Advertisement
E-Paper

ছয় মাসে পথ দুর্ঘটনার বলি কুড়ি, ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি

হাল ফিরেছে রাস্তার। পাল্লা দিয়ে বেড়েছে যানবাহন। কিন্তু কমেছে প্রশাসনের নজরদারি। সেই সুযোগে যাত্রিবাহী গাড়িগুলির রেষারেষি এবং বেপরোয়া ভাবে চলাচলের জেরে একের পর এক দুর্ঘটনাও ঘটছে। অথচ, নেওয়া হচ্ছে না কোনও ব্যবস্থা। এ পরিস্থিতি হাওড়ার শ্যামপুরের। শহরে অবৈধ যাত্রিবাহী গাড়ির সংখ্যা বেড়ে চলা, চালকদের নেশাগ্রস্ত অবস্থায় গাড়ি চালানো এবং পুলিশের নজরদারির অভাবের জন্যই এই পরিস্থিতি বলে অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০১৪ ০১:৪২

হাল ফিরেছে রাস্তার। পাল্লা দিয়ে বেড়েছে যানবাহন। কিন্তু কমেছে প্রশাসনের নজরদারি। সেই সুযোগে যাত্রিবাহী গাড়িগুলির রেষারেষি এবং বেপরোয়া ভাবে চলাচলের জেরে একের পর এক দুর্ঘটনাও ঘটছে। অথচ, নেওয়া হচ্ছে না কোনও ব্যবস্থা।

এ পরিস্থিতি হাওড়ার শ্যামপুরের। শহরে অবৈধ যাত্রিবাহী গাড়ির সংখ্যা বেড়ে চলা, চালকদের নেশাগ্রস্ত অবস্থায় গাড়ি চালানো এবং পুলিশের নজরদারির অভাবের জন্যই এই পরিস্থিতি বলে অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। পুলিশ ও পরিবহণ দফতরের সমন্বয়ের অভাবকেও দায়ী করেছেন কেউ কেউ। পুলিশের হিসেবেই, গত ছ’মাসে শ্যামপুর এবং আশপাশের এলাকায় দুর্ঘটনায় ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে। জখম হন পঞ্চাশেরও বেশি। এ নিয়ে হাওড়া জেলা আঞ্চলিক পরিবহণ অধিকর্তা বিপুল বিশ্বাস বিশেষ কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তবে, পরিবহণ দফতরের কর্মীদের একাংশ মেনে নিয়েছেন, অনেক সময়ে কর্মীর অভাবে গাড়ির খুঁটিনাটি পরীক্ষা করা হয়ে ওঠে না। পুলিশেরও ঠিকমতো সহযোগিতা মেলে না বলে তাঁদের অভিযোগ। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) ইন্দ্র চক্রবর্তী বলেন, “থানাগুলির সঙ্গে আলোচনার করে দুর্ঘটনা কমানো এবং বেআইনি গাড়ির দৌরাত্ম্য বন্ধের চেষ্টা চলছে।” তবে, জেলা পুলিশের কর্তাদেরই একাংশ মেনে নিয়েছেন, সব রাস্তায় যান নিয়ন্ত্রণের মতো প্রয়োজনীয় পুলিশকর্মী না থাকার কথা। উলুবেড়িয়ার মহকুমাশাসক নিখিল নির্মল সমস্যাটি দেখার আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি বলেন, “রাস্তায় তো পুলিশের থাকার কথা। কিন্তু কী ব্যাপার জানি না। বিষয়টি দেখছি।” গত শনিবারই বেপরোয়া গতিতে চলার সময়ে শ্যামপুরের মোল্লার মোড়ের কাছে একটি বাঁকের মুখে অটো উল্টে যাওয়ায় মৃত্যু হয় এক ছাত্রী-সহ দুই যাত্রীর। আহত হন ছ’জন। এর পরে পুলিশের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তার পরেও ওই মোড়-সহ শ্যামপুর বা তার আশপাশের বড় রাস্তাগুলিতে নিয়মিত ট্র্যাফিক পুলিশের দেখা মেলে না বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের।

শ্যামপুরকে কেন্দ্র করে মূল রাস্তা রয়েছে তিনটি। শ্যামপুর-উলুবেড়িয়া, শ্যামপুর-বাগনান এবং শ্যামপুর-গাদিয়াড়া। দুর্ঘটনা ঘটছে মূলত এই তিনটি রাস্তাতেই। অথচ, প্রতিটি রাস্তাই ঝাঁ-চকচকে। কোনওটি ১৮ ফুট চওড়া, কোনওটি বা তারও বেশি। অটো, ট্রেকার, ছোট গাড়ি মিলিয়ে ওই তিনটি রাস্তায় প্রতিদিন তিন-চারশো যাত্রিবাহী গাড়ি চলে। তা ছাড়া, রয়েছে বাস-লরি। ওই তিনটি রাস্তারই ধারে স্কুল-কলেজ, দোকান-বাজার এবং প্রশাসনিক ভবন রয়েছে। ফলে, ছাত্রছাত্রী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের ভিড় সব সময়েই থাকে।

যাত্রীদের অভিযোগ, পুলিশ না থাকায় সন্ধ্যা হলেই যাত্রিবাহী গাড়ির চালকেরা নেশাগ্রস্ত অবস্থায় গাড়ি চালান। মালবাহী গাড়িতেও সিট লাগিয়ে যাত্রী বহন করা হয়। বহু চালকেরই ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই। কয়েক দিন হাত পাকিয়েই গাড়ির স্টিয়ারিং ধরছে তারা। যাত্রী তোলার জন্য চলছে রেষারেষি। ফলে, দুর্ঘটনা ঘটছে। কিন্তু দেখবে কে?

পুলিশকে যে রাস্তায় একেবারেই দেখা যায় না তা নয়। মাঝেমধ্যেই শহরে ‘পথ নিরাপত্তা সপ্তাহ’ পালন করা হয় পুলিশের পক্ষ থেকে। টহলদারিও চলে। কিন্তু দুর্ঘটনা এড়ানোর জন্য দিনের নির্দিষ্ট সময়ে গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে ট্র্যাফিক পুলিশ মোতায়েন এবং অবৈধ গাড়ির দৌরাত্ম্য কমানোর দাবিও তুলেছেন যাত্রীরা।

southbengal shyampur howrah road accidents lack of police surveillance
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy