Advertisement
E-Paper

দু’মাস পরেও মেলেনি অনুদান, ক্ষতির অভিযোগ মাছ চাষিদের

সরকারি অনুদান দিতে অনুমোদন মিলেছে মাস দুয়েক আগে। কিন্তু ব্লক মত্‌স্য সম্প্রসারণ আধিকারিক না-থাকায় খানাকুল-২ ব্লকের মাছ চাষিদের কাছে সেই অনুদান এখনও পৌঁছয়নি। ফলে, সরকারি দফতরের উদাসীনতায় তাঁদের জীবিকার ক্ষতি হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছেন মাছচাষিরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ ডিসেম্বর ২০১৪ ০১:৪১

সরকারি অনুদান দিতে অনুমোদন মিলেছে মাস দুয়েক আগে। কিন্তু ব্লক মত্‌স্য সম্প্রসারণ আধিকারিক না-থাকায় খানাকুল-২ ব্লকের মাছ চাষিদের কাছে সেই অনুদান এখনও পৌঁছয়নি। ফলে, সরকারি দফতরের উদাসীনতায় তাঁদের জীবিকার ক্ষতি হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছেন মাছচাষিরা। একই ভাবে খানাকুল-২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অসিত সিংহরায়েরও অভিযোগ, অতি বন্যাপ্রবণ ব্লক হিসাবে যেখানে মত্‌স্য দফতরের আরও বেশি গুরুত্ব দেওয়ার কথা, সেখানে তাঁদের আচরণে চূড়ান্ত অবহেলা দেখা যাচ্ছে।

অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন জেলা সহ-মত্‌স্য অধিকর্তা পার্থ কুণ্ডু। তাঁর দাবি, “অবহেলার প্রশ্নই নেই। স্থায়ী ভাবে ব্লক আধিকারিক নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত খানাকুল-১ ব্লকের মত্‌স্য সম্প্রসারণ আধিকারিককে সপ্তাহে দু’দিন ওই এলাকায় যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আশা করি এর পর আর সমস্যা থাকবে না।” অনুদান বিলি নিয়ে আজ, বুধবার ব্লক মত্‌স্য দফতরে বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।

পুজোর আগে থেকেই ব্লক মত্‌স্য সম্প্রসারণ আধিকারিকের পদ শূন্য। গত ২৫ নভেম্বর খানাকুল-১ ব্লকের মত্‌স্য সম্প্রসারণ আধিকারিক অস্থায়ী ভাবে দায়িত্ব নিলেও এখনও পর্যন্ত তিনি কোনওরকম যোগাযোগই করেননি বলে জানিয়েছেন পঞ্চায়েত সমিতির কৃষি ও মত্‌স্য কর্মাধ্যক্ষ অসীম সানকি। তাঁর অভিযোগ, “মত্‌স্য দফতরের নানা প্রকল্প-সহ রাষ্ট্রীয় কৃষি বিকাশ যোজনার অধীন সুসংহত মাছ চাষ প্রকল্পে চাষিদের মোট খরচের ২৫ শতাংশ অনুদান হিসাবে মাছের চারা এবং খাবার দেওয়ার প্রক্রিয়া জেলার সমস্ত ব্লকগুলিতে দফায় দফায় শুরু হলেও উপভোক্তা বাছাইয়ের প্রক্রিয়া শুরু হয়নি।” এ বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত মত্‌স্য সম্প্রসারণ আধিকারিক অমিত বেরা বলেন, “সদ্য দায়িত্ব পেয়েছি। নিজের এলাকার (খানাকুল-১ ব্লক) কাজ ছাড়াও ব্লক প্রশাসনের নতুন ভোটার তালিকার কাজ করতে হচ্ছে। শীঘ্রই খানাকুল-২ পঞ্চায়েত সমিতির সঙ্গে মাছ চাষে অনুদান বিলি নিয়ে আলোচনা করে উপভোক্তাদের তা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।”

ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বন্যার কারণে খানাকুল-২ ব্লকে বিজ্ঞানসম্মত প্রক্রিয়ায় মাছ চাষ বাড়ছে না। ১১টি পঞ্চায়েতের ৫৩টি মৌজায় প্রায় ২০০ হেক্টর পুকুর এলাকা। প্রায় প্রতি বছরই বন্যায় মাছ ভেসে যায়। তবু মাছ চাষকে কেন্দ্র করেই মাড়োখানা, জগতপুর, ধান্যগোড়ি, পলাশপাই-১, রাজহাটি-১ প্রভৃতি পঞ্চায়েত এলাকার প্রায় ২০ হাজার পরিবার জীবিকা নির্বাহ করেন। এঁদের অধিকাংশই কোথাও গোষ্ঠী করে, কোথাও একাকী ঋণ বা পুকুর লিজ নিয়ে মাছ চাষ করেন।

মাড়োখানা গ্রামের এক মাছ চাষি সুকুমার বায়েন বলেন, “কেবল বন্যার পরে মত্‌স্য দফতর কিছু মিনিকিট বিতরণ করে হাত ধুয়ে ফেলে। অনুদান-সহ ঋণের ব্যবস্থা হয় না। এখন কিছু অনুদান এসেছে, অথচ আধিকারিকের অভাবে তা পাচ্ছি না।” জগত্‌পুরের মাছচাষি বিমল মালিক বলেন, “সারা বছর ধরে মাছ চাষ হয় ঠিকই। যে কোনও প্রকল্পে অনুদান যখন মিলবে তখনই কাজে লাগবে ঠিকই। কিন্তু এ বার সঠিক সময়টাই তো পিছিয়ে গেল। দু’মাসে অনেকটাই ক্ষতি হচ্ছে আমাদের।” ব্লকের মাছচাষিদের দাবি, বন্যাপ্রবণ এলাকা হওয়ায় মাছচাষিদের জন্য রাজ্য সরকার বিশেষ পরিকল্পনা করুক। যেমন বন্যার পর সরকারি খরচে পুকুর সংস্কার করে দেওয়া, অনুদান-সহ ঋণের ব্যবস্থা, বন্যার ঠিক আগে ন্যায্যমূল্যে মাছ কিনে নেওয়া। এ ছাড়াও সারা বছর মত্‌স্য দফতরের বিভিন্ন প্রকল্পের সুযোগ-সুবিধা যথাসময়ে মাছচাষিদের কাছে পৌঁছে দেওয়া। জেলা সহ-মত্‌স্য অধিকর্তা পার্থবাবু জানান, ১০০ দিনের কাজ প্রকল্প ছাড়াও অনেক স্কিমে পুকুর সংস্কার হয়। মাছচাষিদের ২৫ শতাংশ অনুদান-সহ ঋণের ব্যবস্থাও আছে। সঠিক সময়ে এগুলি পেতে গেলে ব্লক মত্‌স্য দফতরগুলিতে চাষিদের নিয়মিত যোগাযোগ রাখতে হবে।

khanakul 2 fishermen aid southbengal
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy