। বর্তমানে ওই দহে আমাদের অধিকার থাকা সত্ত্বেও পুকুরের কাছে ঘেঁষতে দেওয়া হচ্ছে মাছচাষিদের। ফলে সংস্কারের অভাবে পুকুরটি আগাছায় ভর্তি হয়ে মাছ চাষের অনুপযোগী হয়ে যাচ্ছে। তা ছাড়া লক্ষ লক্ষ টাকার মাছ চুরি হয়ে যাচ্ছে। সমবায় সমিতিটিও বন্ধ করে দিয়েছে ওরা।”

পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি শুকদেব মণ্ডল বলেন, “আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ মেনে দ্রুত নতুন কর ধার্য করার ব্যবস্থা করছি।” যদিও এক বছর ধরে কেন তা করা হয়নি, সে প্রশ্নের উত্তর দেননি তিনি।” মাছচুরির অভিযোগে বিষয়ে তাঁর বক্তব্য, “এ বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই। ওই সমবায় সমিতি জানালে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

জেলা মৎস্য দফতরও সমস্যার কথা স্বীকার করেছে। জেলা কর ধার্যকারী কমিটির সদস্য তথা অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমিসংস্কার) অংশুমান অধিকারী বলেন, “পঞ্চায়েত সমিতির সঙ্গে কথা বলে দ্রুত ব্যবস্থা নিচ্ছি।”

pisciculture tmc panchayat samiti amta southbengal
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy